মন্ত্রীর কাছে ঈদ সিনেমার দুই নায়ক যে আবেদন জানালেন
দেশের প্রেক্ষাগৃহে ঈদে মুক্তি পাওয়া দুটি চলচ্চিত্রের দুই নায়ক বাপ্পী চৌধুরী ও জয় চৌধুরী তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, আপাতত দেশের বাইরের কোনো ছবি যেন দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া না হয়। তাঁরা দুজনে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ আহ্বান জানান।
এবারের ঈদে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে আটটি চলচ্চিত্র। আট ছবির মধ্যে তিনটির প্রতি দর্শকের আগ্রহ ভালো বলে জানায় প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। এদিকে আগে থেকে শোনা গিয়েছিল, আগামী ৫ মে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’। বলিউডি এ ছবি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়ার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছিল দেশের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। দেশের প্রেক্ষাগৃহে যেহেতু ঈদে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ভালো চলছে, তাই কেউ কেউ বলছেন, এ মুহূর্তে দেশের বাইরের কোনো ছবি মুক্তি না দিলে ভালো হয়।
তপু খান পরিচালিত ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’ ছবিটি এবারের ঈদে দেশের ১০০ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। প্রেক্ষাগৃহ–খরার এ সময় এটা একটা রেকর্ড মনে করছে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন পরিবেশক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, শাকিব খানের ছবি বলে এমনটি সম্ভব হয়েছে।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, বাপ্পী ও জাহরা মিতু অভিনীত ‘শত্রু’ ছবি ২৪টি, পূজা চেরি ও সজল অভিনীত ‘জ্বীন’ ১৪, অনন্ত জলিল ও বর্ষা অভিনীত ‘কিল হিম’ ১১টি, আদর আজাদ ও বুবলী অভিনীত ‘লোকাল’ ৯টি, অপু বিশ্বাস ও জয় চৌধুরীর ‘প্রেমপ্রীতির বন্ধন’ ৯টি, রোশান ও ববি অভিনীত ‘পাপ’ ৮টি, ইয়াশ রোহান ও ঐশী অভিনীত ‘আদম’ ৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এসব ছবির মধ্যে সিঙ্গেল স্ক্রিন ছাড়া মাল্টিপ্লেক্সে প্রায় সবার ছবি মুক্তি পেয়েছে।
৫ মে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা রয়েছে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’। মূলত পাঠানের মুক্তি পিছিয়ে দিতে এমন আবেদন জানিয়েছেন বাপ্পী চৌধুরী ও জয় চৌধুরী। ‘শত্রু’ ছবির নায়ক বাপ্পী তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি বাপ্পী চৌধুরী বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা। এ ঈদে আটটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। আটটিই খুব ভালো চলছে। ১৬০টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাগুলো ঘুরে ঘুরে যদি চলে, তাহলে আমাদের দর্শক সিনেমাগুলো দেখতে পাবে এবং আমাদের প্রযোজকেরা লাভবান হবেন। এমন পরিস্থিতিতে এখন যদি দেশের বাইরের কোনো সিনেমা আমাদের দেশে রিলিজ হয়, তাহলে আমাদের কষ্টার্জিত সিনেমাগুলো দর্শক দেখতে পাবে না এবং প্রযোজকেরাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বিনীত আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের চলচ্চিত্রগুলোর স্বার্থে, প্রযোজকের স্বার্থে এবং নতুন প্রযোজকের আগ্রহের স্বার্থে—দেশের বাইরের সিনেমাগুলো এ দেশের হলে এখন চালাতে অনুমতি না দিলে আমাদের সিনেমা উপকৃত হবে। আমাদের এ চলচ্চিত্রশিল্প দেশের ঐতিহ্য এবং সামাজিকতা রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখবে বলে আমি মনে করি।’
বাপ্পী চৌধুরীর কথাগুলো নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে জয় চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি, এটি একটি জাতীয় সম্পদ। এটি রক্ষা করার দায়িত্ব শুধু এ চার দেয়ালের বন্দী মানুষগুলোর নয়, আপনাদের সবার।’