আমার বাসায় ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি হয়েছে: ওমর সানী
চুরির ঘটনার ১৩ দিনের মাথায় এবার বাসায় ডাকাতি হয়েছে বলে জানালেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার সময় বাসায় ঢুকে ডাকাতির বিষয়টি টের পান বলে জানালেন ওমর সানী। প্রথম আলোকে আজ সোমবার সকালে ডাকাতির খবরটি জানান একসময়ের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক।
ওমর সানী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এইচ ব্লকের একটি বাড়িতে থাকেন। একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা স্ত্রী মৌসুমী বছরখানেকের বেশি সময় ধরে মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে আছেন। বসুন্ধরার এই বাসায় সানীর সঙ্গে তাঁর এক সহকারী থাকেন। ছেলে ফারদীন এহসান স্বাধীন থাকেন দুবাইয়ে।
ওমর সানী আজ প্রথম আলোকে বললেন, ‘প্রয়োজনীয় কাজে আমি বাসার বাইরে ছিলাম। রাত ১২টার পর ঘরের মেইন গেট দিয়ে ঢুকে দেখি বেডরুমে ঢুকতে পারছি না। ভেতর থেকে বন্ধ। বেডরুমের চাবিটাও আবার ভেতরে ছিল। নানাভাবে চেষ্টার পর যখন ব্যর্থ হলাম, তখন বাড়ির কেয়ারটেকার ও আমার ম্যানেজারকে বিকল্প উপায়ে বেডরুমে ঢুকতে বলি। তারা বাইরে দিয়ে বারান্দা গিয়ে দেখতে পায়, সেখানকার দরজার গ্লাস ভাঙা। এরপর বেডরুমে ঢুকে দেখে ভেতর থেকে ছিটকিনি আটকানো। রুমের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে বেশ কয়েকজন এসেছিল। ছিটকিনি খোলার পর বেডরুমে ঢুকে দেখি, অনেক প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নেই। এর মধ্যে দুই কোটি টাকা প্রতারণার একটি মামলার ডকুমেন্টও যেমন আছে, তেমনি একটি আইফোন এবং আমার মেয়ের ছোটবেলার উপহারের কিছু স্বর্ণালংকারও ছিল।’
দুপুর ১২টায় যখন ওমর সানীর সঙ্গে কথা হয়, তখন তিনি ভাটারা থানায়। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মামলার।
তিনি বললেন, ‘আমার ছেলে ফারদিন ব্যবসা করতে গিয়ে দুই কোটি টাকা প্রতারণা শিকার হয়েছিল। এ নিয়ে একটি মামলা চলছিল। সামনে এই মামলার রায় ঘোষণার কথা। এর মধ্যে আমার বাসা থেকে অন্যসব জিনিসের পাশাপাশি মামলার অরিজিনাল সব ডকুমেন্ট নিয়ে গেছে! বেডরুমে একটি দামি ল্যাপটপও ছিল, তা কিন্তু নিয়ে যায়নি। তার মানে এটা নিশ্চিত, যারা এসেছিল, তাদের টার্গেটই ছিল মামলার অরিজিনাল ডকুমেন্ট নিয়ে যাওয়া। আমি সত্যিই হতবাক এমন ঘটনায়। বারবার মনে হচ্ছিল, এমনটা তো শুধু ফিল্মে সম্ভব। আমি আমার বাড়িতে ফিল্মি স্টাইলে এমন ডাকাতির নজির দেখলাম! তবে এটা তো ঠিক, আমার আইনজীবীর কাছে তো মামলার সব ডকুমেন্ট আছে। আমাকে অযথা হয়রানি করা ছাড়া আর কিছুই না। আমি এত সহজে দমে যাওয়ার মানুষ নই। জন্মেছি যখন মরব, আমি এসবের শেষ দেখেই ছাড়ব। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল সবাইকে বিষয়টি জানিয়েছি। ভাটারা থানায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মৌসুমী ও ওমর সানী দম্পতির ছেলে ফারদিন এহসান বিট কয়েন ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে এক ব্যক্তির সঙ্গে দুই কোটি পাঁচ লাখ টাকার লেনদেন করে প্রতারিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বলে গত বছরের আগস্টে জানান। ছেলের প্রতারিত হওয়ার সেই ঘটনা ফেসবুকে শেয়ার করে গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলেন ওমর সানী।
ফারদিন তখন দাবি করেন, ২০২২ সালের মাঝামাঝি নিশাত বিন জিয়া রুম্মান নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। পরিচয়ের চার মাস পর সেই ব্যক্তি তাঁর ব্যবসায়ের কথা বলে ফারদিনের কাছ থেকে পুঁজি হিসেবে টাকা ধার নেন। কয়েক ধাপে ফারদিন তাঁকে মোট ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন। ওমর সানী-মৌসুমী দম্পতির তখন এও জানান, এ টাকাগুলো তিনি তাঁকে দিয়েছেন বিট কয়েন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন, নিশাত নামে সেই ব্যক্তির কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, এমনকি নেই ব্যবসায়ের বৈধ ট্রেড লাইসেন্সও। এরপর তাঁর কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান।