প্রথম আলো :
প্রথমবারের মতো ঈদে আপনার কোনো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছেন, কেমন লাগছে?
একজন অভিনেত্রী হিসেবে এটা খুবই আনন্দের। কারণ, ঈদের সিনেমা নিয়ে সবার মতো অভিনয়শিল্পীদেরও আলাদা আগ্রহ থাকে। আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। আমি খুবই আনন্দিত দীর্ঘ একটা অপেক্ষার পরে দারুণভাবে ফিরছি। অপেক্ষার ফল পাচ্ছি। এভাবে ফেরার জন্যই হয়তো মুখিয়ে ছিলাম। সত্য ঘটনা অবলম্বনে আমাদের মেঘনা কন্যা আলাদা দর্শক পাবে। সেভাবেই আমরা সিনেমাটিকে তুলে ধরছি।
প্রথম আলো :
ঈদে একসঙ্গে ১০টির বেশি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, এটা কোনো চিন্তায় ফেলেছে কি না?
হলসংখ্যা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত। আমাদের সিনেমাটি নারী পাচারের সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সচেতনতা তৈরির জন্য সিনেমাটি দর্শকদের দেখা উচিত। আমাদের সিনেমায় বাণিজ্যিক উপাদানগুলো রয়েছে। দর্শকদের কথা মাথায় রেখে নাচ–গানের মধ্যে দিয়েই আমাদের পরিচালক ফুয়াদ চৌধুরী গল্পটি তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে ঈদে তারকাবহুল সিনেমা রয়েছে, সেসব সিনেমার সঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে এই ভেবে ভালো লাগছে। অনেকটা স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছে।
প্রথম আলো :
ঈদে সিনেমা মুক্তি নিয়ে কোনো স্বপ্ন ছিল?
ঈদের সিনেমা নিয়ে সব সময়ই স্বপ্ন দেখতাম। শাকিব ভাইয়ের সিনেমার সঙ্গে আমার পোস্টার থাকবে। সেটাই হচ্ছে। আমি খুবই উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত। এই যে ঈদে শাকিব খান, রাজ, বুবলী তাঁদের পাশে আমার সিনেমা, এটাকে স্বপ্নবিলাসী মনে হচ্ছে। এখন আমার সিনেমাটি হয়তো অত বড় পরিসরে মুক্তি পাবে না। আমার কাজটি আমি করে গেছি। জওয়ান সিনেমার পাশে যেমন টুয়েলভথ ফেল সিনেমাও কিন্তু প্রশংসা পায়। আমি সিনেমাটির সঙ্গে তুলনা করছি না। সব সিনেমার দর্শক আছে, এটা বোঝানোর জন্য বলেছি। আমি কোনো প্রতিযোগিতায় নেই, ঈদের এই চলচ্চিত্র মেলায় অংশ নিতে পারছি, এটাই বিলাসিতা।
প্রথম আলো :
মেঘনা কন্যার কীভাবে হয়ে উঠতে হয়েছে?
মেঘনাপারের সহজ সরল একটি মেয়ে হাসি। তার বাবা একজন গায়েন। তার মেয়ে হাসি চায় নাচ শিখে বড় কিছু হতে। সেই মেয়েটিই একসময় বিক্রি হয়ে যায়। তারপরের গল্পটা পর্দায় তুলে ধরা চ্যালেঞ্জিং ছিল। অন্ধকার জগতের একটি মেয়ের করুণ জীবন। এখানে আমাকে বেশি সহযোগিতা করেছে আমার আগের চরিত্রগুলো। আমার প্রথম সিনেমা উধাও, নাটক ললিতা, পরে আমি টেলিভিশনের এমন চরিত্রের কিছু তথ্যচিত্র করেছি, যার কারণে আমি ব্রোথেলে গিয়েছি। আমার সৌভাগ্য হয়েছে অন্ধকার জগতের মেয়েদের জীবনটা কাছ থেকে দেখার। তাদের লড়াইয়ের কাছে আমার লড়াই অনেক তুচ্ছ।
প্রথম আলো :
ঈদের সিনেমা শৈশব থেকে কখনো দেখা হতো?
আগে দেখা হতো না। তবে কখনো মায়ের সঙ্গে দেখেছি। সিনেমাগুলো নিয়ে খুবই আগ্রহী থাকতাম। আর আমরা মা-মেয়ে প্রথম ঢাকা অ্যাটাক সিনেমাটি দেখি। মা শাকিব খানের সিনেমার ভক্ত। এবার ঈদে আমার মেঘনা কন্যা, রাজকুমার, ওমর, জ্বীন-২–সহ সব সিনেমাই দেখব।
প্রথম আলো :
মায়ের সঙ্গে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা কেমন?
মজার ব্যাপার হচ্ছে, শৈশবে মা আমাকে রাজ্জাক–কবরীসহ সেই সময়ের সিনেমার গান গেয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতেন। সিনেমার প্রায় সব গানই মায়ের মুখস্থ ছিল। পরে অসুস্থ ধারার সিনেমা শুরু হলে মা আর কখনোই সিনেমা দেখেননি। পরে আমার সিনেমা দেখার জন্যও মা হলে যেতে রাজি হননি। মা সব সময় বলতেন, ‘ওই সব সিনেমা দেখি না। পরে আমার সিনেমা দিয়ে আবার সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখা শুরু করে। তখন আমার সিনেমা দেখে বলতেন, “কী সব গল্প–অভিনয় করিস, তোর ছবিতে নাচ–গান নাই।” আমি তো একটু ভিন্ন ঘরানার সিনেমার চিত্রনাট্য পাই। আমারও কিন্তু ইচ্ছা করে পর্দায় নাচতে–গাইতে। প্রযোজক–পরিচালকেরা সেই সুযোগ না দিলে আমার পক্ষে তো সম্ভব নয়।
প্রথম আলো :
কমার্শিয়াল সিনেমা নিয়ে আপনার...
আমি কিন্তু সব চরিত্রের জন্য প্রস্তুত থাকি। আমি নাচ–গান সবই পছন্দ করি। আমাকে নিয়ে কীভাবে ভাবা যায়, এটা ভাবতে হবে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরে কলকাতায় সেই সুযোগ কিছুটা পেয়েছি। আমি নিজের মতো করেই এগোতে চাই। আমি অনেক অপেক্ষার পরে আজকের জায়গায় এসেছি। নিজের সিনেমার পোস্টার দেখছি। আমি অনেকবার বাদ পড়েছি। ব্যক্তিগত কারণে অপেক্ষা করেছি। তবু আমি হাল ছাড়িনি। নাচ মঞ্চ থেকে আমি শিখি কিন্তু আমার আসল জায়গা অভিনয়। আমি কমার্শিয়াল সিনেমার জন্য প্রস্তুত।
প্রথম আলো :
কলকাতার ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ সিনেমাটির কী অবস্থা?
সিনেমায় আমি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছি। সিনেমাটি আমার জন্য অনেক বড় পরীক্ষা ছিল। কতটা পাস করতে পারলাম, সেটা দর্শক বলবেন। এমন চরিত্রে সুযোগ দেওয়ার জন্য পরিচালক অনিক দত্তের কাছে কৃতজ্ঞতা। সিনেমাটির শুটিং শেষ করেছি। ডাবিংয়ে অংশ নেব। আগামী দুর্গাপূজায় সিনেমাটি মুক্তি পাবে।