হিন্দি সিনেমা আমদানি না করলে হল বন্ধ করার হুমকি
শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে হিন্দি সিনেমা আমদানির প্রশ্নে একমত হয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রযোজক, প্রেক্ষাগৃহের মালিক, পরিচালক, অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ১৯টি সংগঠনের নেতারা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী হাছান মাহমুদকে জানিয়েছেন, হিন্দি সিনেমা আমদানির ব্যাপারে তাঁদের আপত্তি নেই। হিন্দি সিনেমা আমদানিসহ চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করে ১৯ সংগঠনের মোর্চা সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ। তবে এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি মন্ত্রণালয়। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি ঘোষণা দিয়েছে, হিন্দি সিনেমা না এলে হল বন্ধ করে দেবে তারা। আজ রাজধানীর ইস্কাটনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা জানান, হিন্দি ছবি না চালাতে দিলে এখন আর হল চালু রাখার উপায় দেখছেন না তাঁরা। সিনেমা হল চালু রাখার আর কোনো বাস্তব যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই হল বন্ধ করে দেওয়াই ভালো হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, যেকোনো দিন দেশের সব সিঙ্গেল স্ক্রিন বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি ও হলমালিকেরা।
এর আগে ‘পাঠান’ মুক্তি দেওয়ার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন নির্মাতা-প্রযোজক-পরিবেশক অনন্য মামুন। বিষয়টি নিয়ে সিনেমা-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর মতামত জানতে চায় মন্ত্রণালয়। সমিতিগুলোও সবুজ সংকেত দিলেও মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।
হল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা আর পারছি না। উপমহাদেশের সিনেমা না এলে হল বাঁচানো সম্ভব হবে না। মন্ত্রণালয় থেকে মৌখিকভাবে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরও হিন্দি ছবি আনার লিখিত ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি। “হাওয়া”, “পরাণ” ছাড়া গত বছর সেভাবে তেমন কোনো সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে ব্যবসা করেনি। এভাবে চলতে থাকলে দেখবেন, একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে হলগুলোর বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরেন লায়ন সিনেমাসের মালিক মির্জা আবদুল খালেক। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পথে বসে যেতে হবে। গত ১০ মাসে আমাদের হলে ৪০টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এসব সিনেমা মোট ৫৩ হাজার দর্শক হলে আনতে পেরেছে। তার মধ্যে “হাওয়া” ও “পরাণ” দেখেছেন ৩৬ হাজার দর্শক। অন্য সিনেমাগুলোর অবস্থা খারাপ।
গতকাল একটা সরকারি অনুদানের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেটি মাত্র ১২ জন দর্শক দেখেছেন। এমনভাবে চলতে থাকলে কীভাবে হবে?’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন, উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সহসাধারণ সম্পাদক মো. খুরশিদ আলম প্রমুখ। তাঁদের সম্মিলিত দাবি, বছরে ১০টি ভারতীয় ছবি আমদানির চূড়ান্ত অনুমতি না দিলে হলগুলো একে একে বন্ধ করে দেওয়া হবে।