ভেনিস উৎসবের এশিয়া বিভাগের বিচারক জাকির হোসেন
৮০তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান সিনেমা বিভাগের প্রধান বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন চলচ্চিত্র সমালোচক ও গবেষক জাকির হোসেন রাজু। এই বিভাগে এশিয়া থেকে মনোনয়ন পাওয়া সিনেমার মধ্য থেকে সেরা সিনেমাগুলোকে পুরস্কৃত করা হবে। দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের বেশি সময় পর আবার এশিয়ান বিভাগের সিনেমা নিয়ে আলাদা করে পুরস্কারের আয়োজন করেছে উৎসব কর্তৃপক্ষ।
জাকির হোসেন জানান, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন সিনেমা উৎসবের একটি ভেনিস। সম্মানজনক এই উৎসবের এশিয়ার সিনেমা বিভাগে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ তাঁর জন্য অনেক বড় পাওয়া। প্রথম আলোকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত গর্বের। একই সঙ্গে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য আনন্দের বিষয়। এই সময়ে যখন বাংলাদেশের সিনেমা বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছে, পুরস্কার পাচ্ছে, প্রশংসা পাচ্ছে, তখন ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে আমার এই অংশগ্রহণ আমাদের চলচ্চিত্র সংস্কৃতিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করি।’
জাকির হোসেনের সঙ্গে সহবিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আরও দুজন। তেরেসা ক্যাভিনা ও ভিয়েরা ল্যাঙ্গেরোভা। ক্যাভিনা এর আগে রোম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আর্টিস্টিক ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্যদিকে ভিয়েরা চেক রিপাবলিকের অন্যতম সমালোচক ও সিনেমা গবেষক হিসেবে সুপরিচিত।
উৎসবে কী ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্য যে দুজন জুরি রয়েছেন, তাঁদেরও সিনেমা নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। এবার ভেনিস উৎসবে এশিয়ার সিনেমাকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এশিয়ার সিনেমা থেকে সেরা সিনেমাগুলো খুঁজে বের করাই আমাদের দায়িত্ব।’
৩০ আগস্ট থেকে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব।
এর আগে অধ্যাপক জাকির হোসেন রাজু ২০১৫ ও ২০২০ সালে রটারডেম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান সিনেমা বিভাগের প্রধান বিচারক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই, ব্ল্যাক নাইট, সাউথ কোরিয়ার বুচান, ফ্রান্সের ভেসল, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নসহ একাধিক উৎসবে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তাঁর নির্মিত তথ্যচিত্র বিয়ন্ড দ্য বর্ডার বুসান হাওয়াই, সিঙ্গাপুরসহ একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে প্রশংসিত হয়।
জাকির হোসেন রাজু চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক। পাশাপাশি তিনি গবেষক ও অধ্যাপক। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ, কোরীয় ও মালয়েশিয়ান সিনেমা নিয়ে তাঁর একাধিক গবেষণাপত্র রয়েছে। তিনি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপকও তিনি। ফিল্ম স্টাডিজ বিষয়ে ২০০৪ সালে মেলবোর্ন থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে তিনিই ছিলেন প্রথম ডক্টরেট। তাঁর লেখা বাংলাদেশ সিনেমা অ্যান্ড ন্যাশনাল আইডেনটিটি: ইন সার্চ অব দ্য মডার্ন নামে একটি বই রয়েছে। বইটি ২০১৫ সালে লন্ডন থেকে প্রকাশ পায়। বইটি বাংলাদেশি সিনেমাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বইটি পড়ানো হয়।