আসলে আমাদের বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না: পরীমনি
শরিফুল রাজ ও পরীমনি বিয়ের পর এবারই প্রথম ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন করছেন। শরিফুল রাজ চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বিয়ে করবেন, এটা স্বপ্নেও চিন্তা করেননি। পরীমনিও কখনো ভাবেননি যে রাজকে বিয়ে করবেন। তবে রাজকে শুটিংয়ে দেখার পর নাকি মনে হয়েছে, একে বিয়ে করা যায়।
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সিবিএল মাঞ্চি চাংকি চক ভালোবাসার দিনে ভালোবাসার গল্প সিজন-৪’ অনুষ্ঠানে এসব গল্প শুনিয়েছেন রাজ ও পরীমনি। মুমতাহিনা টয়ার উপস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানে পরীমনি বলেন, ‘রাজের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর মনে হয়েছে, তার রাজ্যে তো রানি হওয়াই যায়। আমিই প্রথম রাজকে প্রেমের প্রপোজ করেছি।’ পরীমনির সহজ-সরল স্বীকার উক্তি।
প্রেমের প্রস্তাবের পর বেশি দিন প্রেম করার সুযোগ পাননি রাজ ও পরী। কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে করে ফেলেন তাঁরা। ‘আসলে আমাদের বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। একসঙ্গে সারা জীবন থাকার জন্যই আমরা বিয়ে করে ফেলি।’ এমনটাই বললেন পরীমনি।
শরিফুল রাজ ও পরীমনির বিয়ের ঘটক ছিলেন পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম। আর উকিল বাবা ছিলেন রেদওয়ান রনি। এই দুজনের চেষ্টায় চার হাত এক হয়। বিয়ের পরে নিজেদের বন্ধু নয়, স্বামী-স্ত্রী ভাবতেই ভালো লাগে পরীমনির। বলেন, ‘আমরা বিয়ের আগেও কখনো বন্ধু ছিলাম না। আমাদের ঘটা করে বন্ধুত্ব করা হয়নি। বন্ধুরা যেমন সময় কাটায়, সেভাবে সময়ও কাটানো হয়নি।’ তবে শরিফুল রাজ বলেন, ‘এখন আমরা বন্ধুর মতো সময় কাটাচ্ছি।’
ভালোবাসা দিবসের আগে ধারণ করা এ অনুষ্ঠানে বিয়ের পর প্রথম ভালোবাসা দিবস কীভাবে উদ্যাপন করবেন, সেই পরিকল্পনা জানান পরীমনি। তিনি বলেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল রাজকে অনেক বেশি সারপ্রাইজ করব ভালোবাসা দিবসে।’
আর ভালোবাসার কীভাবে শুরু হলো, সে গল্প বলতে গিয়ে শরিফুল রাজ বলেন, ‘আমাদের ভালোবাসার গল্প শুরু হয়েছে চরকি অরিজিনাল ফিল্ম গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত “গুনিন”–এর সেট থেকে। আসলে আমাদের সবকিছু হুটহাট করে হওয়া।’ মাঝখানে পরীমনি যোগ করেন, ‘আমার “গুনিন” সিনেমাতেও হুট করে জয়েন করা। কে আমার সহশিল্পী, সেটাও দেখার সুযোগ পাইনি। গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাই আমাকে সিনেমার জন্য বলেছেন, তাই আমি সিনেমায় জয়েন করেছি। আমার কাছে গল্প, কোথায় শুটিং হবে বা অন্য কিছু দেখার দরকার হয়নি। সিনেমাটি গিয়াস উদ্দিন সেলিম বানাচ্ছেন, এটাই আমার কাছে বড় বিষয়।’
রাজকে ভালো লাগার কারণ বলতে গিয়ে পরীমনি বলেন, ‘রাজ যা করে তার মধ্যে একটা বাচ্চামি থাকে। ওটা দেখে মনে হয়েছে, মানুষটা তো আসলে আমার চাওয়ার মতোই।’ রাজের কেন পরীমনিকে পছন্দ? কী দেখে প্রেমে পড়েছিল এবং ভালোবেসেছিল, এমন প্রশ্নে রাজ বলেন, ‘শুটিংয়ের কিছুদিন আগে আমার একটা দুর্ঘটনা ঘটে। আমার হাত ভাঙা ছিল। আমি ভাঙা হাত নিয়েই শুটিং যাই। যেহেতু আমি ডান হাত ব্যবহার করতে পারতাম না তাই বাঁ হাত দিয়ে খাবার খাওয়াসহ অন্য সব কাজ করতাম।’
রাজের কথা শেষ হতে না হতে পরীমনি কিছুটা যোগ করে বলেন, ‘শুটিং শুরুর আগে আমরা গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাইয়ের বাসায় মিট করি। ওই দিন সাদা পাঞ্জাবি পরে ঘরের কোনায় একটা ছেলে বসে ছিল। গিয়াস ভাই আমাকে খুব বকাবকি করছিল। কিন্তু আমি শুধু ঘরে কোনায় বসে থাকা ছেলেটাকেই দেখছিলাম। ওই দিন কোনো বকাবকিই আমার গায়ে লাগেনি। এরপর রাজ সেলিম ভাইকে বলল আমার খিদে লেগেছে। টেবিলে অনেক খাবার থাকার পর রাজ বলে, আমি ভাত খাব। তখন আমি জানতে চাইলাম কোনো আইটেম পছন্দ আছে কি না। রাজ জানায়, মুরগির তরকারি দিয়ে খাবে।’
রাজ এবার শুটিংয়ের গল্পটা আবার বলা শুরু করে। ‘ডান হাত ভাঙা থাকার কারণে ভাত খাওয়ার সময় আমার হাত থেকে ভাত পড়ে যেত। এ বিষয়টা পরীমনি খেয়াল করে। এরপর যখনই ভাত খেতাম, পরী আমাকে নিজের হাত দিয়ে খাইয়ে দিত।’ এভাবেই পরীমনিকে রাজের ভালো লাগা শুরু হয়। স্ত্রী হিসেবে পরীমনি কেমন? রাজের উত্তর, অসাধারণ, অসাধারণ এবং অসাধারণ। রাজ স্বামী হিসেবে কেমন, ‘পারফেক্ট স্বামী’ পরীমনির এক কথায় উত্তর।