সীমান্তবর্তী এলাকার কিছু মানুষের জীবনচক্র নিয়ে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র ‘বর্ডার’। পূর্ণদৈর্ঘ্য এ চলচ্চিত্র গত ২২ আগস্ট বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা দেখেন। তখন সেন্সর বোর্ড সদস্যরা ছবিটি দেখে ছাড়পত্র দেননি। ৪ সেপ্টেম্বর এক চিঠির মাধ্যমে ছবির পরিচালক ও প্রযোজককে জানিয়ে দেওয়া হয়, ছবিটি প্রদর্শনের অযোগ্য। ছবির অনেক জায়গায় সেন্সর নীতিমালার অসংগতির বিষয় চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অসংগতির কথা উল্লেখ করা হলেও চাইলে ছবির প্রযোজক ও পরিচালক এক মাসের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেন্সর বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে আপিল করতে পারবেন। আপিল না করলেও সেন্সর বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী রিভাইস ভার্সন করে আবারও ছবিটি সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া যাবে।
সেন্সর বোর্ড সেক্রেটারি মমিনুল হক প্রথম আলোকে জানান, সেন্সর বোর্ড সদস্যরা ছবিটি দেখেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সেন্সর নীতিমালায় পুরোপুরি সিনেমাটি তৈরি করা হয়নি। দেখার পর কয়েক দিন সময় নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ছবিটি প্রদর্শনের অযোগ্য। তিনি বলেন, ‘ছবির যেসব জায়গায় সেন্সর নীতিমালায় সমস্যা মনে করা হয়েছে, পয়েন্ট আকারে চিঠিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বিজিবি কাজ করে, কিন্তু বর্ডার ছবিতে পুলিশকে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ছবিতে সাতক্ষীরা অঞ্চলের একজন গডফাদার দেখানো হয়েছে, যার কাছে মন্ত্রী-এমপি সবাই জিম্মি থাকেন—বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি নেই। তৃতীয়ত, বর্ডার ছবিতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে—যা সেন্সর নীতিমালার পরিপন্থী। এর বাইরে ছবিটিতে আরও ছোট ছোট বেশ কয়েকটি অসংগতি রয়েছে।’
মমিনুল হক জানালেন, এক মাসের মধ্যে তথ্যসচিব বরাবর আপিলের সুযোগ আছে। সেটি না করলে, চিহ্নিত পয়েন্টগুলো নীতিমালা অনুযায়ী রিভাইস ভার্সন, মানে দৃশ্য সংযোজন–বিয়োজন করে নতুন করে আবার সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া যাবে ছবিটি।
এ দিকে সেন্সর বোর্ড থেকে ছবি অযোগ্য ঘোষণার সেই চিঠি হাতে পেয়েছেন বলে জানালেন ছবির পরিচালক সৈকত নাসির। তিনি বলেন, ‘১ সেপ্টেম্বরের ইস্যু করা চিঠি পেয়েছি। যে অবস্থায় ছবিটি আছে, তাতে সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা প্রদর্শনের অযোগ্য বলেছেন। ছবির যেসব জায়গা ধরে অযোগ্য বলা হয়েছে, সেসব জায়গা নিয়ে কাজ করছি।’ সেন্সর বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না জানতে চাইলে সৈকত নাসির বলেন, ‘না, আপিলে যাব না। চিহ্নিত জায়গাগুলো ঠিক করার কাজ শুরু করেছি। প্রয়োজনে কিছু দৃশ্য কাটছাঁট করব। পাশাপাশি কিছু জায়গায় নতুন করে আবার শুটিং করব। সেন্সর বোর্ডের নিয়ম মেনে আগামী ১ অক্টোবর সেন্সর বোর্ডে আবার জমা দেব ছবিটি।’
‘বর্ডার’ ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন আসাদ জামান। এতে অভিনয় করেছেন আশীষ খন্দকার, সুমন ফারুক, সানজু জন, অধরা খান, রাশেদ মামুন অপু, মৌমিতা মৌ, শাহিন মৃধাসহ অনেকে।