প্রেক্ষাগৃহে মম–শ্যামল–পরীমনিদের সিনেমা
দেশের প্রেক্ষাগৃহে আজ মুক্তি পেল মম–শ্যামল–পরিমনীদের সিনেমা ‘স্ফুলিঙ্গ।’ প্রেম, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের এ ছবিটি নির্মাণ করেছেন তৌকীর আহমেদ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আজ মুক্তি দেওয়া হলো ছবিটি।
স্ফুলিঙ্গ তরুণ একটি গানের দলের কাহিনি। নেপথ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শিল্পসুচে গেঁথেছেন নির্মাতা। বর্তমান তারুণ্যের সংকটকে যুদ্ধদিনের তারুণ্যের সংগ্রামের সঙ্গে মিলিয়ে যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন। ছবিটি মুক্তির আগেই দুটি গান অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দর্শকপ্রীতি কুড়িয়েছে। ছবির ভাবনা, গল্প, নির্মাণে পরিচালক রেখেছেন স্বকীয়তার ছাপ।
এই ছবির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্যামল মওলা। এ নিয়ে ভীষণ রোমাঞ্চিত এই অভিনেতা। ইতিমধ্যে টিভি এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে তাঁর নানা দৈর্ঘ্যের কাজ তরুণদের কাছে তাঁকে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। এই সিনেমার মাধ্যমে এক রোমান্টিক ভাবমূর্তি নিয়ে পর্দায় এসেছেন তিনি। শ্যামল মওলা বলেন, ‘ছবিটিতে অভিনয় করে বেশ আনন্দ পেয়েছি। আমার বিশ্বাস, ছবিটি দেখে দর্শকও আনন্দ পাবেন।’
অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘কেবল এই চরিত্র নয়, দর্শকের সামনে যেকোনো ভূমিকায় হাজির হওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত। এটা মুক্তিযুদ্ধের ছবি, এটা করতে পেরে আমি মনে করি, একটি দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। তা ছাড়া তৌকীর আহমেদের মতো নির্মাতার সঙ্গে কাজের সুযোগ পাওয়াটা আমার জন্য গর্বের।’
গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পান্থপথের স্টার সিনেপ্লেক্সে ছিল ছবির দুটি প্রদর্শনী। উদ্বোধনী এ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ছবির পরিচালক, অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলীরা ও বিনোদন অঙ্গনের সুধীজনেরা। উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন ছবির অন্যতম অভিনয়শিল্পী পরীমনি।
ভারতের কলকাতা থেকে তিনি লিখেছেন, ‘আজ (বুধবার) সকাল থেকে ভীষণ ইচ্ছে করছে পাখি হয়ে যেতে। ইশ্, কী দারুণ হতো ব্যাপারটা। পাখি হলে ঠিক সন্ধ্যার আগে আগে উড়াল দিতাম আমি। কোনো কিছুই আমাকে বেঁধে রাখতে পারত না। ঘণ্টাখানেক নীল আকাশে ডানা ঝাপটে টুপ করে হাজির হতাম আপনাদের মাঝে। স্ফুলিঙ্গর প্রিমিয়ারে! একসাথে সবাই মিলে দেখতাম আমাদের স্ফুলিঙ্গ টিমের এত মায়া, এত যত্নে বনানো গল্পটা।’ স্ফুলিঙ্গ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, মামুনুর রশীদ, শহীদুল আলম সাচ্চু, রওনক হাসান, হাসনাত রিপন, পিন্টু ঘোষ প্রমুখ।
নতুন প্রযুক্তি, উন্মুক্ত বাজার, সিনেমার মান ও পরিমাণ—সব মিলিয়ে ধুঁকছিল ঢালিউড। করোনা মহামারির কারণে সেই অবস্থার আরও অবনতি হয়। এই সময়ে সর্বোচ্চসংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল স্ফুলিঙ্গ। বাংলা সিনেমার জন্য এটি অত্যন্ত ইতিবাচক ঘটনা।
তৌকীর আহমেদ এর আগে পরিচালনা করেছেন জয়যাত্রা, রূপকথার গল্প, দারুচিনি দ্বীপ, অজ্ঞাতনামা, হালদা ও ফাগুন হাওয়ায় ছবিগুলো। উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে নিজের ছবির সব কলাকুশলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ছবিটি আমি একা বানাইনি। ছবি একা বানানো যায় না। দল বেঁধে কাজ করে ছবি বানাতে হয়। তাই প্রডাকশন বয় থেকে শুরু করে মিউজিক ডিরেক্টর—সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’