এবার উদীচীর যাত্রাপালা
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় নাটক বিভাগ এবার যাত্রাপালা মঞ্চে আনছে। নাম ‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে পালা লিখেছেন প্রসাদকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য, নির্দেশনা দিয়েছেন ভিক্টর দানিয়েল। আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে এই যাত্রাপালার উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে। দেশপ্রেম ও ব্রিটিশবিরোধী বক্তব্য প্রচার করে চারণকবি মুকুন্দ দাস শুরু করেছিলেন ‘স্বদেশি যাত্রা’। উদীচীরও প্রথম পরিবেশনা সেই ব্রিটিশ ভারতের স্বদেশি আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে।
আজকের প্রেক্ষাপটে যাত্রাপালা মঞ্চে আনা প্রসঙ্গে জানানো হয়, উদীচী মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লড়াইয়ে পথ চলছে অবিরাম। সে চলায় নিশ্চয় এটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। যদি দেশের স্বাধীনতার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে বর্তমানের তরুণেরা সমাজের অভ্যন্তরে বিরাজমান স্বার্থপর সাম্রাজ্যবাদী দেশীয় দালাল, মজুতদার, মুনাফালোভী লুটেরাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেন, তবেই সার্থক হবে বিয়াল্লিশের বিপ্লব, সার্থক হবে উদীচীর এ প্রয়াস।
নির্দেশক ভিক্টর দানিয়েল জানান, ১৯৪২ সাল ভারতবর্ষের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায়। অগ্নিযুগের অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে বাংলার মৃত্যুপাগল যৌবন সেদিন যেভাবে দাবানলের মতো জ্বলে উঠেছিল, জীবনপণ করে নির্ভীক সৈনিকের মতো আমৃত্যু যুদ্ধ করেছিল ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য, তাঁদেরই কিছু কাল্পনিক চরিত্রের সমাবেশ এ যাত্রায় তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এ যাত্রার চরিত্রগুলোর মধ্যে যেমন জন্মভূমি মায়ের মুক্তিসংগ্রামে নিবেদিত বীরসন্তানেরা রয়েছেন, তেমনি রয়েছে স্বার্থের মোহে অন্ধ ইংরেজের ক্রীতদাস, রয়েছে ঘরশত্রু বিভীষণের দল, যারা অব্যাহত রেখেছে দেশমায়ের মুক্তিসংগ্রামকে ব্যর্থ করে দেওয়ার কূটকৌশল। যাত্রাপালার একপর্যায়ে সাম্রাজ্যবাদী শাসকের প্রলোভনে মত্ত জমিদার তাঁর স্নেহের নাতি, পুত্র, কন্যা, পুত্রবধূসহ স্বজনদের হারিয়ে উন্মাদ হয়ে যান। ইংরেজের বিচারে এই আন্দোলনের মূল নায়ক জমিদারপুত্র মহেন্দ্র (প্রশান্ত) চৌধুরীর দ্বীপান্তর হয়। কিন্তু স্বাধীনতা পাওয়ার পর কালাপানির নির্বাসন থেকে তিনি আবার ফিরে আসেন জন্মভূমির বুকে।