২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

১৩ বছর বয়সী কাজলরেখা, কতটা পেরেছেন সাদিয়া

সাদিয়া আয়মানছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

রোববার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র জগৎ নামে একটি পেজে ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ‘কাজলরেখা’ সিনেমাটি দেখে ছোট কাজলরেখা চরিত্রের সাদিয়া আয়মানকে নিয়ে রিভিউ দিয়েছেন একজন। তার একাংশে তিনি লিখেছেন, ‘কাজলরেখা’ ছবির মূল চরিত্রের একটি অংশে সাদিয়া আয়মান চরিত্রকে ধারণ করে অভিনয় করেছেন। তাঁর মেকআপ ছিল দেখার মতো। গিয়াস উদ্দিন সেলিম তাঁকে একদম নিষ্পাপ চেহারায় তুলে ধরেছেন। সাদিয়া সেটাকে ধারণ করতে পেরেছেন।’

আরেকাংশে লিখেছেন, ‘গল্পে বনবাসে যাওয়ার সময় তার কান্নাজড়িত গানের এক্সপ্রেশন মনে দাগ কাটে। সরলতার জন্য পরিণতি ভোগের সময় অসহায়ত্বের অভিনয় দারুণ করেছেন সাদিয়া।’

ছবিটিতে ছোটবেলার; অর্থাৎ ১৩ বছর বয়সী কাজলরেখার চরিত্রটি করেছেন সাদিয়া আয়মান। আর এই ছবি দিয়েই বড় পর্দায় পা রাখলেন ছোট পর্দার নিয়মিত এই অভিনেত্রী। তাঁকে নিয়ে এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করছেন আরও অনেকেই।

সাদিয়া আয়মান
ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

এ তো গেল দর্শকের প্রতিক্রিয়া, কিন্তু বড় পর্দায় নিজেকে প্রথম দেখে কেমন লেগেছে সাদিয়ার। এ ব্যাপারে এই নবাগত জানালেন, মুক্তির প্রথম দিন বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবির টিমের সঙ্গে দুপুরে শো দেখেছেন তিনি। বলেন, ‘বড় পর্দার প্রথম কাজ। মুক্তির আগে আগে স্বাভাবিকই ছিলাম। ঈদের দিন ছবিটি দেখার জন্য যখন বাসা থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন ভয় ভয় লাগছিল। ছবিটিতে আমার প্রথম তিনটি দৃশ্যে কোনো সংলাপ ছিল না। শুধুই এক্সপ্রেশন ছিল। কিন্তু প্রথম দৃশ্য দেখেই নিজের ভালো লাগা কাজ করেছে। আস্তে আস্তে আমার অন্য দৃশ্যগুলো যখন এল, দেখলাম আশপাশে দর্শকের প্রতিক্রিয়া বেশ ভালো। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কিছু দৃশ্য দেখে আমি নিজেই কনফিউজড হয়েছি। দৃশ্যগুলো এত সুন্দরভাবে এসেছে। মনে হয়েছে, এই দৃশ্যগুলো কখন করলাম শুটিংয়ে? নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছিল না।’

সাদিয়া আরও বলেন, ‘মুক্তির পর থেকে ফেসবুকে অনেকগুলো রিভিউ পেয়েছি। এত এত প্রশংসা পাচ্ছি। তা ছাড়া আমার কাছের, এমনকি অপরিচিতরাও ফেসবুক ইনবক্স, ফোন মেসেজে  প্রশংসা করছেন। এসব দেখে আমার মনটা ভরে গেছে। আমি আরও ভালো ভালো সিনেমায় কাজের সাহস পাচ্ছি।’

মুক্তির আগে ছবিটি নিয়ে কিছুটা ভয়েও ছিলেন এই অভিনেত্রী। কারণ, চরিত্রটি তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। একদিকে প্রায় ৪০০ বছর আগের ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র গল্প, অন্যদিকে বিখ্যাত কাজলরেখা চরিত্রটি। তা ছাড়া মুক্তির আগে আগে ছবিটির প্রোমোশনেরও ঘাটতি ছিল।

সিনেমার দৃশ্যে
সংগৃহীত

সাদিয়া বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ বলতে আমি বলছি, ২০২২ সালে ছবিটির শুটিং শুরু। তখনো আমার নাটকে অভিষেক হয়নি। অভিনয়ে আমি একেবারেই নতুন। পর্দায় আমাকে কীভাবে নেবেন দর্শক। অন্যদিকে প্রোমোশন ভালোভাবে হয়নি। এসব নিয়েই খুবই টেনশনে ছিলাম। তবে যা করেছি, পুরোটাই পরিচালক সেলিম ভাইয়ের অবদান। বাস্তবে আমার বয়স যা, তা থেকে প্রায় ১০ বছর কমিয়ে ছবিতে কাজলরেখা চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি, এটাই আমার প্রথম সিনেমায় সার্থকতা।’

সিনেমার এই নবাগত মনে করেন, ‘মুক্তির সময় ছবিটি হল কম পেয়েছে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, আলোচনা বাড়ছে, প্রশংসা বাড়ছে। দর্শক ছবিটি দেখতে আগ্রহী হচ্ছেন। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আস্তে আস্তে ছবিটি আরও শক্তিশালী হয়ে দর্শকের মাঝে ছড়িয়ে যেতে পারে।’

অভিষেকেই দর্শক আলোচনায় বাজিমাত সাদিয়ার। তাহলে এখন থেকে কি নিয়মিত সিনেমায় দেখা যাবে তাঁকে, এমন প্রশ্নে এই অভিনেত্রীর উত্তর, ‘অবশ্যই কাজ করব। আমি বড় পর্দা, ছোট পর্দা আলাদা করে দেখছি না। শুধু দেখছি গল্প, চরিত্র ও পরিচালক। কারণ, ঠিকঠাক গল্প, চরিত্রে ও ভালো পরিচালকের সঙ্গে কাজ সহজ হয়, ভালো হয়। কাজ করে আরাম পাই। দশটা নয়, এভাবে বছরে একটা কাজই আমার জন্য যথেষ্ট।’

‘কাজলরেখা’ সিনেমার লুকে সাদিয়া
সংগৃহীত

প্রায় ৪০০ বছর আগের বাংলার লোককাহিনি ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র ‘কাজলরেখা’ অবলম্বনে এটি নির্মাণ করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। এতে আরও অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজ, মন্দিরা চক্রবর্তী, রাফিয়াত রশীদ মিথিলা, ইরেশ যাকের, আজাদ আবুল কালাম, খায়রুল বাশার, ঝুনা চৌধুরী, সাহানা সুমী প্রমুখ।