কাকে ইঙ্গিত করে ‘মূর্খ’ বললেন বুবলী
বছর শেষে আবার ভার্চ্যুয়াল বিবাদে জড়ালেন অপু বিশ্বাস ও শবনম ববুলী। সরাসরি নয়, একে অপরকে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যের মাধ্যমে বিবাদে জড়ানোর কথা জানান দিচ্ছেন তাঁরা। দুই তারকা ইঙ্গিতে নানান কথা বলছেন। কয়েক বছর ধরে যেমনটা করে আসছেন। বছর শেষে অপু ও বুবলীর এসব পরোক্ষ বা সরাসরি বাহাস মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্টরাও। তাঁদের মতে, কোথায় তাঁদের কাজ নিয়ে আলোচনায় থাকার কথা, কিন্তু না; নিজেদের নিয়ে তর্ক, বাগ্বিতণ্ডা। এভাবে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বাহাস থাকলে ভক্তরা তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা হারাবেন, তাঁরাও একসময় হারাবেন সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা—যা দুজনের কারও জন্যই কাম্য নয়।
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত-সমালোচিত নায়িকা অপু বিশ্বাস। শাকিব খানের সঙ্গে একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে তিনি আলোচনায় আসেন। একটা সময় তাঁরা বিয়ে করে সংসারী হন। বনিবনা না হওয়াতে দুজনের সেই সংসারের বিচ্ছেদ ঘটে। এদিকে একসময় উড়োজাহাজের কেবিন ক্রু হিসেবে কাজ করা শবনম বুবলীর চলচ্চিত্রে আগমন শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। অপুর মতো বুবলীও একের পর এক শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। একটা সময় শাকিবের সঙ্গে বুবলীর প্রেম-বিয়ের গল্প প্রকাশ্যে এলেও দুজনেরই কেউই তা স্বীকার করতেন না। তবে সন্তান জন্মের দুই বছর পর বুবলীর দাবি ছিল এ রকম, ২০১৮ সালের ২০ জুলাই শবনম বুবলীকে গোপনে বিয়ে করেন শাকিব খান। ২০২০ সালের ২১ মার্চ জন্ম হয় তাঁদের সন্তান শেহজাদ খান বীরের। বনিবনা না হওয়াতে বুবলীর সঙ্গেও শাকিবের সম্পর্কের দূরত্ব তৈরির খবর প্রকাশ্যে আসে।
শাকিব খানকে ঘিরে কয়েক বছর ধরে অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর একটা দ্বন্দ্ব বরাবরই লেগে ছিল, তা এখনো আছেও। শাকিব অবশ্য সংবাদমাধ্যমে জানান, অপু-বুবলী দুজনেই তাঁর জীবনের অতীত। দুজনের কারও সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই।
শাকিব খানের সঙ্গে অপু বিশ্বাসের বিচ্ছেদ হয়েছে ৬ বছরের বেশি সময় হতে চলছে। শাকিব খানকে বিয়ে এবং বুবলীকে কেন্দ্র করে বহু জলঘোলা হয়েছে তাঁদের নিয়ে। প্রায়ই বুবলী ও শাকিব খান প্রসঙ্গে কথা বলে আলোচনায় আসেন অপু। সম্প্রতি একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবারও সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন অভিনেত্রী।
অপু বিশ্বাস নাম উল্লেখ না করে বলেছেন, ‘আমার সন্তান আব্রাম খান জয় না থাকলে যে প্রসঙ্গটা সৃষ্টি হয়, তাদের আমার যোগ্য বলেই মনে করতাম না। কারণ, যোগ্যতা এক দিনে সৃষ্টি হয় না। আমি অপু বিশ্বাস, আমি একজন সুপারস্টার। এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার ১৭ বছর চলছে। তাই তাকে আমার যোগ্য বলেই মনে করতাম না।’ মনে করা হচ্ছে, তাঁদের বলতে ঢাকাই সিনেমার আরেক নায়িকা বুবলীকেই ইঙ্গিত করেছেন এই অভিনেত্রী।
কথা প্রসঙ্গে অপু বলেন, ‘আমার সেই ঘটনার পর অনেকেই মনে করেছেন, এভাবে সন্তান নিয়ে টেলিভিশনে না এলেও পারতাম বা এটা আমার ভুল ছিল। পুরো বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধান করতে পারতাম। তবে আমি কিন্তু বিষয়টিকে পারিবারিকভাবেই সমাধানের চেষ্টা করেছি। সেটি হয়নি। কিন্তু প্রতিবারই মনে হচ্ছিল, কেউ পেছন থেকে টেনে ধরছে। যে কারণে বাঁধনটা ছিঁড়ে গেছে।’
অপু বিশ্বাসের কথাগুলো প্রকাশ্যে আসার পর একটা সময় পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি। নীরব ভূমিকায় ছিলেন। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৌশলে বুবলী তার জবাব দিয়েছেন। কারও নাম উল্লেখ করে কয়েকটি স্থিরচিত্র ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মূর্খদের সঙ্গে কথার বলার চেয়ে, চুপ থাকাটাই কড়া জবাব।’ বুবলীর ঘনিষ্ঠজনদের কেউ কেউ বলছেন, কথাগুলো অপু বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউও এমন মত দিয়েছেন। তাঁরা এ–ও বলেছেন, এখন অন্তত এই দুই নায়িকার ব্যক্তিগত কাদা–ছোড়াছুড়ি থামানো উচিত। দুজনের সন্তান বড় হচ্ছে, তারা স্কুলে পড়ছে। তাদেরও বন্ধুবান্ধব আছে। অথচ অপু-বুবলী যা বলছেন, এসব ভার্চ্যুয়াল জগতে থেকেই যাবে। একটা সময় সন্তানদের মনে এসবের বিরূপ প্রভাবও পড়তে পারে।
২০১৭ সালে হঠাৎ বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সবাইকে চমকে দিয়ে সন্তানকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন অপু। অভিনেত্রী তখন জানান, তাঁর সন্তানের বাবা চিত্রনায়ক শাকিব খান। ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল গোপনে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন এই জুটি। এর পরের ঘটনার জল বহুদূর গড়িয়েছে। সন্তান নিয়ে প্রকাশ্যে আসার পর দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদও হয়ে গেছে। শাকিবের জীবনে নতুন করে আসেন বুবলী। যদিও সেটিও গোপন রেখেছিলেন তিনি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিও হয়েছিল। বুবলীও সন্তানকে নিয়ে প্রকাশ্যে আসেন। পরে সন্তান বীর ও জয়কে মেনে নিলেও দুই নায়িকার সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে শাকিবের। এমনকি শাকিবকে নিয়ে বহুবার বিবাদেও জড়িয়েছেন দুই অভিনেত্রী।