ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের ওপর রাগ ঝাড়লেন নূতন

শিল্পী সমিতির নেতাদের ইঙ্গিত করে ক্ষোভ ঝাড়লেন অভিনেত্রী নূতন।
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত


‘কথা বললেই সম্মান হারানোর ভয়ে আমরা সিনিয়র শিল্পীরা এখন বোবা হয়ে গেছি। সঙ্গে আবার ক্ষমতার দাপটও আছে। তবে আমি মৃত্যু ছাড়া বোবা হতে চাই না। আর ছোট থেকেই ভয় একটু কম,’ এ ভাবেই শিল্পী সমিতির নেতাদের ইঙ্গিত করে ক্ষোভ ঝাড়লেন অভিনেত্রী নূতন।

উত্তেজিত হয়ে নূতন ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘এই ভুলে যাওয়া, বুঝে না বুঝে সম্মান ঘাটতির খেসারত দিতে গিয়ে আজ চলচ্চিত্র ধ্বংস। সিনিয়ররা মৃতপ্রায় চলচ্চিত্রে নির্বাচনে অনীহা বলেই অনেকে এই সুযোগ নেয়। ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেব নেতা হওয়ার আগে, একজন অভিনেতা, বন্ধু, সেই সোনালি যুগের সাক্ষী। তাকে তা মাথায় রাখা উচিত। তা ছাড়া একজন সিনিয়র শিল্পীও এ ব্যাপারে কথা বললেন না? আজ রোজি আফসারী নাই তাই কথা নাই, স্বার্থ নাই। কাল আমি না থাকলেও কোনো কথা হবে না।’ এ সময় ইলিয়াস কাঞ্চনকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

অভিনেত্রী নূতন
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

গত ৯ মার্চ ছিল অভিনেত্রী রোজি আফসারীর মৃত্যুবার্ষিকী। অথচ এই দিনে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে এই অভিনেত্রীকে সম্মান না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নূতন। এটাকে অসম্মান উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘প্রায়ই দেখা যায় সিনিয়রদের শিল্পী সমিতি থেকে জন্ম–মৃত্যুবার্ষিকীতে সম্মান জানানো হয় না। নিজের সংগঠনই যদি নিজেদের কাউকে মনে না রাখে, তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম কীভাবে চিনবে–জানবে। একজন রোজিকে নিয়ে না ভাবা বর্তমান শিল্পী সমিতির জন্য ব্যর্থতা। ইলিয়াস কাঞ্চন একজন গুণী সিনিয়র শিল্পী, সে আমার বন্ধু। সে সব সময় রাগী, একরোখা, সততার একটা মনোভাব নিয়ে থাকে। যা সে লালন করে, তবে তার এই গুণের পাশাপাশি তাকে আবেগপ্রবণ হওয়া উচিত। তা না হলে তার এই একরোখা স্বভাব মূল্যহীন হয়ে যাবে।’

ইলিয়াস কাঞ্চন
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

এ সময় নূতন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তারের সমালোচনা করে লেখেন, ‘নিপুণ, সে অনেক ছোট ও চলচ্চিত্র ইতিহাস বা আমাদের আগের শিল্পীদের মর্ম তার না জানারই কথা। দেখা হলে আপু বলে ডাকে আমায়। আমি ছোট বোন জানি। আমি তাকে আমার শেষ মুহূর্তে দেখেছি, তা–ও খুব সামান্য। কিছু ভালো ছবি সে করেছে, মেধাবী, শিক্ষিত। নির্বাচন কেন্দ্র করে আলোচনা না হলে আরও ৮–১০ জনের মতো হারিয়ে যাওয়া তালিকায় তার নাম থাকত। তার প্রতি আমার রাগ নেই, আমার ছোট বোন, সম্মান করে। এখন তা মনে হয় দেখানো সম্মান। তার এই মহানেত্রীসুলভ আচরণে বা অধিক ক্ষমতায়নে তার এসব নিয়ে ভাবার সময় না–ই থাকতে পারে। তার ধারণা, সারা বাংলাদেশ তার সঙ্গে। যদিও কাঞ্চন না থাকলে আর জায়েদের ভুল না হলে নিপুণের নাম সেভাবে আসত না। তবে আমি তাকে অনুরোধ করব ছোট বোন হিসেবে বড়দের সম্মান করা, মনে লালন করতে হবে।’

নিপুণ আক্তার
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ইলিয়াস কাঞ্চনকে উদ্দেশ্য করে নূতন আরও লিখেছেন, ‘কাঞ্চন সাহেবের উচিত ছিল রোজি আফসারীকে মনে রেখে একটা মিলাদ মাহফিল করা। সময় সবার এক রকম থাকে না, অসম্মানিত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমার অনুরোধ, দয়া করে কারও মিথ্যা আদর আর দেখানো সম্মানে আপনার অবচেতন মনে কারও স্বার্থে ব্যবহার হবেন না। আমাদের একটু সম্মান দিলেই ব্যবহার করা যায়। কারণ, আমরা সম্মানিত হতেই জন্মাইছি। তা–ও আপনি সভাপতি, গুণী; তাই একটু সচেতন হওয়ার অনুরোধ। যেন সিনিয়র শিল্পীরা কেউ মারা গেলে তাদের নাম নেয়, কেউ যেন স্বীকার করে আমরাই চলচ্চিত্র। আর দয়া করে মূর্খতাসুলভ আচরণ করবেন না যে, আপনি জায়েদের পক্ষে হেনতেন, আমি জায়েদ–নিপুণ এদের জন্মাইতে দেখছি। আমি আমার সময়ের বন্ধু, আমার সহকর্মীদের পক্ষে। এসব শিল্পী সমিতি ছোটখাটো কারও পক্ষে–বিপক্ষে থাকার জন্য আমি নায়িকা হইনি বা জন্মাইনি।’