‘অপেশাদার আচরণ’, পরিচালকের অভিযোগের বিরুদ্ধে যা বললেন দীঘি

দীঘিছবি : দীঘির ফেসবুক থেকে

বছরের শুরুতে প্রকাশিত ‘টগর’ সিনেমার অ্যানাউন্সমেন্ট টিজারে নায়িকা হিসেবে দেখা যায় দীঘিকে। এই টিজার প্রকাশের পর সবাই দীঘির লুক ও অভিব্যক্তির প্রশংসা করেন। শুটিংয়ের দিনক্ষণ কাছাকাছি আসতেই জানা যায়, বদলে গেছে নায়িকা চরিত্রের পরিকল্পনা। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানায়, ‘টগর’ ছবি থেকে বাদ পড়েছেন দীঘি! তাঁর জায়গায় যুক্ত হয়েছেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরী। পরিচালক আলোক হাসান ‘টগর’ ছবি থেকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে সামনে এনেছেন দীঘির অপেশাদার আচরণ।

আলোক হাসান প্রথম আলোকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জানান, আজ থেকে চট্টগ্রামে ‘টগর’ ছবির শুটিং শুরু হয়েছে। বন্দরনগরীর বিটিসিএল কলোনিতে প্রথম দিনের শুটিং শুরু হয়েছে। শুটিংয়ে আদর আজাদ, পূজা চেরীসহ অন্য অভিনয়শিল্পীরা অংশ নিয়েছেন। সব ঠিক থাকলে আজ থেকে এই শুটিংয়ে থাকার কথা ছিল দীঘির। কিন্তু বাদ পড়ায় তা হয়নি। অপেশাদার আচরণ প্রসঙ্গে কথা হয় দীঘির সঙ্গে।

দীঘি
ছবি : দীঘির ফেসবুক থেকে

আজ মঙ্গলবার বিকেলে দীঘি প্রথম আলোকে বললেন, ‘অপেশাদার যে বিষয়টা বলেছে, তার সঙ্গে আমি একমত নই।

সম্প্রতি “জংলি” ছবির যে টিজার প্রকাশিত হয়েছে, আমার মনে হয় ওই টিজারেও তার প্রমাণ সবাই পাবেন, আমি কোনো অপেশাদার আচরণ করিনি। কারণ, “জংলি” টিজারে আমাকে খুব বাজে একটা অ্যাঙ্গেল থেকে ক্যামেরায় ধরা হয়েছে। আমি যদি অপেশাদার হতাম, তাহলে এই ধরনের দৃশ্য ধারণ করতে দিতাম না কখনো। আমি রাজি থাকতাম না। তবে এটাও ঠিক, সবার কাছে যে আমি ভালো হব, তা–ও তো সম্ভব নয়। হয়তোবা উনার কাছে অপেশাদার মনে হয়েছে, হতেই পারে।’

‘টগর’ থেকে বাদ পড়ার বিষয়টি খুব স্বাভাবিকভাবে দেখছেন দীঘি। তিনি বললেন, ‘আমার কাছে এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয় মনে হয়েছে। বাদ দেওয়ার এই বিষয়গুলো বলিউডসহ অনেক দেশে হয়ে থাকে। এটা নিয়ে আমার নিজের কোনো সমস্যা নেই। পরিচালকের মনে হয়েছে, কাজ করেনি আমার সঙ্গে—এই স্বাধীনতা তাঁর আছে। তবে আমার পক্ষ থেকে কিন্তু কোনো সমস্যা ছিল না। এখনো সমস্যা নেই। আমি তো আরও অনেকের সঙ্গে কাজ করি। কারও কাছ থেকে আমাকে নিয়ে এ ধরনের অভিযোগ কখনো আসেনি। যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারা প্রমাণ করুক, আমি কেমন। কখনো অপেশাদার আচরণ করেছি কি না। আমার সঙ্গে শ্যাম বেনেগালও কিন্তু কাজ করেছেন, কিন্তু কখনো অপেশাদার আচরণের অভিযোগ শুনিনি। এ অভিযোগ প্রথম। আমার মনে হয়েছে প্রথম যেহেতু আসছে, তাঁর পক্ষ থেকে বলতেই পারে, যদি তার পক্ষ থেকে সে রকম কিছু মনে হয়, তবে এমন অভিযোগ আমি মেনেও নিচ্ছি না, তার এই অভিযোগের সঙ্গে অন্য কোনো পরিচালকও সম্মত হননি। এটা একান্তই “টগর”পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি।’

আরও পড়ুন
দীঘি
ছবি : দীঘির ফেসবুক থেকে

কথা প্রসঙ্গে দীঘি বললেন, ‘আমি “টগর” পরিচালককে কোনো খোঁচা দিতে চাই না। চাইলে হয়তো বলতে পারতাম, আমি মানি না, আপনি কেন এমনটা বললেন...। আমার মনে হয়, খোঁচা দিলে ইস্যু বাড়বে, তাই আমি চুপচাপ আছি। মেনে নিয়েছি বিষয়টা এমন না, তবে তাঁর সিদ্ধান্তকেও শ্রদ্ধা জানাই। এটাও ভেবেছি, এ রকম কিছু না করি, যাতে তাঁকে অসম্মানিত করা হয়, আমিও অসম্মানিত হই। পরিচালক তাঁর বক্তব্য দিয়ে যাক, আমার মনে হয় না নিজেকে ব্যাখ্যা করার কিছু আছে। আমি মনে করি, আমার কাজই আমাকে প্রমাণ করবে। আমার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা জানেন আমি কেমন।’

মাঝখানে বেশ কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন দীঘি। এ কারণে পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দীঘির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। যোগাযোগ রক্ষা না করার প্রসঙ্গ উঠতেই দীঘি বললেন, ‘আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম, ওই সময়টায় হয়তো দিন আর রাতের পার্থক্যের কারণে যোগাযোগ সেভাবে হয়নি। সব মিলিয়ে আসলে ওই সময়টাই তাঁর কাছে হয়তো ডিফিকাল্ট মনে হয়েছে। এরপর তিনি আমাকে সিদ্ধান্ত জানান, আমার সঙ্গে এই কাজটা করতে চাচ্ছেন না। আমিও কিছু বলিনি।’

আরও পড়ুন
দীঘি
ছবি : দীঘির ফেসবুক থেকে

‘টগর’ ছবিতে কাজ করতে না পারলেও শুভকামনা রয়েছে পুরো টিমের প্রতি, এমনটাই জানালেন দীঘি।

বললেন, ‘অ্যানাউন্সমেন্ট পোস্টার হয়েছে। প্রকাশের পর অনেকে প্রশংসা করেছে। অনেক দিন এই ছবির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কাজটার তো শুরু থেকেই আমি ছিলাম—একটু তো খারাপ লাগে। তবে আমি মন থেকে চাই, তাদের কাজ ভালো হোক। আমি তো গল্পটা জানি, চরিত্রটাও জানি। সে হিসেবে বলতে পারি, আমি ওই জায়গায় না থাকলেও তাদের গল্প যথেষ্ট শক্তিশালী, কাস্টিংও ভালো। তাদের টিমের জন্য শুভকামনা। এত সুন্দর একটা গল্প, কোনো বিতর্কে পড়ে যেন খারাপ হয়।’