হিরো আলম বললেন, ‘আমিই এগিয়ে এলাম’

হিরো আলম কথা দিয়েছিলেন, সিনেমা হল যখনই চালু হোক, তিনি প্রথমে তাঁর ছবি মুক্তি দেবেন। সে জন্য তিনি করোনা শুরুর পর থেকেই অপেক্ষা করছিলেন কথা রাখার। দীর্ঘ প্রায় সাত মাস পর আজ তথ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, নিয়ম মেনে ১৬ অক্টোবর দেশের প্রেক্ষাগৃহ খুলছে। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কথা রাখতে বদ্ধপরিকর হিরো আলম। তিনি বলেন, হিরো আলম কথা রাখতে কখনো পিছপা হবে না। দেশব্যাপী তাঁর ছবি মুক্তি পাবে।

আগামী শুক্রবার দেশের ৫০টি সিনেমা হলে মুক্তি পাবে হিরো আলম প্রযোজিত এবং অভিনীত ছবি ‘সাহসী হিরো আলম’
পোস্টার

আগামী শুক্রবার দেশের ৫০টি সিনেমা হলে মুক্তি পাবে হিরো আলম প্রযোজিত এবং অভিনীত ছবি ‘সাহসী হিরো আলম’, এমনটাই নিশ্চিত করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে ৪০টি সিনেমা হল চূড়ান্তের কথা জানালেন তিনি। বাকি ১০ হলের সঙ্গে কালকের মধ্যে কথা চূড়ান্ত করবেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সাত মাস পর সিনেমা হল খুলছে। এই মুহূর্তে একটা নতুন ছবি দরকার। কারণ, নতুন ছবি না হলে হলে দর্শক আনা যাবে না। সেসব চিন্তাভাবনা করেই সিনেমাটা হলে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।’

৯ ফেব্রুয়ারি সেন্সর সার্টিফিকেট পায় হিরো আলমের ছবি
সংগৃহীত

প্রথম ছবির মুক্তি নিয়ে খুবই খুশি তিনি। ছবিটি মুক্তি দিয়ে কোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ঝুঁকি নিয়েই ছবিটি মুক্তি দিচ্ছি। ঝুঁকি না নিয়ে আমরা সবাই যদি পিছপা হই, তাহলে আমাদের সিনেমা হল কীভাবে চলবে? এখন দেশের চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো না। এই মুহূর্তে যাঁদের ছবি বানানো আছে, তাঁদের উচিত এগিয়ে আসা। যখন দেখলাম কেউ এগিয়ে এল না, তখন আমিই এগিয়ে এলাম। আমার ছবির নামটাও ‘সাহসী হিরো আলম’। এই চিন্তা করেই সাহস নিয়ে এগিয়ে এলাম।’

হিরো আলম
সংগৃহীত

ছবি মুক্তি দিয়ে লাভ বা ক্ষতি নিয়ে চিন্তা করছেন না তিনি। ‘ক্ষতির চিন্তা করলে এই করোনার সময়ে আমি ছবি মুক্তি দিতাম? আমার ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমার ভাগ্যে যা আছে তাই হবে।’—বলেন হিরো আলম। ঢাকার চিত্রামহল, গীত, ডেমড়ার রানীমহলসহ ৪০টি হল চূড়ান্ত। কথা বলার সময় তিনি নির্মাণাধীন ছবির প্রযোজক এবং পরিচালকদের কাছে অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আসুন আমরা হলমালিকদের সহযোগিতা করি। সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের চলচ্চিত্র বাঁচাই।’

‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমার একটি দৃশ্য
সংগৃহীত

সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘গল্পে আমি সাহসী, কোনো কিছুতেই ভয় পাই না। তাই সিনেমার নামও রেখেছি ‘সাহসী হিরো আলম’।’ ছবিতে তাঁর বিপরীতে তিনজন নায়িকা অভিনয় করেছেন। তাঁরা হলেন সাকিরা মৌ, রাবিনা বৃষ্টি ও নুসরাত জাহান। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এ আর মুকুল নেত্রবাদী।

গত ১৮ মার্চ থেকে সিনেমা হল বন্ধের সরকারি নির্দেশনা জারি হয়। সেদিন থেকে দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ ছিল।

‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমার আরেকটি পোস্টার
সংগৃহীত

বগুড়ার প্রত্যন্ত এরুলিয়া গ্রামে একসময় সিডি বিক্রি করতেন হিরো আলম। সিডি যখন চলছিল না, তখনই মাথায় আসে কেব্‌ল সংযোগ ব্যবসার। কেব্‌ল সংযোগের ব্যবসার সুবাদে মিউজিক ভিডিও তৈরি করতে শুরু করেন। ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম।

‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমার একটি দৃশ্য
সংগৃহীত

ইউটিউবে প্রকাশ করা তাঁর নিজস্ব ভিডিওগুলোও অনেক জনপ্রিয়। ভিডিওগুলোর নির্দেশনাও দেন হিরো আলম। ভিডিওগুলোর মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ইউটিউবে হিরো আলমের এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তাঁর ভিডিও নিয়ে কৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় হিরো আলমের ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল।
সংগৃহীত

হিরো আলম ইতিমধ্যে ‘মার ছক্কা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ নামের চলচ্চিত্রেও অভিনয় করছেন তিনি। ২০১৬ সালে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।