১১ বছর আগে গ্র্যাজুয়েশন শেষ হয় অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধনের। ২০১৪ সালে হঠাৎ তাঁর মনে হলো, বিসিএস পরীক্ষা দিতে হবে। পছন্দের বিভাগ প্রশাসনিক ক্যাডার, বিসিএস দিয়ে পুলিশের বড় কর্মকর্তা হতে চেয়েছিলেন।
সে সময় বিনোদন অঙ্গনে ব্যস্ত তিনি। তাই তখন ধৈর্য কুলায়নি বাঁধনের। বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তাঁর। সাত বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নে জায়গা পেলেন তিনি। স্বপ্নেও যা ভাবেননি, তা–ই হয়েছে দেখে তিনি ভীষণ আনন্দিত।
পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই মেসেঞ্জারে একের পর এক আসতে থাকে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নের খণ্ডিত অংশ, যেখানে “রেহানা মরিয়ম নূর” প্রসঙ্গ এসেছে। আমি তো অবাক। এ আমি কী দেখছি। স্বপ্নেও যা ভাবিনি!
আজ ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। যেখানে একটি প্রশ্ন রয়েছে এমন: ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন—
ক. জেরেমি চুয়া খ. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
গ. রাজীব মহাজন গ. আজমেরী হক বাঁধন
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব কটি সেটে এই প্রশ্নটি স্থান পেয়েছে। কোথাও ৫০ নম্বর প্রশ্ন, কোথাও রয়েছে ৮৭ নম্বরে। বাঁধন বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই মেসেঞ্জারে একের পর এক আসতে থাকে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নের খণ্ডিত অংশ, যেখানে “রেহানা মরিয়ম নূর” প্রসঙ্গ এসেছে। আমি তো অবাক। এ আমি কী দেখছি। স্বপ্নেও যা ভাবিনি!’
প্রথম আলোকে বাঁধন বলেন, ‘আমার যেকোনো ব্যাপারে আমার শিক্ষকদেরও একটা উৎসাহ ছিল। শিক্ষকেরা আমাকে নিয়ে সব সময় স্বপ্ন দেখতেন। যেহেতু আমি ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম, শিক্ষকদের পছন্দেরও ছিলাম। বন্ধু আর শিক্ষকেরাও আমাকে বিসিএস দিতে উৎসাহ দেয়। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে আমি কোচিং সেন্টারেও গিয়েছিলাম। আমার একটা ইচ্ছাও ছিল।
কিন্তু বিসিএস দিতে অনেক অনেক পড়তে হয়। তখন এতটা পড়ার সময়-সুযোগও ছিল না। ধৈর্যও অবশ্য ছিল না। কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নে, আমি অভিনয় করছি এ রকম একটা সিনেমার প্রসঙ্গ এসেছে, আমি জানি না মানুষ এটা বুঝবে কি না। ডেফিনেটলি আমি অনেক বেশি সম্মানিত। আনন্দিত তো অবশ্যই। আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।’
ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে। সেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক। এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বের হয়ে তিনি এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন, যা তাকে প্রতিবাদী করে তোলে। এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য হন রেহানা। একই সময়ে তার ছয় বছরের মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার খুঁজতে থাকেন।
পরিচালনার পাশাপাশি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও লিখেছেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। এতে রেহানা মরিয়ম নূর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম, সাবেরী আলম প্রমুখ।