৩০ বছরের আয়োজনটা মনের মধ্যে পুষে রাখলাম: ওমর সানী

বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে মৌসুমীর সঙ্গে এ ছবিটি পোস্ট করেছেন ওমর সানী। ছবি: অভিনেতার ফেসবুক থেকে

‘খুব ইচ্ছে ছিল অনেক বড় করে সবার সঙ্গে শেয়ার করব, কিন্তু হলো না। চারদিকে লাল শুধু লালের মধ্যে আমাদের হাসিটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। কোনো আয়োজন নয়, যদি পারেন মন থেকে দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’ গতকাল ফেসবুকে লিখেছেন ঢাকাই ছবির নায়ক ওমর সানী। গতকাল ছিল ওমর সানী-মৌসুমীর বিবাহবার্ষিকী।
১৯৯৫ সালের ২ আগস্ট ঢাকাই সিনেমার দুই জনপ্রিয় মুখ ওমর সানী ও মৌসুমী ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। দাম্পত্যজীবনে তিন দশক পার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছেন এই অভিনেতা।

ওমর সানী ও মৌসুমী। ছবি: ফেসবুক

ওমর সানী তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আজ (শুক্রবার) ২ আগস্ট। আমাদের বিবাহবার্ষিকী। আলহামদুলিল্লাহ ৩০ বছর পার করলাম।’ দিনটি নিয়ে অনেক বড় আয়োজন করে অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা থাকলেও দেশের বর্তমান অবস্থাসহ নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি।

পরে প্রথম আলোকে ওমর সানী বলেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতির মধ্যে কী করার আছে। ৩০ বছরের আয়োজনটা মনের মধ্যে পুষে রাখলাম। একটা লাল সূর্যের ভোর একদিন আসবে, তা দেখব। তারপর স্বাভাবিক হবে চারপাশ। তখন জীবন সংসারেরও এমন আয়োজন রাঙিয়ে করা যাবে।’

ওমর সানী ও মৌসুমী। ছবি: ফেসবুক

বিবাহবার্ষিকীর দিনটিতে ওমর সানী দেশে থাকলেও স্ত্রী মৌসুমী ও মেয়ে ফাইজা আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। ছেলে ফারদিন আছেন দুবাইয়ে। এমন সময় পরিবার পাশে না থাকায় সবাইকে মিস করছেন বলে জানান ওমর সানী। তিনি বলেন, ‘এই সময়টাতে সবাইকে মিস করছি। আমার মেয়ে পড়ালেখা করছে ওখানে। আমার শাশুড়ির শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। তাঁকে দেখার জন্য দুই–তিনজন মানুষ লাগে। মৌসুমী এ জন্য ওখানে টানা থাকছে। আমরা তো সে ধরনের সন্তান না যে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখব।’ তিনি নিজেই মৌসুমীকে বলেছেন শাশুড়িকে দেখাশোনার জন্য।

‘বিয়ের ৩০ বছর পূর্তি করার সময় পাওয়া যাবে কিন্তু অসুস্থ মানুষটি চলে গেলে আর পাওয়া যাবে না। মৌসুমীকে আমিই বলেছি, যত দিন তোমার মাকে দেখভাল করার দরকার হবে, তত দিনই তুমি ওখানে থাকবে। যদিও দেশে আমার একাকিত্বের কষ্ট হয়, কিন্তু আমি এসব মেনে নিয়েছি। কারণ, ভালোবাসাটাই তো বড় কথা, তা কাছে হোক বা দূরে হোক। দূর থেকেও তো মৌসুমী ও ছেলেমেয়ের হাসিমাখা মুখ দেখতে পাই, তাদের মায়াভরা কণ্ঠ শুনতে পাই, এটাই কম কিসের, এতেই খুশি আমি।’ বলেন ওমর সানী।
দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনের রহস্য জানতে চাইলে ওমর সানী বলেন, ‘এটি আমাদের সংসারজীবনের আশীর্বাদ। সংসারের সুখ–শান্তিই জীবনের সবকিছু। ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসায় সুন্দর একটা জীবন পার করে আসছি আমরা। এই জীবনে অমূল্য দুই উপহার ফাইজা ও ফারদিনকে পেয়েছি, জীবন ভরপুর, জীবন সুন্দর।’
তবে এই দীর্ঘ সংসারজীবনে কিছু আফসোসও আছে তাঁর। তবে সেসব প্রকাশ্যে বলতে চান না সানী।

ওমর সানী জানান, তিনি আবেগপ্রবণ, একরোখা ধরনের মানুষ। মৌসুমীই তাঁর সংসার আগলে রেখেছেন।

আরও পড়ুন

তাঁর ভাষ্যে, ‘মৌসুমীকে নিয়ে আমার জীবনে সবচেয়ে বড় দিক ও সুখের দিক হলো—আমার মা, বোন, কাছের আত্মীয়স্বজনের জন্য অনেক কিছুই করেছে মৌসুমী। অনেক সময় আমার অজান্তেই করেছে। কোনো কোনো বিষয় অনেক বছর পরে আমি জানতে পেরেছি। অথচ যে দায়িত্বটি আমার পালন করার কথা ছিল, করেছে মৌসুমী। অনেক পরিবারে এমনটি কিন্তু নাই। বলতে পারেন, আমার জন্য এটি কপাল।’

বিবাহবার্ষিকীর দিনে মৌসুমীর সঙ্গে কী কথা হলো, জানতে চাইলে ওমর সানী বলেন, ‘আমার বোনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। মৌসুমী, আমার সন্তানেরা সারাক্ষণই খোঁজখবর নিচ্ছে। ফোনে কথা হচ্ছে। মৌসুমী আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। আমিও মৌসুমীকে জানিয়েছি। ছেলেমেয়েরাও আমাদের দুজনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ও দোয়া করেছে।’