বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। একদিক থেকে হেঁটে আসছে নায়ক, অন্যদিক থেকে নায়িকা। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুজনের পরিচয় হবে। বলুন তো কীভাবে?
ঠিক ধরেছেন, ধাক্কা খেয়ে! বাংলা সিনেমায় নায়ক আর নায়িকা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে অথচ ধাক্কা খাবে না, এ তো অসম্ভব! ছবির নাম পুত্র এখন পয়সাওয়ালা। নারগিস আক্তার পরিচালিত ছবিটি দেখতে ১৮ জানুয়ারি হাজির হয়েছিলাম মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহে। নায়ক-নায়িকার পরিচয়পর্বটা যেমন আপনার কমন পড়ে গেল, বিরতির আগ পর্যন্ত বাকি ঘটনাগুলোও আশা করছি আপনাকে নিরাশ করবে না। ধনী বাবার মেয়ে নায়িকা, গ্রাম থেকে আসা মেধাবী ছাত্র নায়ক, ‘বাঁচাও’ চিৎকার, অতঃপর ঢিসুম-ঢুসুম, ‘কিসের এত অহংকার তোমার?’, ‘আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না’... আরও যা যা চাইছেন, মোটামুটি সবই পাবেন।
গ্রামের ছেলে রাজু (ওমর আয়াজ)। বাবা নেই। মা (ববিতা) জমি বন্ধক রেখে তার পড়ার খরচ চালায়। শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে রাজুর পরিচয় রোমানার (ফারাহ রুমা) সঙ্গে। ঘটনাক্রমে রোমানার বাবার অফিসে চাকরি হয় রাজুর। একসময় মাকে না জানিয়ে রাজু রোমানাকে বিয়ে করে। ‘আনস্মার্ট শাশুড়ি’র সঙ্গে শুরু হয় ‘স্মার্ট বউমা’র দ্বন্দ্ব। ওদিকে রোমানার ভাই আশীষের (ইমন) সঙ্গে চলে চাঁদনীর (শায়না) প্রেম।
ছবির প্রথমার্ধে চমক একটাই—পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান! ভেবে দেখুন, নায়ক ওমর আয়াজ খলনায়ক মিশা সওদাগরের দিকে আঙুল তুলে বলছে, ‘চাচা, দেশে আইন আছে। সময়মতো দলিল অনুযায়ী আপনার পুরা টাকাই দিয়া দিমু।’ ওদিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান ছবির সুর! দৃশ্যটা হজম করতে একটু কষ্ট হওয়া কি খুব অস্বাভাবিক?
প্রায় তিন ঘণ্টার ছবি। বিরতির পর ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না’ সংলাপের অপেক্ষায় বসে ছিলাম। তবে এবার ধারণা ভুল প্রমাণ করে গল্প অন্যদিকে মোড় নিল। বাবার (আলী রাজ) সঙ্গে সলাপরামর্শ করে ফন্দি আঁটে আশীষ। সব ঝামেলার অবসান করতে চাঁদনীকে বউ সাজিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। এর পরের ঘটনাগুলো মজার। ইমন আর শায়নার কল্যাণে দ্বিতীয়ার্ধে এসে দর্শক কিছুটা হুল্লোড় করার সুযোগ পেল।