গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সংকট সমাধানের তাগিদ
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন থেকে বাধ্য হয়ে ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ প্রত্যাহারের পর সংকট সমাধানের তাগিদ দিয়ে ফেডারেশনের সভাপতি লিয়াকত আলী লাকীকে চিঠি দিয়েছে ঢাকার চার নাট্য সংগঠন।
গত ১৩ এপ্রিল নাট্যচক্রের ম হামিদ, থিয়েটারের রামেন্দু মজুমদার, আরণ্যকের মামুনুর রশীদ ও নাগরিকের সারা যাকের চিঠিটি পাঠান। তবে চিঠিটি প্রকাশ্যে আসে আজ বুধবার।
চিঠিতে সাংগঠনিক সংকট সমাধানে ৩০ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন চার নাট্যজন। তাঁরা চারজনই বিভিন্ন মেয়াদে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। চিঠি পাঠানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন রামেন্দু মজুমদার।
চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা দল হিসেবে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ফেডারেশনের সাংগঠনিক সংকট উদ্বেগের সাথে লক্ষ করে আসছি। সম্প্রতি ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন ইউসুফ চিঠি দিয়ে ফেডারেশন থেকে ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তা আমাদের মর্মাহত করেছে।’
এর আগে ২২ জানুয়ারি গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা থিয়েটার প্রতিনিধি কামাল বায়েজীদের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও সাংগঠনিক স্বেচ্ছাচারিতা’র অভিযোগ তুলে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাখান করে কামাল বায়েজীদ।
আজ বুধরবার রাতেও মুঠোফোনে প্রথম আলোকে কামাল বায়েজীদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সর্বৈব মিথ্যা। আমি লাকী ভাইকে বলেছিলাম, আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, আপনি কিছুদিন দায়িত্বে থাকবেন না। তাতে উনি রেগে যান। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনবারের বেশি একই পদে থাকা যায় না, সেটা বলাতেও রেগে যান। এই দুই কারণেই আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
এরপর ২২ মার্চ ফেডারেশন ছাড়ার ঘোষণা দেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। কামাল বায়েজীদকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে ১৪ এপ্রিল ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা থিয়েটার।
চার নাট্যজন চিঠিতে লিখেছেন, ‘দুঃখের বিষয়, আপনারা এ পত্রের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা থিয়েটার এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আমরাও মনে করি, কামাল বায়েজীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহের একটা নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া দরকার। সেখানে সে দোষী সাব্যস্ত হলে, তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আমরা বিভিন্ন সময় বলে এসেছি যে ফেডারেশনে আমরা কোনো বিভাজন চাই না। আমাদের সমবেত চেষ্টায় গড়ে ওঠা এত দিনের ঐক্য বজায় থাকুক, এটা আমাদের কাম্য।’
সংকট সমাধানের জন্য ৩০ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে চিঠিতে লেখা হয়, ‘আপনাদের কোনো পদক্ষেপ যেন নাট্যাঙ্গনে বিভাজন সৃষ্টি না করে, এটা আমাদের আন্তরিক প্রত্যাশা।’
কামাল বায়েজীদও বলেছেন, ‘কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই গায়ের জোরে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত হোক, তদন্ত সাপেক্ষে কোনো শাস্তি পেলে মাথা পেতে নিতে রাজি আছি। আমি কলঙ্ক নিয়ে থিয়েটার করতে চাই না।’
অভিযোগের বিষয়ে বুধবার রাতে লিয়াকত আলী লাকীর বক্তব্য জানতে তাঁকে ফোন করা হলে পাওয়া যায়নি।