আইএমডিবিতে সর্বাধিক রেটিং পাওয়া ১০ বাংলাদেশি সিনেমা
বিশ্ব সিনেমার নানা তথ্য জানার অন্যতম মাধ্যম আইএমডিবি (ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ)। সিনেমার খুঁটিনাটি তথ্য তো বটেই, এই ওয়েবসাইটের সাহায্যে খুব সহজেই যেকোনো সিনেমা সম্পর্কে অন্যদের মতামতও জানা যায়। যে কারণে সিনেমাপ্রেমীদের কাছে প্ল্যাটফর্মটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেশের দর্শকদের কাছে আগে খুব এটা পরিচিত না হলেও এখন আইএমডিবি নিয়ে দেশি দর্শকদের আগ্রহও লক্ষণীয়। বাংলাদেশি বিভিন্ন সিনেমার তথ্যও জায়গা করে নিয়েছে এ সাইটে। যে আইএমডিবিতে একসময় বাংলাদেশি সিনেমা খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হতো, সেখানে এখন ভিন্ন চিত্র। সিনেমা মুক্তির পর থেকেই হাজারো ভক্ত সিনেমাগুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় মেতে উঠছেন। কেউ মুক্তির আগেই পছন্দের সিনেমা নিয়ে জানতে চাইছেন। পছন্দের সিনেমাকে রেটিং দিচ্ছেন। এই রেটিং নির্ধারিত হয় ১০-এ।
দেশে হাজারো সিনেমার মধ্যে কোন সিনেমাটি আইএমডিবির রেটিংয়ে সবার ওপরে রয়েছে? কোন সিনেমা সর্বাধিক ভোট পেয়েছে? ‘আয়নাবাজি’ সিনেমাটি আইএমডিবিতে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া বাংলাদেশি সিনেমা।
২৯ হাজার দর্শক ভোট দিয়েছেন। সিনেমাটির রেটিংও বেশি—৯। আবার অনেক সিনেমা ভোট বেশি পেলেও রেটিংয়ে পিছিয়ে। এই তালিকায় রয়েছে গত ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া সুড়ঙ্গ সিনেমা। সিনেমাটি ২৮ হাজারের বেশি ভোট পেলেও রেটিংয়ে পিছিয়ে—৬.৬। অন্যদিকে ভোটে ৩ নম্বরে রয়েছে শাকিব খান অভিনীত সিনেমা ‘প্রিয়তমা’। সিনেমাটিতে ভোট দিয়েছেন ২১ হাজার আইএমডিবি ব্যবহারকারী। সমালোচনা লিখেছেন ২৮৮ জন। ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার তারকা আফরান নিশো ও ‘প্রিয়তমা’র শাকিব খানের ভক্তদের মধ্যে রেষারেষির প্রভাব পড়েছে ভোটিংয়ে। সিনেমাটির রেটিং ৫.৫।
আইএমডিবি রেটিং দর্শকদের মতামত দেখে সেসব সিনেমার দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন অনেকে। নিবন্ধিত ভোটাররা কে কত দিচ্ছেন, সেই রেটিংয়ে আইএমডিবি এই তালিকা তৈরি করে।
রেটিংয়ের ভিত্তিতে আইএমডিবিতে শীর্ষ ১০ বাংলাদেশি সিনেমা
আইএমডিবির রেটিংয়ে বাংলাদেশের সিনেমাগুলোর মধ্যে শীর্ষ রয়েছে জহির রায়হান পরিচালিত ‘জীবন থেকে নেয়া’। ১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে ওঠে এসেছে স্বাধীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। সেই সময় সাড়া জাগানো সিনেমাটি নিয়ে এখনো ভক্তদের আগ্রহ অবাক করার মতো। সিনেমাটির রেটিং ৯.৩। ভোট দিয়েছেন ২ হাজার ২০০ জন।
রেটিংয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হুমায়ূন আহমদের ‘আগুনের পরশমণি’। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত সিনেমাটি ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায়। সিনেমার রেটিং ৯.১। ভোট দিয়েছেন ৩ হাজার ৩০০ দর্শক।
যৌথভাবে ৩ নম্বরে রয়েছে অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘আয়নাবাজি’ ও তৌকীর আহমেদের ‘অজ্ঞাতনামা’। এই সিনেমা দুটির রেটিং ৯। আয়নাবাজি ভোট পেয়েছে ২৯ হাজার ও অজ্ঞাতনামা সাড়ে ৫ হাজার।
কিশোরদের অ্যাডভেঞ্চারের গল্প নিয়ে সিনেমা ‘দীপু নম্বর টু’। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মোরশেদুল ইসলাম। এটির রেটিং ৮.৯। সিনেমাটিকে ভোট দিয়েছেন আড়াই হাজার দর্শক।
গিয়াস উদ্দিন সেলিমের আলোচিত সিনেমা ‘মনপুরা’ দর্শকদের মধ্যে তুমুল সাড়া ফেলে। প্রধান চরিত্রে চঞ্চল অভিনীত প্রথম সিনেমাটির রেটিং ৮.৮। সিনেমাটি প্রায় ৯ হাজার ভোট পেয়েছে।
জহির রায়হানের আরেকটি প্রশংসিত সিনেমা ‘কখনো আসেনি’। সিনেমাটি মাত্র ৫২টি ভোট পেলেও এটির রেটিং ৮.৬। ১৯৬১ সালে মুক্তি পায় পরিচালকের প্রথম সিনেমাটি।
হুমায়ূন আহমেদের আরও দুটি সিনেমা আছে সেরার তালিকায়—মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘শ্যামল ছায়া’ ও রোমান্টিক ঘরানার ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’। সিনেমা দুটির রেটিং ৮.৬।
দুটি সিনেমাই দুই হাজারের বেশি আইএমডিবি ব্যবহারকারী ভোট দিয়েছেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রথম কান উৎসবের ডিরেক্টরস ফোর্ট নাইট বিভাগে অংশ নেয় তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’। বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত সিনেমাটির রেটিং ৮.৪। ভোট দিয়েছেন ৪ হাজার দর্শক।
৮.৩ রেটিং পেয়ে এই তালিকার ৯-এ রয়েছে তিনটি সিনেমা ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ও ‘জয়যাত্রা’।
মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর সিনেমা টেলিভিশন-এর আইএমডিবি রেটিং ৮.২ রেটিং। প্রায় ৬ হাজার দর্শক সিনেমাটিকে ভোট দিয়েছেন।
(রেটিং ও ভোটের হিসাব গতকাল ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী)