অগ্রিম পারিশ্রমিক নিয়েও কেন ‘ছুটির ঘণ্টা’য় অভিনয় করা হয়নি অঞ্জনার
না ফেরার দেশে ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা। সত্তর ও আশির দশকে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন, সে সময় দেশের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। পরে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের নানা ঘটনার স্মৃতিচারণা করেছেন। একবার যেমন জানিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের শুরুতেই রাজনীতির শিকার হওয়ার কথা।
সিনেমায় আসার আগেই অঞ্জনা পরিচিতি পান নৃত্যশিল্পী হিসেবে। ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি ঢাকাই সিনেমায় কাজ শুরু করলেও তাঁর মুক্তি পাওয়া প্রথম চলচ্চিত্র ছিল শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’। নায়ক সোহেল রানার বিপরীতে ওই সিনেমার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি অঞ্জনাকে। নিজের সেরা সময়ে ঢাকাই সিনেমার প্রথম সারির প্রায় সব নায়কের বিপরীতেই অভিনয় করেছেন তিনি।
‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে পরিচিতি পেলেও অভিনেত্রী মনে করতেন আজিজুর রহমানের ‘অশিক্ষিত’ তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এ ছবিতেই প্রথম একক নায়িকা হিসেবে দেখা যায় তাঁকে। এ ছবিতে রাজ্জাকের বিপরীতে ‘লাইলী’ চরিত্রে সুযোগ দেওয়ায় নির্মাতা আজিজুর রহমানের কাছে কৃতজ্ঞ ছিলেন অভিনেত্রী।
তবে পরিচালকের আরেকটি ছবি নিয়ে জীবনভর আফসোসে পুড়েছেন। সেটা হলো ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ছুটির ঘণ্টা’। এ ছবিতে চূড়ান্ত হওয়ার পরও বাদ পড়তে হয় অঞ্জনাকে।
২০২২ সালের মার্চে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে অঞ্জনা বলেছিলেন, সেখানেই শেষ নয়। আজিজুর রহমানের ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবিতে কাজের জন্য চূড়ান্ত করা হলো অঞ্জনাকে। সাইনিং মানি নয়, টোকেন মানি হিসেবে ছোট্ট একটি অঙ্ক তুলে দেওয়া হয় অভিনেত্রীকে। কিন্তু ছবিটিতে আর কাজ করা হয়নি অঞ্জনার। তিনি বলেন, ‘ছবিতে কাজের শিডিউলও ঠিকঠাক হয়ে যায়। পারিশ্রমিকের কিছু টাকা অগ্রিম আমাকে দিয়েছিলেন আজিজ ভাই। কিন্তু হঠাৎ করেই এর ভেতরে রাজনীতি ঢুকে যায়। কে বা কারা রাজনীতি করেছিল, সেটা এখন আর বলতে চাই না। শুধু বলি, তখন আমাকে “ছুটির ঘণ্টা” থেকে বাদ দেওয়া হলো। ছবিটায় কাজ করতে না পেরে খুব কেঁদেছিলাম। মনে আছে, আজিজ ভাই বলেছিলেন, “কাঁদিস না, তোর জীবনে অনেক ছবি হবে।”’
হয়েছেও তা–ই। অঞ্জনাকে নিয়ে পরে আজিজুর রহমান করেছিলেন ‘ফুলেশ্বরী’ ও ‘মেহমান’ নামে দুটি সিনেমা।
চার দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন অঞ্জনা।