শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের উৎসর্গ করে নাটক
তুলনামূলক নবীন সংগঠন স্বপ্নদলে আলোচিত নাটক ‘ত্রিংশ শতাব্দী’। এটি নাটকের এই দলের যুদ্ধবিরোধী গবেষণা প্রযোজনা, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। নানা সময়ে নাটকটি প্রাসঙ্গিক হয়ে যায়, সে প্রসঙ্গ ধরে তারা নাটকটি মঞ্চস্থ করে। এবার শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতাহত ব্যক্তিদের উৎসর্গ করে করছে তারা।
আজ শনিবার নাট্য সংগঠন স্বপ্নদলের ‘ত্রিংশ শতাব্দী’-র বিশেষ মঞ্চায়ন হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ প্রদর্শনী শুরু হবে। বাদল সরকারের মূল রচনা অবলম্বনে ‘ত্রিংশ শতাব্দী’-র রূপান্তরসহ নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। আজ নাটকটির ১০৫তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে।
নাটকটি নিয়ে নির্দেশক জাহিদ রিপন জানান, যুদ্ধোন্মাদনার বিরুদ্ধে শৈল্পিক প্রতিবাদ ‘ত্রিংশ শতাব্দী’-র মূল কাহিনি পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকির আণবিক বোমা বিস্ফোরণের অপ্রত্যাশিত পরিণতি। এর সমান্তরালে দেখানো হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বসনিয়া-ফিলিস্তিন, আফগানিস্থান, পাকিস্তান-ভারত, ইরাকে আগ্রাসন, কুয়েত-তিউনিসিয়া-ইয়ামেন-সিরিয়া-তুরস্ক-মিয়ানমার-গুলশানে বর্বর হামলা, বাসচাপায় শিক্ষার্থী হত্যা, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে এবং শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক অমানবিক সন্ত্রাসী হামলা প্রভৃতি প্রসঙ্গ। ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনায় নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধবাজ-যুদ্ধাপরাধী-অশান্তিকামীদের স্বরূপ এবং তাদের কাজের তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী বীভৎসতার চিত্র উদ্ঘাটিত হয়েছে। সভ্যতা ধ্বংসকারী মানবসৃষ্ট যুদ্ধ-গণহত্যা-অনাচারের বিপরীতে মানুষ হিসেবে বর্তমান কর্তব্য অনুধাবন এবং এ ক্ষেত্রে দর্শককে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মুখোমুখি স্থাপনই ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনার প্রত্যাশা। আর প্রযোজনাটির উপস্থাপনায় প্রয়োগ করা হয়েছে হাজার বছরের নাট্য-ঐতিহ্যের ধারায় আধুনিক ‘বাঙলা নাট্যরীতি’।
‘ত্রিংশ শতাব্দী’ নাটকে অংশ নেবেন জুয়েনা শবনম, ফজলে রাব্বি সুবর্ণ, সামাদ ভূঞা, শিশির সিকদার, সুমাইয়া আক্তার, শাখাওয়াত শ্যামল, মেহেদী রানা, সোনালী রহমান, অর্ক অপু ও জাহিদ রিপন।
জানা গেছে, ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনাটি গত নভেম্বরে জাপানের প্রধান নাট্যোৎসব ‘ফেস্টিভ্যাল/টোকিও ২০১৮’-এ আমন্ত্রিত হয়ে টোকিও মেট্রোপলিটন থিয়েটারে দুটি প্রদর্শনী করে। এর আগে প্রযোজনাটি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ইউরোপের স্বনামখ্যাত নাট্যোৎসব ‘আ সিজন অব বাংলা ড্রামা ২০১৫’, নয়াদিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে (এনএসডি) অনুষ্ঠিত এশিয়ার বৃহত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ ভারতের রাষ্ট্রীয় নাট্যোৎসব ‘ভারত রং মহোৎসব ২০১৫’সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে অংশ নেয়।