চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ জানালেন ইলিয়াস কাঞ্চন

ইলিয়াস কাঞ্চনছবি: প্রথম আলো

সপ্তাহখানেক আগে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ড গঠন হয়েছে। এরই মধ্যে জুরিবোর্ড সদস্যরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে গিয়ে একটি সভা করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে জানা গেল, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২৩ জুরিবোর্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী ইলিয়াস কাঞ্চন। এরই মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে তা জানিয়েও দিয়েছেন। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন।

আজ সোমবার দুপুরে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সময়ের অভাবে এই জুরি কমিটিতে থাকতে পারবেন না। কমিটি ঘোষণার পরদিন একটা মিটিং হয়, আমি সেখানে গিয়ে থাকতে না পারার কথাটা জানিয়েছিলাম। তাঁরা আমাকে বলেছিলেন, থাকেন। কিন্তু আমি পারছি না। নিরাপদ সড়ক চাই নিয়ে আমি ৩২ বছর ধরে কাজ করছি। এই কাজটি করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এখানে বেশি সময় দিতে হয়।’

ইলিয়াস কাঞ্চন
ছবি : সংগৃহীত

কথা প্রসঙ্গে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে ফোন করে চলচ্চিত্রের সার্বিক কল্যাণে একটি কমিটি করার কথা বলা হয়। আমাকে থাকার ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়। আমি তখন বলেছি, কারা কারা থাকবেন, তার বিস্তারিত আমাকে জানতে হবে। তারপর তারা বলল, সব আনুষ্ঠানিকতা কমপ্লিট করে আপনার সঙ্গে এসে দেখা করব। তারপর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলব। হঠাৎ দেখলাম চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট হলো, সেন্সর বোর্ড হলো, জুরিবোর্ড হলো। আমার নাম এল জুরিবোর্ডে। নাম আসার পরদিনই একটা মিটিং ডাকল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। তারপরও ভাবলাম, মিটিংয়ে যাই, আমার কথাগুলো সেখানে গিয়ে নাহয় বলি। আমি ওখানে গেলাম। দেখলাম, সব কমিটির একই সঙ্গে মিটিং।’

ইলিয়াস কাঞ্চন আরও বলেন, ‘এ ধরনের কাজে আমাকে অনেকবার বলা হয়েছে। যাইনি। শিল্পী সমিতির সভাপতি থাকা অবস্থায়ও তো পদাধিকারবলে এসব জায়গায় থাকার সুযোগ ছিল। কিন্তু থাকিনি। এর আগে যাঁরা এ–জাতীয় কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁরাও বলেছিলেন, থাকিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রের মানুষের কল্যাণের জন্য গঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট কমিটির মধ্যে দেখলাম আমার নামটামই নাই, আমাকে যেটার কথা বলেছিল। চলচ্চিত্রের মানুষের কল্যাণে বৃহত্তর কোনো কাজে গঠিত কর্মকাণ্ডে অনেক কষ্ট সত্ত্বেও থাকতে পারলে ভালো লাগত। সবকিছু মিলিয়ে পুরস্কার কমিটিতে থাকাটাকে তাই যুক্তিযুক্ত মনে করিনি।’

ইলিয়াস কাঞ্চন
ছবি: সংগৃহীত

সবশেষে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘পুরস্কারের জুরিবোর্ডে যেকোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তি থাকতে পারেন। এখানে ইলিয়াস কাঞ্চনকে থাকতে হবে বলে আমি মনে করি না।’
১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২৩ প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘জুরিবোর্ড’ পুনর্গঠনের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেখানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (চলচ্চিত্র) সভাপতি করে মোট ১৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এতে সদস্যসচিব হিসেবে রাখা হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র অধিশাখার প্রধান করা হয়।

ইলিয়াস কাঞ্চন ছাড়া জুরিবোর্ডের অন্য সদস্যদের তালিকায় ছিলেন নির্মাতা জাহিদুর রহিম অঞ্জন, সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ, অভিনেত্রী অপি করিম, সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি, চিত্রগ্রাহক বরকত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের সভাপতি এস এম ইমরান হোসেন ও সাংবাদিক ওয়াহিদ সুজন।