এসেছে ‘রঙিন চরকি’

‘রঙিন চরকি’র দৃশ্য। শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের সৌজন্যে

মান্নান হীরা সারা জীবন জড়িয়ে ছিলেন নাটকের সঙ্গে। তাঁর নাটকের গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য ছিল নিরন্ন মানুষ ও দরিদ্র জনপদ। সব ফেলে তিনি চলে গেছেন অনন্তলোকে। রয়ে গেছে তাঁর সৃষ্টি; নতুন ও পুরোনো অনেক নাটক। তেমনই একটি নতুন নাটক ‘রঙিন চরকি’। নাটকটি মঞ্চে এনেছে শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটার। এটি শূন্যনের তৃতীয় প্রযোজনা।

আরও পড়ুন

শূন্যন রেপার্টরি জানায়, এটিই প্রয়াত নাট্যকার মান্নান হীরার লেখা শেষ নাটক। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন সাজিদুর রহমান। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়।
কিশোর-কিশোরীরা বেড়ে ওঠার সময় নানাভাবে লালসার শিকার হয় অতি আপনজনের কাছ থেকে। জীবনে ঘটে যাওয়া সেসব ভয়াবহ ঘটনার ট্রমা থেকে তারা বের হতে পারে না। এ ধরনের গল্প নিয়েই নাটক ‘রঙিন চরকি’।

নাটকে দেখা যায় এক মায়ের গ্লানিকর, অনিশ্চিত ও নিরাপত্তাহীন জীবনের গল্প। তার শিশুকন্যাটির জীবনও তার মতোই হবে, এ রকম আশঙ্কা থেকেই মেয়েকে একটি বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে দত্তক হিসেবে পাঠিয়ে দেয় পৃথিবীর অপর প্রান্তে।

‘রঙিন চরকি’র দৃশ্য। শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের সৌজন্যে

২০ বছর পর মেয়েটি মায়ের সন্ধানে আসে বাংলাদেশে। খুলতে থাকে একের পর এক গল্পের জট। মেয়েটির সংলাপই নাটকের মূল কথা।

সারা বিশ্বে নারীর অন্ধকারের কত কোণ–প্রতিকোণ রয়েছে, তা উঠে আসে তার সংলাপে—‘পৃথিবীর সব আলো জ্বাললেও নারীর অন্ধকার কাটে না।’ তবে নাটকের দল শূন্যন মনে করে, এই অন্ধকারের সীমানা পার হতেই হবে। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন মোমেনা চৌধুরী, জুয়েল মিজি, বিলকিস মীর, মামুন আল ফিরোজ, রাফিউল রকি, তৌফিক মেসবাহ ও সাজিদুর রহমান।

নির্দেশক সাজিদুর রহমান বলেন, ‘ছোটবেলায় চরকিওয়ালার পেছনে যেমন অদ্ভুত এক মোহে ছুটে যেতাম, তেমনিভাবেই নাট্যপ্রাণ মান্নান হীরা রচিত ‘রঙিন চরকি’ আমাকে মোহিত করেছে। আজও তাঁর অনুপস্থিতি ভীষণ অনুভব করি।

‘রঙিন চরকি’র দৃশ্য। শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের সৌজন্যে

বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন আর শূন্যন পরিবারের প্রতি তাঁর অবদানকে স্মরণ করে আমরা ‘রঙিন চরকি’ প্রযোজনাটি মান্নান হীরাকে উৎসর্গ করছি। নাটকটিতে নাট্যকার যে কথা বলতে চেয়েছেন, আমরা তা পরিপূর্ণভাবে দর্শকের সামনে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি।’