মনোগামীতে যা দেখাইছি, সেই কাজ করে না বসি: ফারুকী
ঈদ উপলক্ষে চাঁদরাতে মুক্তি পেয়েছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম ‘লাস্ট ডিফেন্ডার অব মনোগামী’। চরকিতে চলছে সম্পর্ক, মনোজগৎ এবং বাস্তবতার জটিল সমীকরণ। এই নিয়ে নতুন করে আলোচনায় সম্পর্ক এবং বৈবাহিক জীবনের এক অন্য রকম পথচলা। যুগ যুগ ধরে এমন মনস্তাত্ত্বিক জটিলতায় পড়ে আসছেন বহু মানুষ। মূলত বাস্তব জীবনের পরিচিত এই ধাঁধাই পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। এই সিনেমা দেখে প্রশংসায় ভাসছেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী এবং সংগীতশিল্পী জেফার রহমান। অভিনয়ে প্রথম হলেও জেফার সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছেন। সে কারণে নতুন অভিনেত্রীকে নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। প্রশংসিতও হচ্ছেন গায়িকা থেকে নায়িকা বনে যাওয়া জেফার।
জেফারের অভিনয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উচ্ছ্বসিত নির্মাতা ফারুকীও। অভিনেতার তুলনায় অভিনেত্রীকেই বেশি প্রশংসা করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। যা দেখে নাক উঁচু করেছেন নিন্দুকেরা। মনে মনে প্রশ্ন আঁটছেন, ফারুকীও কি একই পথে হাঁটছেন, মনোগামীর মতো! যা হয়তো বুঝেছেন নির্মাতা নিজেও। তাই তো এ নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়ে না লিখতে পারার কারণও দর্শালেন গুণী এই নির্মাতা।
সম্প্রতি ফারুকী নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘শুধু জেফার অ্যাপ্রেসিয়েশন পোস্ট দেখে কেউ কেউ আমাকে সতর্ক করেছে আমি যেন মনোগামীতে যা দেখাইছি, সেই কাজ নিজে করে না বসি! যা–ই হোক চঞ্চল চৌধুরী সম্পর্কে লিখতে যাওয়ার প্রথম ঝামেলা হইল আমার মোবাইলে বাংলা হরফে তার নামের বানান লিখতে আমার জান খারাপ হয়ে যায়, আজকে আরেকজনকে দিয়ে টাইপ করাইছি।
চঞ্চল ভাই মনোগামীতে যেভাবে কোনো রকম অ্যাফোর্ট ছাড়া শাফকাত চরিত্রের ভেতরের ডিজায়ার, অপরাধবোধ, চাইল্ডিশনেস ফুটিয়ে তুলেছে, এটা কেবল ওস্তাদ আদমির পক্ষে সম্ভব। হিজ কমিক টাইমিং ওয়াজ অন আ ডিফরেন্ট লেভেল এবং যেভাবে উনি বারবার রাস্তা বের করতেছিলেন লামিয়াকে কাছে টানতে, এটা অ্যাবসলিউট মাস্টারস্ট্রোক। হ্যাটস অফ। গুডনাইট। ফেসবুকিংয়ের টাইম ওভার ফর টুডে।’
মুক্তির আগে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই সিনেমা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমার প্রিয় একটা কাজ হচ্ছে মানুষের মনের ভেতর ছিপ ফেলে দেখা, কী কী ধরা পড়ে সেখানে। ছোট-বড়, তুচ্ছ-গুরুত্বপূর্ণ—সবই আমাকে নাড়া দেয়। “মনোগামী”তে অনেক দিন পর নারী-পুরুষ সম্পর্কের কিছু দিক নিয়ে এ রকম ছিপ ফেলার সুযোগ পেয়েছি।’
পরিচালকের ভাষ্যে, ‘“ব্যাচেলর” ছবিতে ব্যাচেলর–জীবনের কিছু দিক কোনো রকম রাখঢাক ছাড়া দেখাতে পেরেছিলাম। এখানে বিবাহিত ও প্রবাহিত জীবনের কিছু দিক কোনো সুইট কোটিং ছাড়া দেখানোর সুযোগ পেয়েছি।’
প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ছবির অভিনেত্রী জেফার বলেছেন, “‘মনোগামী’তে যে পরকীয়ার মতো বিষয় দেখানো হয়েছে, এটা কিন্তু শুধু আমাদের সমাজে নয়, বিশ্বের সব দেশেই পরকীয়া একজিস্ট করে। হয়তো মানুষ এটা নিয়ে কথা বলে না। এটা ট্যাবু টপিক। “মনোগামী”তে একটা পার্থক্য দেখানো হয়েছে, বার্তা রয়েছে। সচরাচর যেসব হয়, সেগুলোই কিন্তু গল্পে দেখানো হয়েছে। এখানে গল্পের সঙ্গে কিন্তু অনেকেই রিলেট করতে পেরেছেন। একেকজন একেকটা চরিত্রের সঙ্গে রিলেট করছে। এটা আমি নিজেও শুনেছি। অনেক দর্শক বলছেন, “মনোগামী”র সঙ্গে নিজেদের রিলেট করতে পেরেছেন।’