বড় পরিসরে আসছেন প্রান্তর

আগামী মাস থেকে বড় একটা সিনেমার শুটিং শুরু করবেন। বিকেলে তারই রিহার্সাল। চলছে একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং। ভালোবাসা দিবস আর ঈদনাটকের ব্যস্ততাও আছে। এর মধ্যেই গতকাল দুপুরে ফোনে প্রান্তর দস্তিদারকে ধরলেন লতিফুল হক

প্রান্তর দস্তিদার। ছবি: অভিনেতার সৌজন্যে

দুই বছর আগে গৌতম কৈরীর ‘আন্তঃনগর’ দিয়ে শুরু হয়েছিল। এরপর গত বছর কয়েকটি আলোচিত নাটক ও ওটিটির প্রকল্পে তাঁকে দেখা গেছে। তবে বছরের বড় চমকের তখনো বাকি ছিল। ডিসেম্বরে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তারকাবহুল প্রকল্প ‘৮৪০’-তেও ছিলেন প্রান্তর। প্রেক্ষাগৃহ ও টিভিতে মুক্তির পর থেকে ‘৮৪০’-এর ‘সুমন’ চরিত্রের জন্য প্রশংসা ভাসছেন এই তরুণ অভিনেতা। জানালেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই ফারুকীর মতো নির্মাতার সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছেন, এটাই তাঁর কাছে অনেক বড় ব্যাপার।

প্রান্তর দস্তিদার। ছবি: অভিনেতার সৌজন্যে

‘আমার চরিত্রটি নিয়ে সরয়ার ভাই দারুণভাবে ব্রিফ করেছিলেন, আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজটা করতে পেরেছি। যত দিন গেছে, তত সবার চরিত্রের সঙ্গে কানেক্টেড ফিল করেছি। আমি চরিত্রটি খুব মন দিয়ে করতে পেরেছি। এ জন্যই হয়তো দর্শক পছন্দ করেছেন,’ বললেন প্রান্তর। ‘৮৪০’-এর সুমন তরুণ নেতা, বিপ্লবী রাজনৈতিক চিন্তাভাবনায় বিশ্বাসী। একই সঙ্গে সে প্রেমিকও বটে।

দেশে রাজনৈতিক বিদ্রূপাত্মক প্রকল্প খুব বেশি হয় না। তাই কেবল নিজে অভিনয় করেছেন বলে নয়, কনটেন্ট হিসেবেও ৮৪০-এর ভক্ত বনে গেছেন তিনি। ‘কিছু জায়গায় হাস্যরস আছে। তবে তলিয়ে ভাবলে সেটাই আবার ভয়ের সঞ্চার করে,’ বললেন প্রান্তর। ফারুকীর সঙ্গে কাজ এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা মনে করেন তিনি। বলেন, ‘তিনি দুর্দান্ত একজন নির্মাতা ও মানুষ। তাঁর পড়াশোনা, চিন্তাভাবনা ও সৃজনশীলতার সঙ্গে গতি রাখতে হিমশিম খেতে হয়।’

প্রান্তর দস্তিদার। ছবি: অভিনেতার সৌজন্যে

সিনেমা, সিরিজে ব্যস্ততা
গত বছর বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন প্রান্তর। এবারও ভালোবাসা দিবস ও ঈদের কয়েকটি নাটক করেছেন। তবে আপাতত নাটকের কাজ কম করছেন। নিজেই জানালেন, আলোচিত দুই নির্মাতার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দুই প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত তিনি। এর মধ্যে একটি এন রাশেদ চৌধুরীর ‘সখী রঙ্গমালা’। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সিনেমাটির শুটিং আগামী মাসে শুরু হবে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন প্রান্তর। এ সিনেমার জন্যই টানা রিহার্সালের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। ঘোড়ায় চড়াসহ অনেক কিছু রপ্ত করতে হচ্ছে। আশফাক নিপুনের নতুন সিরিজ ‘জিম্মি’র শুটিং করছেন। থ্রিলার ও ডার্ক কমেডি সিরিজটিতে আছেন জয়া আহসান। এ ছাড়া রেজা গালিবের ‘মস্ত বড়লোক’ সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন।

‘এ সিনেমার চরিত্রটা আমার এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে পছন্দের। তবে পর্দায় ঠিকঠাক চরিত্রটি ধারণ করতে জান বেরিয়ে গেছে। ওজন কমিয়েছি, নিজের চিন্তাভাবনাকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে হয়েছে, যেখানে জীবন স্বাভাবিক থাকবে না। কাজটা বাচ্চাদের জন্য; কিন্তু বড়দের দেখার মতো গভীরতা গল্পে আছে। এ বছরই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে পারে,’ বললেন প্রান্তর। তিনি মনে করেন, এন রাশেদ চৌধুরী, আশফাক নিপুন ও রেজা গালিবের সঙ্গে তিনটি কাজ হয়তো তাঁর ক্যারিয়ারের গতিপথ বদলে দিতে পারে।

নির্মাণের কী হবে
নাটক, সিরিজ আর সিনেমায় অভিনয় নিয়ে এখন ব্যস্ত থাকলেও আদতে ক্যামেরার পেছনে থাকতে চেয়েছিলেন প্রান্তর। চিত্রনাট্য লেখা, পরিচালনা বা নির্বাহী প্রযোজকের কাজ নিয়ে বেশি আগ্রহ ছিল।

প্রান্তর ও নেতা। কবির হোসেন

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে সে পথেই যাচ্ছিলেন; কিন্তু ‘আন্তঃনগর’-এ অভিনয়ের জন্য ডাক পাওয়ার পর আপাতত শীতঘুমে আছে সেই স্বপ্ন। তবে জানিয়ে রাখলেন, ক্যারিয়ারের আরও পরের দিকে লেখালেখি বা নির্মাণে ফিরবেন। প্রান্তর মনে করেন, দীর্ঘদিন ক্যামেরার পেছনে কাজের অভিজ্ঞতা তাঁকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

প্রান্তরের স্ত্রী নিদ্রা নেহাও অভিনয়ের মানুষ। চরকির অ্যানথোলজি সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’-এ তাঁর অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে। জানালেন, ঘরেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আরেকজন থাকায় বাড়তি সুবিধার কথা। ‘কাজের প্রতি নিদ্রার নিবেদন অভিনয় নিয়ে আমাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। ও আমার বড় প্রেরণা,’ বলেন প্রান্তর।