সাকলায়েনের জন্য খারাপ লাগছে, সাক্ষাৎকারে পরীমনি

পরীমনি-কাণ্ডে চাকরি হারাচ্ছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার ও বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম সাকলায়েন। এ নিয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় পরীমনির সঙ্গে। কথাপ্রসঙ্গে যা জানা গেল, তা-ই তুলে ধরেছেন মনজুর কাদের

প্রথম আলো :

চাকরি হারাচ্ছেন এডিসি সাকলায়েন, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য আছে?

পরীমনি: আমি বা সাকলায়েন বলার আগে তো পাবলিকই এটা নিয়ে বলছে। প্রশাসনও এটা নিয়ে বলছে। এটা কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে এখনো আসেনি, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যদি আসে, তখন আমি কথা বলব। এখনো মনে হয় না আমার কোনো কথা বলার দরকার আছে।

আরও পড়ুন

প্রথম আলো :

চাকরি হারানোর বিষয়ে উঠে এল অনৈতিক সম্পর্কের কথা...

পরীমনি: বলতে গেলে তো অনেক কথাই আসবে। আমার জীবনের ২৭ দিন বা জেলজীবন, বাসা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া থেকে শুরু করে, বাসায় আসা পর্যন্ত কোনো কিছু নিয়ে আজ পর্যন্ত কারও সামনে কথা বলিনি। ২৭ দিনের ঘটনার কথা কোথাও ২৭ সেকেন্ডও বলিনি। কারণ, আমার মনে হয়নি, কিছু বলার জন্য এত দিন বাধ্যও ছিলাম। আমি সবকিছু শুধু দেখছি। বলতে গেলে তো, অল্প কথায় সব বলা যাবে না। বললে, পুরো ঘটনা নিয়ে বলতে হবে। পুরোটা বলার মতো পরিস্থিতি আমার এখনো আসেনি। যখন আসবে তখন অবশ্যই বলব। যদি কোনো কিছু নিয়ে আমাকে দোষী করা হয়, তখন অবশ্যই বলব। তা ছাড়া সম্পর্কের বিষয় যদি আসে, এটা তো একজনের ব্যাপার না, দুজনের পক্ষ থেকেই আসে। এখন পর্যন্তও আমাদের সম্পর্কটা তো মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়। আমরা প্রেমে ছিলাম, নাকি কী করছি, কোনো কিছুই তো পরিষ্কার নয়। এটা না সাকলায়েনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, না আমার কাছে। সবখানে মনগড়া জিনিস লেখা হয়েছে, জানাজানি হয়েছে। এটা যদি ঠিকঠাকভাবে জানতে হয়, দুই পক্ষ থেকেই জানতে হবে। যেহেতু তার বিষয়েও আমি এখন পর্যন্ত কিছু বলিনি, আমার বলার মতো পরিস্থিতি আসেও নাই বা আমি কোনো রকম বাধ্যও হইনি। তবে যদি এ রকম মনে হয়, আমাকে নিয়ে কথা বলছে, আমাকে অপরাধী বানাচ্ছে, তারপর আমি কথা বলব। আমার মনে হয় না, সে কোনোরকম এ ধরনের কথা বলবে। কারণ, পুরো বিষয়টির মধ্যেই আমি নেই। কারও হয়তো কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে সাকলায়েনের সঙ্গে এমনটা হচ্ছে, এটা হলে সে দোষ তো আর আমি নেব না।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম সাকলায়েন ও নায়িকা পরীমনি
ফাইল ছবি
আরও পড়ুন

প্রথম আলো :

আপনাকে যদি এখন জিজ্ঞেস করি, সাকলায়েন এবং আপনার মধ্যে সম্পর্কটা আসলে কী ছিল?

পরীমনি: না, এই সম্পর্কটা কী, তা নিয়ে তো কেউ এর আগে কিছু জিজ্ঞেস করেনি। তার আগেই তো এত অপবাদ, এত কিছু...। যেখানে সম্পর্কটা ডিফাইন করার আগে এত অপবাদ নিয়ে ফেলছি, সেখানে এই সম্পর্কটা কী, তা নিয়ে কথা বলার জায়গাও তো জনগণ রাখেনি। আমার মনে হয় না এটার আর কোনো দরকার আছে, যেটা নিয়ে এগোনো যাবে। যেমন আছে না, কোনো একটা প্যাঁচ লাগছে, প্যাঁচটা খুলি। এখানে প্যাঁচ লাগারও কিছু নেই, খোলারও কিছু নেই—তাই শুধু শুধু কেন কথা বলব। আমার শুধু মনে হয়, সাকলায়েন ব্যক্তিগত আক্রোশের মধ্যে পড়েছে।

আরও পড়ুন

প্রথম আলো :

সাকলায়েনের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী, তা নিয়ে কোথাও আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করেনি?

পরীমনি: এটাও তো বলব না। এই সবকিছুই ২৭ দিনের মধ্যে পড়ে। আমাকে রিমান্ডে কী করেছে, এটাও কেউ কখনো জানতে চায়নি। তাই আমি এটা নিয়েও কথা বলব না। আমি জানি না, যখন বলব তখন যে কী হবে। তবে সাকলায়েনের জন্য খারাপ লাগছে, সে ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার! প্রেম-ভালোবাসা যা-ই হোক না কেন, এটা শুধু একটা অদ্ভুত কারণ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। আবারও বলছি, আমার মনে হয়, সে অন্য কোথাও ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার।

আরও পড়ুন
পরীমনি
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলো :

কার ব্যক্তিগত আক্রোশ মনে হয়?

পরীমনি: আমি জানি না। তবে অবশ্যই ব্যক্তিগত আক্রোশ...কিন্তু এমনটা নয়, প্রেম-ভালোবাসা ও সম্পর্কের কারণে হয়েছে, তা আমি বিশ্বাস করি না। সাধারণত যে ট্যালেন্ট, সফল হয়—তার পেছনে অনেকেই লেগে থাকে। এটা নতুন কিছু না। নিঃসন্দেহে সাকলায়েন একজন ট্যালেন্ট ও সফল মানুষ, ওর পেছনেও অনেকে হয়তো লেগেছিল। তার এখনকার বরখাস্ত হওয়ার ব্যাপারটা খুবই অদ্ভুত। এটা খুবই অন্যায় হয়েছে। সাকলায়েনের প্রতি নিঃসন্দেহে অন্যায় হয়েছে।

প্রথম আলো :

কেন মনে হলো অন্যায় হয়েছে?

পরীমনি: যদি আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্কের কারণে এমনটা হয়েছে বলা হয়, তা তো নিঃসন্দেহে অন্যায়। কোনো সম্পর্কের জন্য এটা হতেই পারে না। তবে আমাদের সম্পর্কটা কেমন, কতটুকু আগাইছে, কী আগাইছে, কোথায় থেমেছে এই সম্পর্ক—কিছুই বলতে পারব না। কিছু বলার আগে এত বেশি দোষ আসলে ঘাড়ে নিয়ে ফেলছি, তাই এখন বলার ইচ্ছাও নেই।

মো. গোলাম সাকলায়েন
সংগৃহীত

প্রথম আলো :

দোষ কি আপনি একাই নিয়েছেন?

পরীমনি: আমিও নিয়েছি, সাকলায়েনও নিয়েছে। সবাই না জেনে, না বুঝে আমাদের দোষ দিয়েছে। একটা সম্পর্ক নিয়ে এত দোষারোপ হবে, এটা তো বুঝতেই পারিনি।