বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের বর্ষীয়ান অভিনেতা ফারুক টিবি রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর আগে রাজধানীর দুটি বড় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে যান ফারুক। সাত বছর ধরে সিঙ্গাপুরের ওই হাসপাতালেই তিনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে আসছেন।
দেশে থাকাকালীন নায়ক ফারুক দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। এ জন্য তাঁকে প্রথমে দেশের দুটি খ্যাতনামা হাসপাতালে কয়েকবার ভর্তি হতে হয়েছিল। সে সময় চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছিলেন, এই অভিনেতা টিবিতে ভুগছেন।
নায়ক ফারুককে আগামী ২১ দিন চিকিৎসকদের পূর্ণ তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। রোগটি পুরোপুরি সেরে উঠলেই তিনি দেশে ফিরবেন।
ফারুকের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তিনি প্রথম আলোকে জানান, নায়ক ফারুক প্রথম দিকে ভালোই ছিলেন। গত সপ্তাহে তাঁর শরীরের মাত্র একটি পরীক্ষা বাদ ছিল। সেই পরীক্ষার ফলাফল তিন দিন আগে হাতে পেয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, ফারুকের টিবি হয়েছে। জায়েদ খান বলেন, ‘ফারুক ভাইয়ের বিভিন্ন সময় জ্বর ওঠা-নামা করত। কিন্তু কী কারণে এই জ্বরের ওঠা-নামা, তা দেশে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে তিন দিন আগে রিপোর্ট দেখে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকেরা রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন। এখন সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু হয়েছে।’ এই সময় জায়েদ আরও জানান, নায়ক ফারুককে আগামী ২১ দিন চিকিৎসকদের পূর্ণ তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। রোগটি পুরোপুরি সেরে উঠলেই তিনি দেশে ফিরবেন।
দফায় দফায় জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় ঢাকার দুটি বড় হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন ঢালিউড অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। দুটি পরীক্ষাতেই তাঁর কোভিড-১৯ নেগেটিভ আসে। এ ছাড়া টাইফয়েড, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার পরীক্ষাও করানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনো রোগ ধরা পড়েনি। এতে করে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে ফারুকের পরিবারের।
৯ সেপ্টেম্বর ফারুকের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ঢাকায় চিকিৎসকেরা একটি বোর্ড গঠন করেছিলেন। তাঁদের ধারণা, অভিনেতা টিবি রোগে ভুগছেন। এর পরের ধাপ হিসেবেই রোগনির্ণয় ও উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের উদ্দেশে যাত্রা করেন ফারুক।
প্রায় পাঁচ দশক ধরে ঢালিউডে নিজের অবদান রেখেছেন নায়ক ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।