বাঁধন, মম, বিন্দু ফিরে গেলেন ২০০৬ সালে
আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, আফসান আরা বিন্দু—তাঁরা তিনজন ১৫ বছর ধরে ভালো বন্ধু। সম্প্রতি এই তিন তারকার দেখা হয় চট্টগ্রামে। সেখানেই জমে ওঠে আড্ডা। হয়ে যান নস্টালজিক। দীর্ঘদিন পরে তাঁরা আবার ফিরে গেলেন ২০০৬ সালের দিনগুলোতে। ১৫ বছরে কতটা বদলে গেছেন এই তিন তারকা?
২০০৬ সালে ‘লাক্স–চ্যানেল আই প্রতিযোগিতায়’ অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। সে বছর লাক্স–চ্যানেল আই সুপারস্টার হন জাকিয়া বারী মম, প্রথম রানার আপ হয়েছিলেন বিন্দু, দ্বিতীয় হয়েছিলেন বাঁধন। তখন থেকে তাঁদের পথচলাও একসঙ্গে। এরপর সময়ের সঙ্গে এগিয়ে চলেছেন তাঁরা। এখন নিজ নামেই দেশের দর্শকদের কাছে পরিচিত। এই তিন তারকার আড্ডায় ঘুরেফিরে আসছিল ক্যারিয়ারে পা রাখা দিনগুলোর কথা। বাঁধন বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য মজার অভিজ্ঞতা। ২০০৬ সালে আমরা তিনজন এভাবে ট্রাভেল করেছি। লাক্সের হয়ে আমরা প্রথম একসঙ্গে হেলিকপ্টারে উঠি। দারুচিনি দ্বীপে যাই। সেদিনও চট্টগ্রামে নেমেছিলাম। একসঙ্গে আমরা আবার ট্রাভেল করে চট্টগ্রাম এসেছি। মনেই হচ্ছে না মাঝখানে ১৫ বছর চলে গেছে। সেবার হেলিকপ্টারে আমরা তিনজন আর তৌকীর ভাই ছিলেন। হেলিকপ্টারে আমি অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। বমি করেছিলাম। শুটিং আড্ডা, ক্যারিয়ার নিয়ে কী হবে—এসব মিলিয়ে রোমাঞ্চকর দিন কাটিয়েছি। সেই দিনগুলো নস্টালজিক করে দিচ্ছে।’
সে বছরই একবার দুবাই গিয়েছিলেন একসঙ্গে। পরে সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে যান। এর মধ্যে তাদের কথা হয়েছে, আলাদাভাবে দেখা হয়েছে কিন্তু একসঙ্গে আড্ডা হচ্ছে ১৫ বছর পর। কথার মাঝেই তাঁদের আড্ডা চলছিল। হাসিঠাট্টায় মেতে উঠছিলেন এই তিন তারকা। তাঁরা নিজেদের মধ্যে সম্পর্কটা এখনো আগের মতোই অটুট রেখেছেন। শুরু থেকেই তাঁরা বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের ছিলেন। কে প্রথম হয়েছে, কে দ্বিতীয় হয়েছে, এমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব ছিল না। বাঁধন বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা এখনো আগের মতোই। আমরা যদি একে–অন্যকে অন্যভাবে দেখতাম, তাহলে ১৫ বছর পর একসঙ্গে হতাম না। আমরা কথা বলছি, ঘুরতে এসেছি, ভালো সময় কাটাচ্ছি। এটা বলা যায় যে তিনজন আসতে পারব ভেবেও আজ চট্টগ্রামে এসেছি। শুধু আমরাই না। লাক্সের অন্যদের সঙ্গেও এখনো আমাদের সম্পর্ক আছে।’
এমন আড্ডা খুব মিস করেন মম। কথার শুরুতেই জানালেন, তাঁদের যোগাযোগ ছিল। তাঁরা কখনোই ডিটাচ ছিলেন না। অনেক দিন আগের বন্ধুদের ফিরে পেলে যেমন হয়, সেভাবেই সময় কাটাচ্ছেন তাঁরা। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক দিন পর এভাবে আড্ডা হচ্ছে। সবকিছু শেয়ার করতে পারব না। ১৫ বছর সবার জীবনে পৃথিবীতে অনেক কিছু বদলে গেছে। এর মধ্যে আমরা পরিচয় নিয়ে বাড়তে পারছি, টিকে আছি, ভালো আছি, এটা বড় পাওয়া। লাক্স থেকে বের হওয়া, একসঙ্গে দারুচিনি দ্বীপ সিনেমায় শুটিং করা। আমাদের হাজারো স্মৃতি জড়ো হয়ে আছে। ভালো একটা সময় কাটছে।’ দীর্ঘ ১৫ বছর পর দেখা, সে সময়ে ফিরে যেতে পারলে কী করতেন? মম বলেন, ‘আমি আসলে সে সময়ে ফিরে যেতে চাই না। আমি সামনে এগিয়ে যেতে যাই। আরও ১৫ বছর পরও যেন ফোন দিয়ে আমাদের খোঁজখবর নেন, সেই চেষ্টাই থাকে আমাদের সম্পর্কের মাঝে। আমাদের এই বন্ধুত্বটা টিকে থাক আজীবন।’ বন্ধু হলেও তাঁরা একে–অন্যকে এখনো আপু বলে সম্বোধন করেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট বিন্দু। আর সবার বড় মম। এই অভিনেত্রী বলেন,‘আমরা বন্ধু। কিন্তু শুরু থেকে একে–অন্যকে আপু ডাকতাম। এখনো সেভাবেই সম্বোধন করি।’
আড্ডায় ঘুরে আসছিল বাঁধন অভিনীত সিনেমা ‘রেহানা’র কথা। তাঁরা সবাই সিনেমাটি দেখেছেন। মম বললেন তিনি দুবার সিনেমাটি দেখেছেন। বাঁধনকে অভিনয়ের জন্য কত দেবেন এমন প্রশ্নে মম বলেন, ‘আমি বাঁধনকে ১০–এ ১১ দিতে চাই। আসলে ১০–এর মধ্যে আমি বাঁধনকে বেঁধে ফেলতে চাই না। তার নতুন জার্নিতে অভিনন্দন। সে যেভাবে সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, এ জন্য তাঁকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি।’ তাঁরা সবাই ‘উজ্জ্বলা’ নামের একটি সংগঠনের আমন্ত্রণে চট্টগ্রামে গেছেন।