চলচ্চিত্রের চেয়ে চলচ্চিত্রের বাইরের নানা কর্মকাণ্ডে বরাবরই আলোচিত পরীমনি। চলচ্চিত্রের শুটিং ও মামলার কারণে আদালতে হাজিরা দেওয়া পরীমনি যখন একের পর এক খবরের শিরোনাম, তখনই তাঁর মা হওয়ার খবরটি প্রকাশ্যে আসে। ১০ জানুয়ারি দুপুরে প্রথম আলোকে পরীমনি জানান, মাস চারেক আগে শরীফুল রাজের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের তিন মাস পর তিনি জানতে পারেন, মা হতে যাচ্ছেন। এদিকে বছরের শেষ দিনের শুরুতেই পরীমনি সবাইকে অবাক করে দেন ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টের মাধ্যমে। পরীমনি ফেসবুকে জানান, ‘আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে। জীবনে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার থেকে জরুরি আর কিছুই নাই।’
পরীমনির ফেসবুকে দেওয়া এমন পোস্টে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষী ও বিনোদন অঙ্গনের সবাই নড়েচড়ে বসেন। সবার মনে প্রশ্ন, তাহলে কি ভেঙে যাচ্ছে পরীমনি ও রাজের সংসার! পোস্টের পর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে পরীমনি বললেন, ‘এখনো বিচ্ছেদ হয়নি। তবে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করে রাজের বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছি। আজ থেকে আমরা আলাদা হয়ে গেলাম। শিগগির বিচ্ছেদের চিঠি পাঠিয়ে দেব। বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যা হচ্ছিল। সমস্যা কাটিয়ে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছি, পারলাম না। তাঁর আচার-আচরণ একসঙ্গে থাকার পরিস্থিতি নাই। তাই বাধ্য হয়ে বাসা ছেড়ে আলাদা হয়ে গেলাম।’
পরীমনির কথায় স্পষ্ট, তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সময়ের ব্যাপারমাত্র। যেকোনো মুহূর্তে কাগজে-কলমে তাঁরা আলাদা হয়ে যাবেন। পেছন ফিরে তাকালেই দেখা যায়, পরীমনির বিয়ের ঘোষণার পরই একটা অংশ খুব খুশি হলেও আরেকটা অংশ তাঁদের সম্পর্ক টিকে থাকার ব্যাপারে সংশয়ে ছিল। তাঁদেরও ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সূত্রে জানা গেছে, দুজনের সংসারজীবন ভালো যে কাটছিল না, এটা শুধু এত দিন তাঁদের কাছের মানুষেরা জানতেন। তাঁরা নানাভাবে দুজনকে বুঝিয়েছেনও। নিজেরাও নিজেদের মতো করে চেষ্টা করেছেন সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু কিছুতেই যেন তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। দুজনের সম্পর্কের অবণতির কারণে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্তও ঘটে। এমনও শোনা গেছে, কয়দিন আগে পরীমনির হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণটাও সম্পর্কের অবণতিতে হয়েছে।
পরীমনি ও রাজের বিয়ের ঘোষণার কয়েক মাসের মধ্যেই ছেলে রাজ্যের জন্ম হয়। ফেসবুকে দেওয়া বিভিন্ন পোস্ট এবং দুজনের কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছিল, বিয়ের ঘোষণার পর থেকেই তাঁরা দুজন বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। সময়টাকে তাঁরা দারুণভাবে উপভোগ করছিলেন। ভেতরে–ভেতরে যে সম্পর্কটা বিচ্ছেদের দিকে গড়াচ্ছিল, তা তাদের খুব ঘনিষ্ঠজনেরা আভাস দিয়েছিলেন। সেই আভাস বাস্তবে রূপ দেন পরীমনি নিজে। বছরের শেষ দিনে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি যা বললেন, তাতে এটাই স্পষ্ট, ঘনিষ্ঠজনেরা মোটেও ভুল কিছু বলেননি।
বেশ কিছুদিন ধরে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমের সঙ্গে স্বামী শরীফুল রাজের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আপত্তি জানাতে শোনা গিয়েছিল পরীমনিকে। তাই কি এত বড় সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনেত্রী, সে ব্যাপারেও পরিষ্কার কিছু করেননি পরীমনি।