নির্মলেন্দু গুণের কবিতা থেকে ‘নয়া মানুষ’ সিনেমার গান

‘নয়া মানুষ’ ছবির জন্য কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘পুরো মানুষের গান’ কবিতাটিতে সুর দিয়েছেন বেলাল খানকোলাজ

আবারও কবিতা থেকে গান হলো। ‘নয়া মানুষ’ ছবির জন্য কবিতা থেকে একটি গান বানানো হয়েছে। কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ কাব্যগ্রন্থের ‘পুরো মানুষের গান’ কবিতাটিতে সুর দিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সুরকার বেলাল খান। গানটি গেয়েছেনও তিনি। সংগীতায়োজনে শোভন রয়।
আ মা ম হাসানুজ্জামানের ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে ‘নয়া মানুষ’। নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গানটি নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘এই কঠিন কবিতার বাণীকে সুরের শিকলে বাঁধা কঠিন। কঠিন কাজটি করার জন্য সুরকার, কণ্ঠশিল্পী, চলচ্চিত্রটির নির্মাতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। গানটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।’
সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী বেলাল খানের ভাষ্য, ‘কবিতাকে গানে রূপ দেওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল আমার জন্য। তবে আমি খুব আনন্দিত এই কারণে যে কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা দিয়ে অদ্ভুত সুন্দর একটা সুর তৈরি করতে পেরেছি এবং আমি পরিতৃপ্ত। আমার বিশ্বাস, গানটি মানুষ অনেক দিন মনে রাখবে।’

‘নয়া মানুষ’ সিনেমার নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, ‘কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মাসুদ পথিক দাদার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে কবি নির্মলেন্দু গুণ দাদার সঙ্গে মেশার সুযোগ পাই। একদিন তাঁকে জানালাম, আমার প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গানের কথা প্রয়োজন, বিষয়বস্তু জেনে দাদা “পুরো মানুষের গান” কবিতাটি আমাকে দিয়ে বললেন, “প্রথম দুটি স্তবক থেকে গানটা করতে পারো, খুব ভালো হবে তোমার ছবির থিম সং।” তিনি যে ভালোবাসা “নয়া মানুষ” চলচ্চিত্রকে দিলেন, তা আমাদের টিমকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছে।’

‘নয়া মানুষ’ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন মাসুম রেজা। ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, স্মরণ সাহা, শিখা কর্মকার, মাহিন রহমান, মেহারান সানজানা, পারভীন পারু, মেরি ও শিশুশিল্পী ঊষসী।

২০২২ সালের অক্টোবরে চলচ্চিত্রটির চিত্রধারণ শুরু হয় কিন্তু সুপার সাইক্লোন সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে শুটিং সেট চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ৬ এপ্রিল নতুন করে শুরু হয় চলচ্চিত্রটির কাজ, শেষ হয় ১২ এপ্রিল। এখন চলছে পোস্টপ্রোডাকশনের কাজ। নির্মাতা সোহেল রানা জানান, নদীর ভাঙা-গড়ার কারণে চর জাগে, চর ডোবে। একই সঙ্গে ভাসমান মানুষের ঠিকানাও বদলায়। ভাসতে ভাসতে মানুষ এক চর থেকে আরেক চরে চলে যায়।

নতুন মানুষ চরে এলে তাদের কী রকম সংকট বা সমস্যার সৃষ্টি হয়, সেটা নিয়েই গল্প। এটার মধ্যে প্রেম, প্রকৃতি, ভালোবাসা ও জীবনদর্শনের বিষয়ও থাকছে। তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক মানুষদের যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে জীবন যাপন করতে হয়, আমাদের তেমন সিত্রাং ঝড়, বৃষ্টি, প্রচণ্ড দাবদাহ মোকাবিলা করে কাজ করতে হয়েছে। আশার কথা হচ্ছে, কোনো বাধাই আমাদের মনোবল ভাঙতে পারেনি, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও অমানবিক পরিশ্রমে সুন্দরভাবে শুটিং শেষ করতে পেরেছি। আমি ভাগ্যবান প্রথম চলচ্চিত্রে সবার এতটা সহযোগিতা পেয়েছি।’