মূকাভিনয় দিবসে ‘ম্যাকবেথ’
মার্সেল মার্সো মূকাভিনয়শিল্পে এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছেন যে বিশ্বব্যাপী মূকাভিনয়চর্চার বেশির ভাগ শিল্পীই তাঁকে অনুকরণ করেন। যুগে যুগে তাঁর অনুকরণে অনেকে সাদা মেকআপ, কালো-সাদা বা সাদা-কালো স্ট্রাইপ পোশাকই মূকাভিনয়ের ট্রেড মার্ক পোশাকে মঞ্চে নামেন। আজ শুক্রবার তাঁর জন্মদিন এবং বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস। আজ মার্সেল মার্সোর ১০১তম জন্মবার্ষিকী এবং ‘বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস’ যৌথভাবে পালন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশন।
আজ সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে আলোচনা, নাট্যসংগঠন স্বপ্নদলের প্রযোজনা উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের রচনা অবলম্বনে জুয়েনা শবনমের কাহিনি পুনর্বিন্যাসে মূকনাট্য ‘ম্যাকবেথ’-এর বিশেষ মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়। গবেষণাগার পদ্ধতিতে ঐতিহ্যের ধারায় বাংলা মূকাভিনয় রীতিতে নির্মিত ‘ম্যাকবেথ’-এর নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। এরপর বিভিন্ন দলের একক শিল্পীরা নকশা-মূকাভিনয় পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানের সূচনায় মার্সোর জীবন-কর্ম-দর্শন এবং দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশনের চেয়ারম্যান জাহিদ রিপন।
স্বপ্নদলের প্রধান সম্পাদক ও নাটকটির নির্দেশক জাহিদ রিপন বলেন, ‘ম্যাকবেথ নিয়ে সারা বিশ্বে নানাভাবে নিরীক্ষা হয়েছে; কিন্তু আমরা মূকনাট্য হিসেবে সংলাপ বিহীনভাবে নাটকটি মঞ্চে আনছি। আমার জানামতে, বিশ্বের আর কোথাও এভাবে নাটকটি আসেনি; এটি একটি অনন্য ঘটনা।’
নাটকের গল্পে দেখা যায়, এক সেনাপতি রাজাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে, পরে তাকেও হত্যা করা হয়। নির্দেশকের ভাষ্য, ‘এই ভূখণ্ডেও এমন ঘটনা দেখা গেছে; পলাশীর যুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কিছুটা মিল আছে।’
‘ম্যাকবেথ’ প্রযোজনাটির মঞ্চ-আলোক পরিকল্পনা করেছেন ফজলে রাব্বি সুকর্ন, কোরিওগ্রাফি পরিকল্পনা করছেন হাসানুজ্জামান, পোশাকসামগ্রী পরিকল্পনা করেছেন জুয়েনা শবনম, হাসানুজ্জামান ও সুমাইয়া শিশির। সংগীত-আবহ পরিকল্পনা করছেন শাখাওয়াত শ্যামল ও মিজাউল ইসলাম খান।
প্রসঙ্গত, মূকাভিনেতা-মূকাভিনয়ের গুরু মার্সেল মার্সো ১৯২৩ সালের ২২ মার্চ ফ্রান্সের স্টার্সবুর্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিংশ শতাব্দীর আধুনিক মূকাভিনয়চর্চা এবং মার্সোর নাম সমার্থক হয়ে ওঠায় ২০০৭ সালে প্রয়াণের পর তাঁর জন্মদিন ২২ মার্চকে পৃথিবীজুড়ে ‘বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।