এক যুগ পর সমানে সমানে সজল ও পূজা
প্রায় এক যুগ আগে অভিনেতা সজলের সঙ্গে এক টিভি নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে দেখা গেছে তরুণ অভিনেত্রী পূজা চেরিকে; এবার জুটি বেঁধে বড় পর্দায় আসছেন তাঁরা। ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সিনেমা ‘জ্বীন’ নিয়ে প্রথম আলো কার্যালয়ে আড্ডা দিয়েছেন তাঁরা।
নিয়মিত কাজের বাইরে ছবির প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটছে সজল ও পূজার। পত্রিকার ফটোশুট থেকে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান; ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভেও দেখা মিলছে তাঁদের। এই জুটির প্রথম সিনেমা বলে কথা, প্রচারণায় কমতি রাখছেন না তাঁরা। গত বুধবার প্রথম আলো কার্যালয়ে সিনেমাটি নিয়ে কথা বলেছেন সজল–পূজা।
বয়সের ব্যবধান ভেঙে দুজনের মধ্যে চমৎকার একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। পূজা বললেন, ‘সজল ভাই তো অসাধারণ একজন মানুষ।’ এদিকে সজল বললেন, পূজা এককথায় ব্রিলিয়ান্ট।
এটি সজল-পূজার প্রথম সিনেমা; এর আগে একটি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। এক যুগ আগের সে নাটকের নাম মনে করতে না পারলেও এটুকু জানিয়ে রাখলেন, নাটকটি আনিসুল হকের গল্পে তৈরি। এই নাটকে পূজা শিশুশিল্পী আর সজল পরিণত বয়সের একজন অভিনয়শিল্পী।
সিনেমাটি নিয়ে পূজা বললেন, ‘ভৌতিক সিনেমার প্রতি একটা আলাদা ভালো লাগা ছিল। বিভিন্ন সময় তা বলেছিও। এবার ঈদে সেই ভালো লাগার ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। আমি ভীষণ খুশি, আমার এটা স্বপ্নপূরণও।’
দুই বছর আগে ছবির গল্প শোনানোর সময় পূজাকে জানানো হয়, সিনেমায় তাঁর বিপরীতে কাজ করবেন সজল। সেদিনের কথা প্রসঙ্গে পূজা বললেন, ‘আমি না গল্পটা শুনতে শুনতে ভাবছিলাম, সজল ভাই এই চরিত্রের জন্য একদম পারফেক্ট। চোখের সামনে তিনিই ভাসছিলেন। অন্য কেউ হলে মানাতও না।’
শিশুশিল্পীর পরিচয় ছাপিয়ে সজলের বিপরীতে নায়িকার চরিত্র ধারণে মোটেই বিচলিত ছিলেন না বলে জানালেন পূজা। তাঁর মতে, ‘সজল ভাই নিজেকে ধরে রেখেছেন। আমিও শিশুশিল্পী থেকে বড় হয়ে তাঁর বিপরীতে নায়িকা হতে পারছি—এটা দুজনেরই কৃতিত্ব।’ এসব বাঁকা চোখে দেখার কিছুই না বলেও জানিয়ে রাখলেন এই অভিনয়শিল্পী।
সিনেমার কাজ করতে গিয়ে দুজনের বোঝাপড়াও দারুণ হয়েছে বলে জানালেন সজল। সজলের ভাষ্যে, ‘পূজা ভীষণ প্রতিভাবান। শুটিংয়ের সময়েই পূজার ‘পোড়ামন টু’, ‘দহন’, ‘প্রেম আমার টু’ দেখি। ওর অভিনয় দেখে পর্দায় চোখ আটকে যায়। অনেক পরিণত অভিনয় মনে হয়েছে। পূজা শতভাগ দিয়েই অভিনয় করেছে।’
সজল বললেন, ‘প্রথম দৃশ্যের শুটিংয়ে কোনোভাবে মনে হয়নি, আমি ও পূজা এবারই প্রথম কাজ করছি। পরিচালক আমাদের দৃশ্য বুঝিয়ে দিতেন, খুব বেশি মহড়া ছাড়াও আমাদের মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া তৈরি হতো। সেটা দর্শকেরাও পর্দায় দেখতে পাবে।’ জ্বীন ছবিতে হাসি, কান্না, ভয়, রোমান্স সবই আছে বলে জানালেন সজল।
সজল পূজার কয়েকটি সিনেমা দেখলেও সজলের কোনো সিনেমা দেখা হয়নি পূজার। তবে তাঁর অনেক নাটক দেখেছেন পূজা। এ সিনেমায় সহশিল্পী হিসেবে সজলের সঙ্গে কাজ করে মুগ্ধ হয়েছেন পূজা। অভিনয়শিল্পীর বাইরে মানুষ সজলও তাঁকে মুগ্ধ করেছেন। পূজা বললেন, ‘সজল ভাই সেটে সারাক্ষণ আমাদের মাতিয়ে রাখতেন। তিনি সেটে এলে কারও যদি মন খারাপও থাকে, তবে বেশিক্ষণ মন খারাপ করে থাকতে পারতেন না।
একদিন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমি শুটিংয়ে আর হাসাহাসি করব না। কিন্তু এই মানুষটা আমাকে হাসিয়েই ছাড়লেন। আর একজন অভিনেতা হিসেবে আমার কাছে এক শতে এক শ।’
আড্ডার ফাঁকে পূজার সঙ্গে নানান দুষ্টুমিতে মেতে থাকার গল্পও শোনালেন সজল। তিনি জানালেন, শুটিংয়ের সময় পূজার আনা খাবার চুরি করে খেয়ে ফেলতেন তিনি। শুটিং স্পটের পাশে থাকা বরইগাছে উঠে বরই পেড়েও খেতেন তাঁরা। সজল বললেন, ‘অদ্ভূত হচ্ছে, মুহূর্তেই বদলে যেত পূজা। ক্যামেরা অন হলেই অন্য মানুষ হয়ে যেত। একদম পয়েন্টেড অ্যাক্টিং। পরিচালক যা চাইতেন, ঠিক তা–ই ডেলিভারি দিত। এটা আমাকে মুগ্ধ করত।’
জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় ‘জ্বীন’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন নাদের চৌধুরী।