স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন মাহিয়া মাহি, জানালেন কারণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির প্রতিনিধি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে এই মনোনয়ন ফরম নেওয়া হয়। গতকাল রোববার দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষিত মনোনয়ন তালিকায় নাম ছিল না। পরদিন দুপুরে জানা গেল, মাহির নামে স্বতন্ত্র থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তাঁর একজন আত্মীয়। এবার আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে নয়, রাজশাহীর তানোর-গোদাগাড়ী-১ আসন থেকে এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নির্বাচনের প্রথম ধাপ হিসেবে আজ সোমবার দুপুরে মাহির পক্ষে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন তাঁর এক আত্মীয়। মাহিয়া মাহি আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মাহিয়া মাহির পক্ষে তাঁর এক আত্মীয় মনোনয়নপত্র তুলেছেন।
মাহি প্রথম আলোকে জানান, তানোর-গোদাগাড়ী-১ আসন থেকে আজ দুপুরে মনোনয়নপত্র ওঠানো হয়েছে। মাহির দাবি, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘“যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান, আমরা তাঁদের সবাইকে যাতে সহযোগিতা করি। তাঁদের আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করি, স্বাগত জানাই।” সে ক্ষেত্রে এটা আমার একটা স্টেপ।
আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার এটা আরেকটা পদক্ষেপ। আমাকে দেখে আরও যাতে সবাই আসেন। নির্বাচন করেন। যাতে একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়, সবার অংশগ্রহণ থাকে। শুধু একজন নমিনেশন পেয়েছেন, তাঁর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে না, এ রকম যাতে না হয়।’
‘ভালোবাসার রং’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউড পেয়েছিল চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে। ১১ বছরে চলচ্চিত্রের নানা অলিগলি পেরিয়ে মাহিকে দেখা গেছে রাজনীতির মাঠেও। বেশ কয়েক মাস ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। অংশ নেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে। আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করবেন। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলে তা নিশ্চিত হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। তখন ওই আসনে তফসিল ঘোষণা করা হলে মাহিয়া মাহি সেখানে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারে অংশ নেন। পরে আওয়ামী লীগ তাঁকে সেখানে মনোনয়ন দেয়নি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও তিনি ওই আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বেশ তৎপর হন। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। শেষমেশ তিনি তাঁর নানাবাড়ির আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। তানোর শুধু তাঁর নানাবাড়ি নয়, এখানেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তিনি এখানকার মানুষ।
মাহি বলেন, ‘আমি জিতব, হারব—বিষয়টা সেটা নয়। বিষয়টা হচ্ছে, আমাকে দেখে যাতে তরুণেরা ভোট দিতে আগ্রহী হন। আমাকে ভোট দিক বা যাঁকেই ভোট দিক, তাঁরা ভোট দিতে যেন আসেন। এটা একটা উৎসবমুখর পরিবেশ করার জন্যই আমার অংশগ্রহণ। অবশ্য আমার এলাকার মানুষেরা উৎসাহ দিয়েছেন বলেই তো অংশ নেওয়া। তবে শেষ জয়ের হাসি কে হাসবেন, সেটা বলতে পারছি না।’