‘অনিল বাগচীর একদিন’ সিনেমার সেই নায়ক কেমন আছেন
তাঁদের সিনেমায় অভিষেক গর্ব করার মতো। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। যুদ্ধ না দেখলেও ছবির শিহরিত দৃশ্যের অভিনয় ভাবতে শিখিয়েছিল ৭১–এর রণাঙ্গনের ভয়াবহতা। অভিনয়ের জন্য প্রশংসা পেয়েছিলেন। নাম ভূমিকায় অভিনয়, তাই মুক্তির পরে ভেবেছিলেন ছবিগুলো তাঁদের ভাগ্য বদলে দেবে। কিন্তু সেই আশার যেন গুড়ে বালি। বলছি ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমার আফনান চৌধুরী, ‘শোভনের স্বাধীনতা’ সিনেমার রুদ্র রায়হান ও ‘অনিল বাগচির একদিন’ সিনেমার আরেফ সৈয়দের কথা। তাঁরা কেউ কেউ অনেক চেষ্টা করেও অভিনয় অঙ্গনে টিকে থাকতে পারেননি। এখন কেউ স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতে নির্মাতা হওয়ার, কেউ বিসিএস ক্যাডার হতে চান। কেউ টিকে থাকতে চাকরির পাশাপাশি অভিনয় করে যেতে চান। পর্ব ২—
টিকে থাকতে পারেননি ‘অনিল বাগচীর একদিন’–এর আরেফ
অভিনয় নিয়ে অনেক ইচ্ছা ছিল আরেফ সৈয়দের। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্টেলা অ্যাডেলার স্টুডিও অব অ্যাক্টিং থেকে অভিনয়ের ওপর পড়াশোনা করেছিলেন। বিদেশে নয়, ভেবেছিলেন দেশে দেশে ফিরে অভিনয় করতেন। চলে আসেন দেশে। কিন্তু দেশে এসে অভিনয়ের জন্য ঘুরে ঘুরেও তেমন সাড়া পাননি। এমনকি তাঁকে হতাশ হতে হয়।
অনেক চেষ্টার পরে তিনি একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সেটা দেশ–বিদেশের উৎসবে প্রশংসিত হয়। সেই স্বল্পদৈর্ঘ্যটি রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে প্রদর্শিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম। সিনেমাটি দেখে আরেফের প্রশংসা করেন গুণী এই পরিচালক। তার পরে তেমন আর এই পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়নি। এদিকে অভিনয়ের জন্য ঘুরছেন এই তরুণ।
এর মধ্যে রাশিয়ান কালচারে দেখা হওয়ার চার বছর পরে পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম তাঁকে ফোন দিয়ে প্রস্তাব দেন ‘অনিল বাগচীর একদিন’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করতে হবে। পরে আরেফ জানতে পারেন, তিনিই প্রধান চরিত্রে অভিনয় করবেন। সেদিন এই তরুণ ভেবেছিলেন সুযোগটা দীর্ঘমেয়াদি অভিনয়ে টিকে থাকতে কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই ভাগ্যটা হয়তো বদলে যেতে পারে।
সিনেমার শুটিং করেন। পরে অভিনয় করে একশ্রেণির দর্শকদের কাছ থেকে প্রশংসা পান তিনি। এর পরে একটাই স্বপ্ন ছিল, নিয়মিত অভিনয়ের সুযোগ করে নেওয়া। তিনি পরবর্তী সময়ে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দেখা করেন। কিন্তু অভিনয়ে সেই সুযোগ যেন তাঁর কাছে ছিল সোনার হরিণের মতো।
আরেফ এর আগে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘অভিনয়ে লেগে থাকার জন্য অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি হয়তো সেভাবে কারও সামনে নিজেকে তুলে ধরতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা হতে পারে। আমি এখনো অভিনয়ের অনুশীলনের মধ্যেই থাকি। ভালো একটি চরিত্রের জন্য অপেক্ষা সব সময় করব।’
আরেফ বর্তমানে চাকরি করছেন। এরমধ্যে অল্প কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন। জানিয়েছিলেন, কেউ ডাকলে যেকোনো সময় তিনি অভিনয় করবেন। অভিনয়ই তাঁকে বেশি টানে। তাঁর অভিনীত ‘অনিল বাগচীর একদিন’ ছবিটি ২০১৫ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটি হুমায়ূন আহমেদের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে থেকে নির্মিত।