সাত বছর আগে শুটিং হওয়া ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবি নিয়ে এখন ঢালিউডে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই ছবির নায়ক শাকিব খানকে ঘিরে এই আলোচনার সূত্রপাত। হঠাৎ গত সপ্তাহে ছবির নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে শিডিউল নিয়ে গড়িমসি, ছবির শুটিং না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি এবং সহপ্রযোজক এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন রহমত উল্লাহ। শাকিব খানের সঙ্গে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবিটি নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভার্টেক্স মিডিয়ার চুক্তি হয়। আর ভার্টেক্স মিডিয়ার সঙ্গে সহপ্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হয় সিনেফ্যাক্ট, যার মালিকানায় আছেন মাহিন আবেদীন, রহমত উল্লাহ ও অস্ট্রেলীয় এক নারী।
শাকিব খানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ইস্যুতে রহমত উল্লাহর অভিযোগের কয়েক দিনের মাথায় কথা বললেন এই চলচ্চিত্রের পরিচালক আশিকুর রহমান। সিনেফ্যাক্টের তিন স্বত্বাধিকারীর একজন রহমত উল্লাহর অভিযোগ প্রসঙ্গে আজ মঙ্গলবার লিখিত বক্তব্যে ছবির পরিচালক আশিকুর রহমান জানান, শাকিব খানের নামে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেসব ত্রুটিপূর্ণ ও বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আশিকুর রহমান জানান, ২০১৮ সালে তিনি, রবিউল রবি ও শাকিব খানের লিগ্যাল প্রতিনিধি কোগরা পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলেন ওই ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য।
শাকিব খানের প্রতিনিধি পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে আলাদা একটি রুমে বসেন। প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, শাকিব খানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ তারা পায়নি। তারপর তিনি (তদন্তকারী কর্মকর্তা) শাকিব খানের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলেন এবং তাঁকে কোনো সন্দেহ ছাড়া নিশ্চিন্তে সিডনিতে শুটিং করতে বলেন।
হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় আশিকুর রহমান লিখেছেন, ‘“অপারেশন অগ্নিপথ” চলচ্চিত্রটি নিয়ে বিগত কয়েক দিনে যথেষ্ট আলাপ–আলোচনা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রের পরিচালক হিসেবে আমার অবস্থান ও বক্তব্য উপস্থাপন করছি।’ তিনি বলেন, শাকিব খান ২০১৬ ও ২০১৮ সালে দুইবার অস্ট্রেলিয়ায় শুটিং করতে আসেন। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় সাত-আট দিনের শুটিং করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে ‘সুপার হিরো’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তিনি নাকি পালিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে, যেটা বাস্তবে কখনো হওয়া সম্ভব নয়। এই দেশে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে, তা খতিয়ে শেষ না দেখা পর্যন্ত, তাঁকে দেশত্যাগ বা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে এই দুই চলচ্চিত্রের সব কলাকুশলী সম্মান ও আতিথেয়তাসহকারে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন এবং চলে যান।
রহমত উল্লাহর অভিযোগ প্রসঙ্গে আশিকুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ করার মাধ্যমে কী লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছে, সেটা অভিযোগকারীর কাছেই পরিষ্কার নয়। যদি অনৈতিক কোনো কাজ কেউ করে থাকেন, তাহলে তা যেকোনো দেশের আইনেই অপরাধযোগ্য এবং আমাদের সবারই সেটার বিচার চাওয়া উচিত। কিন্তু ঘটনার বদলে টাকা বা অন্য কোনো সুবিধা চাওয়াটা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। একটি চলচ্চিত্রের ঘাড়ে বন্দুক রেখে, ব্যক্তিগত রোষানলের বিষয়ের সমাধান করা অগ্রহণযোগ্য।’
এদিকে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ চলচ্চিত্র নিয়ে এই ছবির মূল প্রযোজক ভার্টেক্স মিডিয়ার স্বত্বাধিকারী জানে আলমও এর আগে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, শাকিব খানের সঙ্গে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবিটি নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভার্টেক্স মিডিয়ার চুক্তি হয়। আর ভার্টেক্স মিডিয়ার সঙ্গে সহপ্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হয় সিনেফ্যাক্ট, যার মালিকানায় আছেন মাহিন আবেদীন, রহমত উল্লাহ ও অস্ট্রেলীয় এক নারী। শাকিব খানের বিরুদ্ধে রহমত উল্লাহ অভিযোগ উত্থাপন করলেও এসবের কিছুই জানেন না অস্ট্রেলীয় অংশের দুই সহপ্রযোজক। এমনকি শাকিব খানের সঙ্গে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবিটি নিয়ে যে প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়েছে, তার কর্তাব্যক্তিরাও কিছুই জানেন না।
জানে আলম এ–ও বলেন, ‘আমাদের দুই পক্ষের (ভার্টেক্স মিডিয়া ও সিনেফ্যাক্ট) অন্তর্কোন্দলের কারণে ছবির কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। ছবির কাজ বন্ধের ব্যাপারে শাকিব খানের কোনো হাত নেই। রহমত উল্লাহ বারবার যে বলছেন শিডিউলের কথা, এই শিডিউল শাকিব খানের কাছে চাওয়ার অধিকারও তাঁর নেই। এটা নিয়ে কথা বলবে শুধু ভার্টেক্স মিডিয়া।