দিলদারের প্রশংসা করে যা বললেন আবুল হায়াত
ঢাকাই বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে ‘হাসির রাজা’ হিসেবে কৌতুক অভিনেতা দিলদার হোসেনের নামডাক ছিল। একটা সময় ছিল, যখন কেউ কাউকে হাসালেই সেই মানুষকে দেওয়া হতো ‘দিলদার’ উপাধি। কৌতুকের সমার্থক শব্দ ও প্রবাদে পরিণত হয়েছিল এই অভিনেতার নাম। মৃত্যুর দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এখন অমলিন তাঁর কর্ম-স্মৃতি। দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের একটি অধ্যায়জুড়ে আছেন দিলদার। তাঁর প্রয়াণের এতগুলো বছর পরও এখনো দিলদারের মতো কেউ হয়ে উঠতে পারেননি; পূরণ হয়নি শূন্যস্থানও।
সম্প্রতি জনপ্রিয় অভিনেতার স্মৃতিচারণা করেছেন গুণী অভিনেতা আবুল হায়াত। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই জ্যেষ্ঠ অভিনেতা বলেন, ‘দিলদারের সঙ্গে অনেকেই কাজ করেছেন। তার সঙ্গে কাজ করেননি এমন কোনো শিল্পী নেই। একটা সময় ছিল, প্রায় প্রতিটি সিনেমাতেই দিলদার অভিনয় করত। তার একটি নিজস্ব ব্র্যান্ডিং ছিল। সেই স্টাইলেই কাজ করত। ওর সঙ্গে কাজ করা একটু ব্যতিক্রম ছিল। কারণ, ও স্ক্রিপ্টের বাইরে অনেক ডায়ালগ বলত, যেগুলোর জন্য অনেক সময় সমস্যা হয়ে যেত। কিন্তু সে খুবই স্বতঃস্ফূর্ত অভিনেতা ছিল। যেকোনো পরিস্থিতি সামলে নিতে পারত।’
আবুল হায়াত আরও বলেন, ‘যেকোনো প্রতিষ্ঠানেই একজন মানুষ চলে গেলে জায়গাটা খালি হয়ে যায়। এটা ঠিক যে দিলদারের জায়গাটা এখনো পূরণ হয়নি। প্রত্যেকের নিজস্বতা রয়েছে। সবাই নিজ নিজ স্টাইলে কাজ করে। সেই জায়গাটা পূরণ হয় না।’
১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক হয়েছিল দিলদারের। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দিন দিন বাংলা চলচ্চিত্রের কৌতুকের প্রাণভোমরা হয়ে ওঠেন দিলদার। তাঁর জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে ছিল যে দিলদারকে নায়ক করেই নির্মিত হয়েছিল ‘আব্দুল্লাহ্’ নামের একটি চলচ্চিত্র। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। মৃত্যুর বছর ২০০৩ সালে সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে ‘তুমি শুধু আমার’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন অভিনেতা।