দূরদেশে মৌসুমীর সঙ্গে দেখা ফেরদৌসের, বন্ধুকে কী রান্না করে খাওয়ালেন নায়িকা
মৌসুমী ও ফেরদৌসের বন্ধুত্বের খবর ঢালিউডের সবারই জানা। একসঙ্গে দুজনে বেশ কটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পারিবারিকভাবেও তাঁদের সম্পর্কটা চমৎকার। এই বন্ধুর সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে দেখাসাক্ষাৎ নেই। ফেরদৌস রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। অন্যদিকে মৌসুমী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এরই মধ্যে ফেরদৌস সংসদ সদস্যও হয়েছেন। অভিনেতা ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস গত সপ্তাহে সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। খবরটি জেনেছেন বন্ধু মৌসুমীও। তাই দীর্ঘদিন পর দুই বন্ধুর দেখা হওয়ার বিষয়টি হাতছাড়া করতে চাননি তাঁরা কেউই। মৌসুমীর আমন্ত্রণে নিউইয়র্ক সময় গত শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর লং আইল্যান্ডের বাসায় অতিথি হয়েছেন ফেরদৌস। খাওয়াদাওয়া ও আড্ডায় কেটে যায় তাঁদের দুই ঘণ্টার বেশি সময়।
মৌসুমীর বাসায় দেখা ও আড্ডার বিষয়টি ফেরদৌস তাঁর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন। তিনি একাধিক স্থিরচিত্র পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মৌসুমী আমার প্রিয় মানুষ, প্রিয় নায়িকা, প্রিয় বন্ধু, প্রিয় সহকর্মী এবং বিভিন্ন দিক দিয়ে আমার ভীষণ কাছের একজন। অনেক দিন পর সেই মানুষটার সঙ্গে দেখা, নিউইয়র্কে। কী যে ভালো লেগেছে, কী যে অসাধারণ সময় কেটেছে লিখে বোঝাতে পারব না। মৌসুমী নিজ হাতে রান্না করেছে, ফাইজা (মৌসুমীর মেয়ে) এবং আন্টি (মৌসুমীর মা) পরিবেশন করেছে। এরপর গল্পও আড্ডা, আন্টি সেই শুরুর দিকের কত কথা যে বললেন।’
এদিকে চিত্রনায়ক ফেরদৌস এখন সংসদ সদস্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে ঢাকা–১০ আসন থেকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অভিনয়ের বাইরে ফেরদৌস রাজনীতি নিয়েও তাই ভীষণ ব্যস্ত। ফেরদৌসের নতুন পরিচয় বন্ধু মৌসুমীর জন্য ভীষণ ভালো লাগার, দেখা হতেই এমনটা জানিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে ফেরদৌসের ফেসবুক পোস্টে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার এই নতুন জীবন নিয়ে মৌসুমীর কত কথা, কত প্রশ্ন, কত যে আগ্রহ। গাড়িতে উঠে অনেক দূর এগিয়ে পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি এই প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে এখন তাকিয়ে আছে। এই সম্পর্কগুলো অটুট, এই বন্ধনগুলো দৃঢ়, এই স্মৃতিগুলো অমলিন। মৌসুমী ভালো থাকুক, এটাই মন থেকে চাই।’
একেবারে শেষের দিকে ফেরদৌস জানালেন, সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক বাংলা চলচ্চিত্র উৎসবে এসে আমাদের প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ নায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে দেখা। কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন ঢালিউডের একসময়ের সাড়া জাগানো অভিনয়শিল্পী মৌসুমী। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক ঘটা এই নায়িকা তিন দশকের বেশি সময় ধরে ঢালিউডে দাপুটে বিচরণ করেছেন। এখন অভিনয়ে একেবারে অনিয়মিত।
আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় ফেরদৌসের। তিনি বললেন, ‘মৌসুমী আমেরিকায় থাকলেও ফোনে কথা হতো। আমার নির্বাচনের সময়ও শুভকামনা জানিয়েছে। প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখত। এবার আমেরিকায় যাওয়ার খবর শুনে দাওয়াত দিয়ে রেখেছিল। আমিও ভাবলাম, বন্ধুর সঙ্গে অনেক দিন দেখা হয় না। এক সুযোগে দেখা হোক। আমি যাওয়ার পর দেখি, কত কি যে রান্না করেছে। খিচুড়ি খেয়েছি। মাছ–মাংস দিয়ে নানান পদ বানিয়েছে। বাদ যায়নি মিষ্টিজাতীয় খাবারও। আমি তো বলেই ফেলেছি, সারা দিন ধরে কি রান্নাবান্না করেছে কি না! আসলে বন্ধুর যাওয়ার খবরটা শুনে এমনটা করেছে। আমারও অসাধারণ সময় কাটল। অনেক কথা হলো।’
মৌসুমীকে তাঁদের সময়ের শ্রেষ্ঠ নায়িকা উল্লেখ করে ফেরদৌস বললেন, ‘বরাবরই আড়ালে থাকতে পছন্দ করে মৌসুমী। তাকে ফোনেও সহজে পাওয়া যেত না। নিজেকে সব সময় মেনটেইন করেছে। আমেরিকার লং আইল্যান্ডের যে দিকটায় মৌসুমী থাকে, একদম নিরিবিলি। নিজের মতো করেই ভালোভাবে আছে। ভালো লাগল প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দেখা হয়ে, আড্ডা দিয়ে।’
বাংলাদেশ সময় কাল মঙ্গলবার ঢাকার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ছাড়বেন ফেরদৌস। এদিকে সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ফেরদৌসকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। মহানায়িকা সুচিত্র সেন উৎসবে এমন একটি সম্মাননা পাওয়াটাও অনেক গৌরবের মনে করছেন ফেরদৌস।