পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই শ্রাবন্তী ছিলেন আলোচনায়। নির্বাচনী প্রচারণার ঠিক আগের দিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের অন্য তারকা প্রার্থীদের তুলনায় তাঁকে ঘিরে আলোচনা ছিল বেশি। পড়েছিলেন বাধার মুখেও। নির্বাচনের আগে রোড শো বাতিলের কারণে তাই তো ক্ষেপেও গিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী শ্রাবন্তী ও পায়েল সরকার। শ্রাবন্তী প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তৃণমূল বুঝে গেছে তারা হারতে চলেছে। তাই এদের রোড শোর জনপ্লাবন যেন মানুষের চোখে না পড়ে, সেই কারণে পুলিশ তা বাতিল করে দেয়।
এদিকে নির্বাচনের ফলাফল গণনায় দেখা যাচ্ছে, ঘটনা উল্টোটা ঘটতে চলছে। এখন পর্যন্ত ‘আনন্দবাজার’ থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, শ্রাবন্তী হারতে চলছেন। তবে শেষ পর্যন্ত শ্রাবন্তীর স্বপ্নপূরণ হবে নাকি স্বপ্নভঙ্গ হবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক ঘণ্টা।
বিষয়টি নিয়ে শ্রাবন্তীর সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকেও কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তাঁকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি কেটে দেন। হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তাঁর উত্তর মেলেনি। এমনিতেই শ্রাবন্তীর ব্যক্তিগত জীবন, বিয়ে নানা কিছু নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এরপর বিধানসভার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরও তাঁকে ঘিরে আলোচনা ছিল অন্যদের তুলনায় বেশি।
বিজেপির তারকা প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় সেখানকার বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছেন। জনসমর্থন পাওয়ার জন্য পর্দার এই নায়িকা পরিশ্রমের কোনো কমতি রাখেননি। নির্বাচনের কারণে ছবির কাজেও মন দিতে পারেননি এই তারকা। বাংলাদেশ থেকেও ভারতীয় এই নায়িকাকে নিয়ে ছবি বানাতে চেয়েছিলেন একাধিক প্রযোজক। কিন্তু নির্বাচনী ব্যস্ততায় সব প্রস্তাবকে পাশে রেখেই এগোতে হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, তাতে চার কোটি টাকার সম্পত্তির উল্লেখ করেছেন তিনি। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় শ্রাবন্তীর দাবি, এই মুহূর্তে শ্রাবন্তীর হাতে নগদ রয়েছে এক লাখ টাকা। আর এইচডিএফসির দুটি শাখা মিলিয়ে ব্যাংকে রয়েছে যথাক্রমে ১ কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার ৫৫১ টাকা এবং ৫০ হাজার টাকা। শ্রাবন্তীর দুটি গাড়ি রয়েছে। একটি অডি কিউ ৭ এবং অন্যটি মারুতি ব্যালেনো; দুটি গাড়িই ২০১৯ সালে কেনা। রয়েছে ৭ লাখ টাকার মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১০ লাখ টাকার জীবনবিমা। তাঁর কাছে রয়েছে ৭ কেজি স্বর্ণ, ২০ লাখ ১২ হাজার ৪৫০ টাকা সমপরিমাণের ডায়মন্ড এবং ১২ লাখ ১৮ হাজার ৮২০ টাকার প্লাটিনামের গয়না।
এর বাইরে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকার একটি হাতঘড়ির কথা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি। স্থাবর সম্পত্তিও রয়েছে কোটি টাকার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার লেদার কমপ্লেক্সেএ ৬ বিঘা ১০ কাঠার একটি চাষের জমি রয়েছে। পর্ণশ্রীতে ১২৭১ বর্গ ফুট এবং ২২০০ বর্গ ফুটের দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। শ্রাবন্তীর একটিমাত্র ঋণ রয়েছে, এইচডিএফসি ব্যাংকে থেকে ৩৮ লাখ ১২ হাজার ৪৫৬ টাকার গাড়ি ঋণ নিয়েছিলেন।
শ্রাবন্তী বাংলাদেশে সর্বশেষ অভিনয় করেন ‘বিক্ষোভ’ সিনেমায়। মুক্তির দিণক্ষণ ঠিক না হাওয়া এই ছবির পরিচালক শামীম আহমেদ। বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া তাঁর সর্বশেষ সিনেমা ‘যদি একদিন’। মুহাম্মদ মুস্তাফা কামাল রাজ পরিচালিত এই ছবিতে তিনি অভিনয় করেন তাহসানের বিপরীতে।