সিনেমা মানে কেবল এফডিসি নয়
‘ঢালিউডকে এফডিসি থেকে বের করে আনতে হবে। সিনেমা মানে কেবল এফডিসি নয়; সারা পৃথিবীতে সিনেমা দৃশ্যায়ন করতে হবে, প্রদর্শন করতে হবে সারা পৃথিবীতে। বাংলা ভাষার ভেতরে যে প্রেম রয়েছে, সিনেমার মধ্য দিয়ে তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে।’ সিনেমা প্রযোজনার নতুন প্রতিষ্ঠান সিনেবাজ ফিল্মসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বললেন সাংসদ ও বরেণ্য চিত্রনায়ক আকবর হোসেন খান পাঠান ফারুক।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে ছিল সিনেবাজ ফিল্মসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন আকবর হোসেন খান পাঠান ফারুক। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলার যে প্রেম, সেটি চলচ্চিত্রে আসা উচিত। আর এর জন্য দরকার ভালো চিত্রনাট্য। ছবির মতো ছবি বানাতে পারলে মানুষ দেখতে বাধ্য। আপনারা ভালো ছবি তৈরি করে দেখান, লোকে দেখবে।’
চলচ্চিত্রকে শক্তিশালী মাধ্যম উল্লেখ করে ফারুক বলেন, ‘আজ আমি নেতার আসনে, কাল হয়তো থাকব না। তখন লোকে আমাকে মনে রাখবে না। কিন্তু অভিনেতার আসন এমন আসন, সেই আসনে একবার বসলে লোকে সারা জীবন মনে রাখবে। পৃথিবী বদলে দেওয়ার জন্য সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কোনো বিকল্প নেই। আর সেই বিপ্লবে অবদান রাখতে পারে সিনেমা। সে জন্য বাংলা সিনেমায় দেশপ্রেম, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার আহ্বান করছি।’ নতুন এ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তারা যেন একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি তৈরি করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আরেক চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। বাংলা চলচ্চিত্রকে নিয়ে সব সময় নেতিবাচক কথা বলা হয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ও চলচ্চিত্র কেমন হবে, সেটা নির্ভর করবে একে আমরা কীভাবে লালন–পালন করব তার ওপর। বঙ্গবন্ধু ছাড়া আমাদের লালন-পালন করার মতো আর কাউকে আমরা পাইনি।’ সাবেক তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর।’
নতুন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এর চেয়ারপারসন জ্যোৎস্না ইসলাম, প্রধান নির্বাহী শ্যাম ইসলাম, যোগাযোগ কর্মকর্তা স্বাধীন খসরু, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ইফতেখার চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জ্যোৎস্না ইসলাম। শ্যাম ইসলাম বলেন, ‘বিদেশে থাকি বলেই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অন্য রকম একটি টান অনুভব করি। বাংলা চলচ্চিত্রকে বিদেশে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের বাঙালিদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ ছাড়া প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখার অভ্যাস নতুন করে গড়ে তুলতেও কাজ করব আমরা।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জীবনীভিত্তিক, মুক্তিযুদ্ধ, অ্যাকশনসহ নানা ঘরানার ছবি বানাবে সিনেবাজ। আর কেবল দেশেই নয়, বিদেশে বাংলাদেশের ছবি প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলা ছবিকে বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলবে তারা। শিগগির ‘পিকনিক’ ও ‘বিফোর ডন’-এর মতো কিছু উপহার দিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম, দেবাশীষ বিশ্বাস, চিত্রনায়ক রোশান, বাপ্পীসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের কয়েকজন পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী।