‘কিছু মানুষ আমার ভালো কাজ সহ্য করতে না পেরে এসব রটাচ্ছেন’
সম্প্রতি অভিনয়ে আলোচনায় এসেছেন ঢাকাই ছবির নায়িকা তমা মির্জা ‘দ্যা ডার্ক সাইড অব ঢাকা’, ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি, ‘৭ নম্বর ফ্লোর’ ওয়েব ফিল্মগুলোতে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। তবে পাশাপাশি বর্তমান সময়ে এক পরিচালকের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জনও আছে তাঁকে ঘিরে। বুধবার এই শিল্পীর জন্মদিন। নানা প্রসঙ্গে কথা হলো তমা মির্জার সঙ্গে।
শুভ জন্মদিন।
ধন্যবাদ, খুশি হলাম।
প্রশ্ন :
এই বিশেষ দিনটা কেমন কাটছে?
খুব ভালো। জন্মদিনের প্রথম প্রহর বোনের অফিসে উদ্যাপন করেছি। সেখানে আমার কাছের বন্ধু পরিচালক রায়হার রাফি আলাদা করে আমার জন্য কেক কেটেছে। এরপর গানবাংলা পরিবার আমার জন্য আয়োজন রেখেছিল। খুব ভালো লাগছিল। গানে গানে আয়োজনটি অনেক মজার ছিল। এখন বন্ধুরা ফোন দিচ্ছে। তারা ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় আয়োজন রেখেছে। আমি একজন মানুষ এতগুলো জায়গায় কীভাবে যাব, এই চিন্তাই করছি। তবে বলে রাখি, আমার জন্মদিন ঈদের অনুষ্ঠানমালার মতো তিন দিন ধরে পালন হবে। হা হা হা....। আজ প্রথম দিন পার হচ্ছে।
প্রশ্ন :
জন্মদিনে কী কী উপহার পেলেন?
জন্মদিনে আমার কাছে সেরা উপহার ফুল, উইশ ও দোয়া। রাত থেকে আমার বন্ধুবান্ধব, ভক্তরা কেউ কেউ ফুল উপহার দিয়েছেন, অনেকে উইশ করেছেন, দোয়া করেছেন। এ এক অন্য রকমের ভালো লাগা। এর বাইরে বাবা–মা আমাকে সোনার চুড়ি উপহার দিয়েছেন।
প্রশ্ন :
বর্তমানে আপনার অভিনয় নিয়ে দর্শকদের মধ্যে বেশ আলোচনা চলছে। কেমন লাগে?
অবশ্যই খুব ভালো লাগে। আগেও যে আমার কাজ ভালো ছিল না, তা নয়। এর আগে আমি ‘নদীজন’ সিনেমায় কাজ করে প্রশংসা পেয়েছি। এই ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছি। গত বছর থেকে আমার পরপর বেশ কয়েকটি কাজ প্রশংসিত হচ্ছে।
প্রশ্ন :
কারণ কী মনে হয় আপনার?
আমার কাছে মনে হয়, ভালো গল্পের সঙ্গে শিল্পীকে একজন পরিচালক ঠিকঠাকমতো উপস্থাপন করতে পারলে ওই শিল্পীর সফলতা আসবেই। পরপর কয়েকটি কাজের বেলায় সেই সুযোগটি আমি পেয়েছি। সাম্প্রতিক কালে আমার যেসব কাজ প্রশংসিত হচ্ছে, তারও আগে সিনেমা ‘নদীজন’ কিংবা মিউজিক্যাল ফিল্ম ‘গহিনের গান’-এর কাজ করে একটা ভালো অভিজ্ঞতা ছিল আমার। নতুন অভিনয় শিখছি তা নয়, তবে খুব ভালো পারি সেটিও বলছি না। কিছুটা গুণ তো আমার মধ্যে আছে। কারও নিজের ভেতর একদমই কিছু না থাকলে তাকে দিয়ে বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা ভালো পরিচালকও বেশি কিছু করতে পারেন না। এত দিন হয়তো উপযুক্তভাবে ব্যবহারের সুযোগ হচ্ছিল না আমার। প্রপার প্ল্যাটফর্ম, প্রপার চিত্রনাট্য ও প্রপার পরিচালক মিলে ভালো একটা সমন্বয়ের কাজ প্রথমে ‘ দ্যা ডার্ক সাইড অব ঢাকা’ ওয়েব ফিল্মে পেয়েছি। এই ফিল্মটির মাধ্যমে বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ হয়েছে আমার। এরপর ‘চরকি’তে ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’, ‘৭ নাম্বার ফ্লোর’ ওয়েব ফিল্ম, গানবাংলা চ্যানেলের আইটেম গান ‘প্রেমের লাড্ডু’—এসব আমাকে এগিয়ে দিয়েছে।
প্রশ্ন :
সেই প্রশংসা থেকে এখন কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে কি?
অনেক কাজের প্রস্তাব আসছে। বিশেষ করে এফডিসিকেন্দ্রিক ফিল্মের প্রস্তাব আসছে। কিন্তু গল্পগুলো ব্যাটে–বলে মিলছে না। তবে ওটিটির কাজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান,পরিচালক, গল্প—সবই ভালো পাচ্ছি। এখন এফডিসিকেন্দ্রিক সিনেমার চাইতে ওটিটির কাজের প্রস্তাব বেশি পছন্দ হচ্ছে।
প্রশ্ন :
তাহলে বড় পর্দার চাইতে ওটিটিতেই আপনার আগ্রহ বেশি?
ব্যাপারটা তা নয়। আমি যখন ‘ইভটিজিং’, ‘অহংকার’—ছবিগুলো করি, ছবিগুলো আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে হলের সংখ্যা কমে যাওয়াসহ নানা কারণে বড় পর্দায় কাজে বিরতি ছিল। এখন ওটিটিতে কাজ করছি কারণ, আমি যে ধরনের গল্প, চরিত্র, কিংবা পরিচালকদের সঙ্গে কাজে আগ্রহী, তা সবই পাচ্ছি। তবে এফডিসিকেন্দ্রিক ছবিগুলোও বদলে যাচ্ছে। এই ঈদে প্রেক্ষাগৃহকেন্দ্রিক সিনেমাগুলোর আলোচনা হয়েছে। দর্শকের সঙ্গে হলের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন প্রযোজকেরা বড় পরিসরে মুভি বানানোর পরিকল্পনা করছেন।
প্রশ্ন :
‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’ মুক্তির পর একজন পরিচালকের সঙ্গে আপনার সম্পর্কের কথা ফেসবুক, অনলাইনে ছড়িয়েছে। সম্পর্কটা কি প্রেমের নাকি শুধুই বন্ধুত্বের?
একেবারেই বন্ধুত্বের। মানুষ কেন যে এসব নিয়ে মাথা ঘামায়, বুঝি না! আমার ভালো ভালো কাজ নিয়ে আমার ভক্তরা যখন কথা বলছেন, ঠিক সে সময় কিছু মানুষ আমার কাজের কথা বাদ দিয়ে এসব ছড়াচ্ছেন। কিছু মানুষ আমার ভালো কাজ সহ্য করতে না পেরে এসব রটাচ্ছেন।
প্রশ্ন :
কিন্তু অতীতে বিনোদন অঙ্গনের এমন রটনা থেকে ঘটনাও ঘটেছে...
না, এ ধরনের ভাবনা নেই। এমন চিন্তা মাথায়ই আসেনি আমার। যাকে ইঙ্গিত করে এসব বলা হচ্ছে, তাঁকে বন্ধু হিসেবেই ভালো লাগে, এর বেশি কিছু নয়।’
আপনি নিশ্চয় ফেসবুক, অনলাইনে আপনাকে নিয়ে এসব গুঞ্জন দেখছেন, পড়ছেন।
প্রশ্ন :
বিষয়টি উপভোগ করেন? নাকি বিরক্ত?
প্রচণ্ড রকমের বিরক্ত আমি। কারণ হলো, এই পরিচালকের সঙ্গে এর আগে অন্যদের একের পর এক কাজ হয়েছে। তা ছাড়া এখানে কোনো কোনো পরিচালকের সঙ্গে কোনো কোনো নায়িকার পরপর অনেক কাজ হয়েছে, হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে। খেয়াল করে দেখেন, তাঁদের নিয়ে কোনো মাতামাতি হয় না। অথচ আমার কয়েকটি কাজ আলোচিত হয়েছে, আর কিছু মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে। এটি আমার ভালো লাগে না।
প্রশ্ন :
আপনার ভালো কাজ নিয়ে তো প্রশংসাও হচ্ছে। কী বলবেন?
হচ্ছে, এটি আমি অস্বীকার করছি না। প্রশংসার মাঝে ছোট্ট করে প্রেমের গুজবটিও তুলে আনা হচ্ছে। একজন সংবাদকর্মী যখন আমাকে নিয়ে খবর ছাপাচ্ছেন, পাঁচটি প্রশ্নের মধ্যে প্রেমসংক্রান্ত একটা প্রশ্ন করে বসছেন। কোনো দর্শক ব্যক্তি তমা কী করে না করে, এসব নিয়ে তো তাঁরা জানতে চান না। কোন কাজটি ভালো হয়েছে, খারাপ হয়েছে, আগামীতে কী কাজ আসছে—এসব নিয়ে আমার ভক্তদের ফেসবুকে মন্তব্য করতে দেখি। কার সঙ্গে কার প্রেম, কার সঙ্গে কার সম্পর্ক—এসব নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির মানুষের বেশি আগ্রহ দেখি।
প্রশ্ন :
বিয়ে করছেন কবে?
দুঃখ-কষ্ট কোথায় যে আমি বিয়ে করব? বিয়ে করেই না দুঃখ-কষ্টে ছিলাম। সেখান থেকে সরে এসেছি। ভালো আছি এখন। তাই এখন আর বিয়ে নিয়ে আমার কোনো চিন্তাভাবনা নেই।