মান্না–মৌসুমীর কোটি টাকার সেই সিনেমা কত আয় করেছিল
মান্না-মৌসুমীর আলোচিত একটি ছবি ‘কষ্ট’, মুক্তি পায় ২০০০ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ১৭ মার্চ। ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া এই ছবি পরিচালনা করেন কাজী হায়াৎ। শূন্য দশকের এই ছবি তখন প্রায় কোটি টাকা বাজেটে তৈরি হয়। অমি বনি কথাচিত্রের এই ছবি তখনই তিন কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করেছে। ছবি মুক্তির ২৫ বছর সামনে রেখে প্রথম আলোর সঙ্গে এসব তথ্য শেয়ার করলেন পরিচালক কাজী হায়াৎ।
‘কষ্ট’ সিনেমায় মান্নার অভিনীত চরিত্রের নাম মুসা। মৌসুমীর চরিত্রের নাম মিতু। ছবিতে মান্নার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন কাজী হায়াৎ। সিনেমার গল্পে উঠে আসে মুসার পরিবারের অর্থকষ্টের নানা দিক। প্যারালাইসিস হয়ে মারা যান তার বাবা। অভাবের সংসার চালাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মুসার মা। বাবা-মায়ের চরিত্রটি স্বল্প সময়ের হলেও তা দর্শকহৃদয় স্পর্শ করেছে। তবে পরিচালক কাজী হায়াৎ জানালেন, তিনি ছবির এই চরিত্রে প্রথমে অভিনয় করতে চাননি। এই চরিত্রের জন্য মানানসই কাউকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজতে থাকেন। পছন্দসই কাউকে না পাওয়ায় অবশেষে নিজেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। কাজী হায়াৎ বলেন, ‘তখন আবার আমি অভিনয়ে নিয়মিত ছিলাম না। মাঝেমধ্যে কোনো চরিত্রে জুতসই কাউকে না পেলে অভিনয় করতাম। এ সিনেমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল, নির্মাণের আগে দীর্ঘ সময় ধরে মান্নার বাবা চরিত্রে কাউকে না পেয়ে বাধ্য হয়ে অভিনয় করেছিলাম।’
‘কষ্ট’ সিনেমার শুটিংয়ের আগে মান্না ও মৌসুমীকে নিয়ে একাধিকবার আলোচনায় বসেছিলেন পরিচালক কাজী হায়াৎ। তাঁদের কাছে পরিচালকের চাওয়া ছিল, অভিনয়ে এমন কিছু যুক্ত করতে, যা তাঁরা দুজন এর আগে কখনো করেননি। ২৫ বছরে এসে এই পরিচালকও জানালেন, মান্না ও মৌসুমী তাঁদের কথা রেখেছিলেন। অভিনয়ে যেমনটা চেয়েছিলেন, তার চেয়েও ভালো করেছিলেন। কাজী হায়াৎ বললেন, ‘শুধু মান্না-মৌসুমী নয়, এই ছবির অন্য অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে শাকিল খান, আনোয়ার হোসেন, ডিপজলও যেন সবাইকে সবাই ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।’
‘কষ্ট’ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। মুক্তির পর এই সিনেমার গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়। কুমার বিশ্বজিৎ ও কনক চাঁপার কণ্ঠে ‘তোমার প্রেমের জন্য’ এবং জেমসের কণ্ঠে ‘মা’ এই সিনেমার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখনো অনেকে কাজী হায়াৎকে ফোন করে ছবির গানের প্রশংসা করেন। কাজী হায়াৎ বলেন, ‘সেদিন একজনের ফোনে কুমার বিশ্বজিৎ ও কনকচাঁপার গাওয়া গানটা শুনলাম, তাৎক্ষণিকভাবে মনে করতে পারিনি, এটি আমার কোন সিনেমার গান। এত বছর পরও আমার ছবির গান মানুষ শুনছেন, এটা নিঃসন্দেহে দারুণ অনুভূতি।’