চালু হচ্ছে পরিচালক সমিতির পুরস্কার
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হবে। ‘এটিএন-বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ড–২০২২’ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর। ২৪ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালক সমিতির অফিসে পেনড্রাইভ বা ডিভিডিতে ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা জমা দেওয়া যাবে। দুটি জুরিবোর্ড বিভিন্ন ক্যাটাগরির পুরস্কার নির্ধারণ করবে। আজ শনিবার দুপুরে এফডিসিতে এই পুরস্কারের লোগো, ক্রেস্ট উন্মোচন ও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
১৯৮১ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি গঠিত হয়। ৪২ বছরের এই সমিতির নামে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে পুরস্কার অনুষ্ঠানের। এফডিসিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিয়ে বিস্তারিত জানান পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহিন সুমন, ‘আমরা এমনভাবে এটি শুরু করছি, যেন অসংখ্য পুরস্কারের ভিড়ে এই পুরস্কার হারিয়ে না যায়, পুরস্কার যেন তিরস্কারে রূপান্তরিত হতে না পারে। এই পুরস্কার যেন স্বতন্ত্র একটি বৈশিষ্ট্য, স্বতন্ত্র একটি ধারা তৈরি করতে পারে, মর্যাদা তৈরি করতে পারে। এ জন্য আমরা যেন খুবই স্বচ্ছভাবে এটি প্রদান করতে পারি।’
শাহিন সুমন জানান, দুটি আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ পুরুষ ও নারী ক্যাটাগরিতে ২২টি শাখায় এই পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কার দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত দুটি জুরিবোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরে এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে পুরস্কারের লোগো, ক্রেস্ট উন্মোচন করেন অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক সোহেল রানা।
সোহেল রানা বলেন, ‘এটি চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাহসী উদ্যোগ। এ কাজটি শুরু করতে সহযোগিতা করার জন্য এটিএন বাংলাকে ধন্যবাদ জানাই। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার বহুদিনের পরিচয়। আমি যখন সিনেমা বানাতাম তখন থেকেই। তাই আমি তাঁকে অনুরোধ করব, অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটির জন্য যেমন সহযোগিতা করছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করবেন।’
পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, ‘এর আগে একবার চলচ্চিত্র সমিতির এক মিটিংয়ে পরিচালক সমিতির পুরস্কার প্রবর্তন করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু অনেকে বলেছিলেন, এই পুরস্কারের স্বচ্ছতা থাকবে না। পরে আর হয়নি। অনেক দিন পরে হলেও এবার শুরু করতে পারছি। আমি কথা দিলাম, পুরস্কার বাছাইয়ে কোনো বিতর্ক হবে না, শতভাগ স্বচ্ছতা নিয়েই পুরস্কার প্রদান করা হবে।’
কাজী হায়াৎ আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে বড় বড় পুরস্কারও কোনো না কোনোভাবে বিতর্কের মুখে পড়েছে। বিখ্যাত নোবেল পুরস্কার নিয়েও প্রতিবছরই কোনো না কোনোভাবে বিতর্ক হয়।’
সাবেক প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম বলেন, ‘পৃথিবীতে মর্যাদার দিক থেকে অস্কার পুরস্কারকে প্রথম ধরা হয়। এরপর কান। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জাতীয় পুরস্কারের পর যেন এই পুরস্কারকে মূল্যায়ন করা যায়। সেই প্রত্যাশায় থাকবে আয়োজকদের কাছে।’
পুরস্কার অনুষ্ঠানটির আহ্বায়ক শাহিন কবির বলেন, ‘চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির আয়োজনে এই পুরস্কার প্রবর্তন চলচ্চিত্রের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে। এখন থেকে যেন প্রতিবছরই নিয়মিতভাবে এই অনুষ্ঠান হতে পারে, সেই চেষ্টায় থাকবে আমাদের। তা ছাড়া এই পুরস্কার ভালো সিনেমা নির্মাণে তাগিদ তৈরি করবে।’
এফডিসিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন চিত্রনায়ক ইমন ও সাইমন। অনুষ্ঠানে পরিচালকদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সোহানুর রহমান, মুশফিকুর রহমান, জাকির হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, অপূর্ব রানা প্রমুখ। শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, বাপ্পারাজ, নিপুণ আক্তার, নিরব।