মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে ‘কাজলরেখা’, পায়নি বৃহত্তর ময়মনসিংহের কোনো হল
রাত পোহালেই ঈদ। আর এবারের ঈদে মুক্তি পাচ্ছে ১১টি সিনেমা। মুক্তির তালিকায় আছে নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’। লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যের হিরণ্ময় স্মারক ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা, বিশেষ করে গারো পাহাড়ের পাদদেশ থেকে প্রবাহিত হাওরাঞ্চলের জীবনের ১০টি পালা দিয়ে সাজানো হয়েছে এ গীতিকা। এর ‘কাজলরেখা’ গীতিকাব্য অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই গীতিকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ইতিহাস–ঐতিহ্য। সিনেমাটির দৃশ্যধারণের জন্যও নির্মাতা বেছে নিয়েছিলেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর। কিন্তু ঈদে মুক্তির জন্য সিনেমাটি শুধু ময়মনসিংহ শহরে নয়, পায়নি বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের কোনো সিনেমা হল। এই অঞ্চলে ১০টির মতো সিনেমা হল এখনো টিকে আছে। ময়মনসিংহ শহরে রয়েছে ২টি সিনেমা হল।
প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, ‘আসলে এখানে চাপিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই, আমরা চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কেউ তেমন আগ্রহ দেখায়নি। অবশ্যই এই অঞ্চলে মুক্তি দিতে পারলে আমাদের ভালো লাগত। কিন্তু যেহেতু ঈদ, সবাই তো ব্যবসাটা করতে চায়, তাই হয়তো হলমালিকদের পরিকল্পনায় আমরা থাকিনি।’
বিকল্প প্রদর্শনের কোনো ইচ্ছা আছে কি না, জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘আসলে আমি চাই সিনেমা হলেই চলুক। আমাদের সব পরিকল্পনা হলকেন্দ্রিক, তাই বিকল্প ব্যবস্থার আপাতত কোনো ইচ্ছা নেই। আমরা অন্তত তিন সপ্তাহ দেখতে চাই, তারপর বাকি সিদ্ধান্ত।’
ময়মনসিংহ অঞ্চলের ইতিহাস-সংস্কৃতির গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু বকর ছিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই অঞ্চলের সন্তান হিসেবে আমি মনে করি, “মৈমনসিংহ গীতিকা” অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটি এই অঞ্চলের মানুষ বেশি অনুধাবন করতে পারত। এই গীতিকা এই অঞ্চলের অস্তিত্বের ধারক–বাহক। সিনেমাটি এই অঞ্চলে মুক্তি পাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা ছিল কিন্তু সিনেমাটির পুরো ময়মনসিংহ অঞ্চলের কোনো সিনেমা হল না পাওয়া আমার কাছে অস্বাভাবিক লেগেছে।’
প্রায় ৪০০ বছর আগের ‘ময়মনসিং গীতিকা’ অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, সাদিয়া আয়মান, শরীফুল রাজ, খায়রুল বাসার, গাউসুল আলম শাওনসহ আরও অনেকে।