আড়ালে পপি, বিপাকে প্রযোজক
২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর ‘ধোঁয়া’ নামের একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন পপি। প্রযোজকের কাছ থেকে সাইনিং মানি হিসেবে নেন এক লাখ টাকা। এ বছরের মার্চে ছবির শুটিং শুরুর কথা ছিল। তবে কাজ শুরুর আগে চুক্তির খবরটি মিডিয়াতে প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন পপি। খবর গোপনই রাখেন ছবির পরিচালক ও প্রযোজক। এর মধ্যেই ছবির অন্য সব প্রস্তুতিও চলতে থাকে।
মাঝেমধ্যে কাজ নিয়ে পপির সঙ্গে আলাপ–আলোচনাও চলতে থাকে। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ রকমই চলছিল। তারপর হঠাৎ আড়ালে চলে যান পপি।
কোথাও তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। মুঠোফোন-হোয়াটসঅ্যাপ সব বন্ধ। নানাভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ছবির প্রযোজক ও পরিচালক। ফলে প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও ছবির কাজ শুরু করতে পারছেন না তাঁরা। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ছবির প্রযোজকেরা।
দুই প্রযোজকের একজন ও ছবির নায়ক ওমর মালিকের অভিযোগ, ‘আমরা সিনেমাতে নতুন। এসেই হোঁচট খেতে হলো। তিনি ছবিটি আদৌ করবেন কি না, তা–ও বুঝতে পারছি না। না করলেও তো বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটাও তো তাঁর সঙ্গে কথা না বলে করা যাচ্ছে না। চুক্তির সময় পপিকে এক লাখ টাকা সাইনিং মানিও দিয়েছি আমরা।’
অথচ গল্প শুনে উৎসাহ নিয়েই ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন পপি, জানান এই প্রযোজক। তিনি বলেন, ‘ছবিটি নিয়ে আমাদের পরিকল্পনাও তাঁর পছন্দ হয়েছিল। আমাদের কাছে সেটি একাধিকবার বলেছিলেন।’
এ প্রযোজকের অভিযোগ, ‘আড়ালে যাওয়ার বিষয়টি হয়তো পপির পরিকল্পনায় আগে থেকেই ছিল। সে কারণেই হয়তো চুক্তির খবরটা আমাদের গোপন রাখতে বলেছিলেন, যেটি আমরা বুঝতে পারিনি। পপি প্রায়ই আমাদেরকে বলতেন ফিল্ম থেকে আমার আর কিছু পাওয়ার নেই। সমাজে সুনাম, দর্শকের ভালোবাসা, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার—সবই পেয়েছি।’
ওমর মালিক বলেন, ‘নানাভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা, কিন্তু পাচ্ছি না। লোকমুখে শুনেছি, তিনি নাকি ঢাকার কোনো এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, পপি খুলনাতে তাঁর বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছেন।’
শেষ পর্যন্ত পপিকে পাওয়া না গেলে পরবর্তী সময়ে কী পদক্ষেপ নেবেন জানতে চাইলে ওমর মালিক বলেন, ‘আরও কিছুদিন দেখব। যদি না পাওয়া যায় তাহলে বিষয়টি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত আকারে জানাব।’
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য পপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পপি খুলনায় অবস্থান করছেন—প্রযোজকের এমন ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বাবা আমির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, পপি খুলনাতে নেই, ঢাকাতেই আছে। প্রযোজকের অভিযোগের বিষয়টি পপির বাবাকে জানালে পপির সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত এ প্রতিবেদককে জানাবেন বলে জানান আমির হোসেন। কিন্তু তার পর থেকে তিনিও আর এ প্রতিবেদকের ফোন ধরছেন না।