কয়েক মাস ধরে কোথাও খোঁজ নেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী সাদিকা পারভীন পপির। এর মধ্যে শোনা যায়, তিনি বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন, এমনকি তিনি মা–ও হয়েছেন। কিন্তু এত কিছুর পরও তাঁকে ক্যামেরার সামনে পাওয়া যায়নি। অবশেষে আজ বুধবার সকালে তিনি ক্যামেরার সামনে এলেন। ফেসবুকে ৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা দেন তিনি। সেখানে তিনি কাঞ্চন-নিপুন প্যানেলের জন্য ভোট চান। তাঁদের বিজয়ী করতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোটারদের কাছে ভোট দেওয়ার অনুরোধও করেন।
আজ বুধবার দুপুর থেকেই পপির ৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে যায়। যেখানে নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে কিছু না বললেও আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। ভিডিও বার্তায় পপি বিগত দুই মেয়াদে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ক্ষমতাসীন একজনকে ইঙ্গিত করে কিছু অভিযোগের কথাও তুলে ধরেন। যদিও তিনি সরাসরি তাঁর নাম নেননি।
পপি বলেন, ‘ভেবেছিলাম আর কখনোই ক্যামেরার সামনে আসব না। কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে এবং নিজের কিছু দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আজকে কিছু কথা না বললেই নয়। দীর্ঘ ২৬ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে সুনামের সাথে কাজ করার চেষ্টা করেছি। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছি, আজ আমি কোথায়! আমি আছি আপনাদের মাঝেই, হয়তো ভাগ্য থাকলে আবারও ফিরব।’
পপি বলেন, ‘বর্তমান শিল্পী সমিতির একটিমাত্র লোকের কারণে, তার পলিটিক্স এবং তার অনেক রকম অসহযোগিতার কারণে আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে। শুধু আমি না, আমার মতো রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নিপুণও অপমানিত হয়েছেন। আমাদের ব্যবহার করে যে এই চেয়ারটিতে ওই লোক বসেছে—সেখানে বসেই বিভিন্ন রকমের অপকর্মের চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা গুটিকয় তাতে সায় দেইনি। যার কারণে আজকে আমি ভিকটিম। আমার মতো শিল্পীকে সদস্য পদ বাতিলের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এত বছর কাজ করার পর এমন আচরণ, একটা শিল্পীর জন্য কতটুকু অপমানের—সেটা আমি বুঝতে পারি। ১৮৪ জন শিল্পীরাও এই কষ্টটা বুঝতে পারবে।’
ভিডিও বার্তায় পপি বলেন, ‘এসব কারণে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আমার কাছে সদস্য পদ বাতিলের চিঠিটা এখনো আছে। ওই চিঠিটা যখনই পেয়েছি, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই নোংরামির মধ্যে আর আমি যাব না। ভেবেছি, কখনো যদি পরিবেশ ভালো হয়, তখনই চলচ্চিত্রে ফিরব।’ ভিডিও শেষে হাত জোড় করে পপি চলচ্চিত্র শিল্পীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা যে ভুলটা করেছি, দয়া করে আপনারা সেই ভুলটা করবেন না। চলচ্চিত্র বাঁচলেই আমরা বাঁচব। আমরা পরিবর্তন চাই, কাজ চাই। সে জন্য আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের পরীক্ষিত সৈনিক কাঞ্চন ভাই, নিপুণ, রিয়াজদের একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। ভালো কাজের জন্য, তারা অন্তত শিল্পীর মূল্যায়ন করবে।’