মামুনুর রশীদের ‘১৯তম জন্মদিন’, তিন দিনের উৎসব
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের মঞ্চ আন্দোলনের পথিকৃৎ মামুনুর রশীদ। শ্রেণিসংগ্রাম, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকার আদায়ের নানা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু নিয়ে নাটক লিখে ও নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশের নাট্যজগতে মামুনুর রশীদ হয়ে উঠেছেন অপরিহার্য। ২৯ ফেব্রুয়ারি বরেণ্য এ নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক মামুনুর রশীদের ১৯তম জন্মদিন। বয়স ৭৬, অথচ ১৯তম জন্মদিন! শুনলে গোলমেলে লাগে, হিসাবটা কি ভুল হলো? কিন্তু এটাই সত্য। অধিবর্ষে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর জন্মদিন আসে চার বছর পরপর। এই প্রতীক্ষিত জন্মদিন রাঙাতে তাই আয়োজন হলো উৎসবের, আনন্দ মিলনমেলার।
২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ৩ দিনব্যাপী ‘আলোর আলো নাট্যোৎসব’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উৎসব আয়োজনে থাকবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটকের মঞ্চায়ন, সংগীত, নৃত্য, সেমিনার, প্রদর্শনী ও থিয়েটার আড্ডা।
নানা কর্মসূচিতে সমৃদ্ধ এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতির মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে আলোকিত করবেন বলে জানানো হয়।
২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন অনিমা মুক্তি গোমেজ, অনিমা রায়, চঞ্চল চৌধুরী, ফজলুর রহমান বাবু ও রাহুল আনন্দ। বাঁশি বাজাবেন উত্তম চক্রবর্তী। ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করবে ধৃতি নর্তনালয়।
১ মার্চ সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির সেমিনারকক্ষে আয়োজিত হবে ‘একজন দায়বদ্ধ সৃজনকর্মীর নাট্যপরিভ্রমণ’ শীর্ষক আলোচনা। আলোচনার ধারণাপত্র পাঠ করবেন মলয় ভৌমিক। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট ও সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে হবে ‘রাঢ়াঙ’ নাটকের পরপর দুটি প্রদর্শনী। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ।
২ মার্চ বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে থিয়েটার আড্ডা ‘নাট্যকর্মীদের মুখোমুখি মামুনুর রশীদ’। সন্ধ্যা ৭টায় একই হলে প্রদর্শিত হবে নাটক ‘কহে ফেসবুক’।
নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ। চার বছর পর আসছে জন্মদিন এবং দিনটি ঘিরে উৎসব, কেমন লাগছে? প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামুনুর রশীদ এমন প্রশ্ন শুনে হাসেন। বলেন, ‘এটা একধরনের সৌভাগ্য। চার বছর পরপর আসে আমার জন্মদিন। বন্ধু, শুভানুধ্যায়ীরা অপেক্ষা করে, কখনো কখনো উৎসবের আয়োজন করে; এটা আনন্দের বিষয়। তা ছাড়া বয়স যে বাড়ছে না, এটাই বা কম কিসে!’