লম্বা চুল, মুখভর্তি দাড়ি, ময়লা লুঙ্গি, টি–শার্ট আর গলায় জড়ানো লুঙ্গি-গামছা। ছুটে বেড়াচ্ছেন বনবাদাড়ে। কখনো হিংস্র, কখনোবা তিনি কী যেন খুঁজে বেড়াচ্ছেন! যেন এ নতুন কোনো এক মীর সাব্বির।
টিজারে এভাবেই দেখা গেল টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী মীর সাব্বিরকে। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘রাতজাগা ফুল’–এর ৩০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের এই টিজার প্রকাশিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে অভিনয়শিল্পী মীর সাব্বিরের ইউটিউব এবং ‘রাতজাগা ফুল’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে এই টিজার প্রকাশ করা হয়। চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে দর্শককে ধারণা দিতেই মুক্তির সপ্তাহ তিনেক আগে প্রকাশ করা হয় এই টিজার।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করছেন মীর সাব্বির। ছোট পর্দায় বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমন জয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি নাটক ও টেলিছবির পরিচালক হিসেবেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এবারই প্রথম মীর সাব্বির চলচ্চিত্র পরিচালনা করলেন।
নিজের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র মুক্তির আগে টিজার প্রকাশের পর সবার কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। মীর সাব্বির বলেন, ‘অভিনয় করি দীর্ঘদিন। সেই জায়গা থেকে একটি স্বপ্ন ছিল সিনেমা বানাব। সরকারি অনুদানের মাধ্যমে সেই সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। প্রথমের প্রতি সব সময়ই একটা ভালোবাসা থাকে। এটি আমার কাছে প্রথম সন্তানের মতোই।’
৩১ ডিসেম্বর মীর সাব্বির পরিচালিত ও অভিনীত এই সিনেমা মুক্তি পেতে যাচ্ছে। মাসখানেক আগে ছবিটি সেন্সর ছাড়পত্র পায়। মুক্তির আগে টিজারে পরিচালক ও অভিনেতা মীর সাব্বির ইঙ্গিত দিলেন, এই সিনেমায় কোন রূপে তাঁকে দেখা যাবে।
মীর সাব্বির বলেন, ‘আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি, প্রেম-ভালোবাসা, দেশ—সবকিছুকে “রাতজাগা ফুল” এই তিন শব্দের মধ্যে আনার চেষ্টা করেছি। বাংলার মাটি, প্রকৃতি, গান, প্রেম চারপাশের সবকিছু মিলিয়ে সিনেমায় বাংলাদেশের ঘ্রাণ পাওয়া যাবে।’
মীর সাব্বির ছাড়াও ‘রাতজাগা ফুল’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, দিলারা জামান, আবুল হায়াত, শর্মিলী আহমেদ, ফজলুর রহমান বাবু, এজাজুল ইসলাম, নাজনীন চুমকী, জয়রাজ, আবদুল্লাহ রানা, তানিন তানহা, আবু হোরায়রা তানভীর প্রমুখ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬০ লাখ টাকা সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর মধ্যে প্রথম মুক্তি পাচ্ছে মীর সাব্বিবের এই সিনেমা। তবে এই বাজেট ছাড়া আরও টাকা লেগেছে পুরো কাজটি শেষ করতে।
মীর সাব্বিবের মতে, ‘কেউ যদি ভাবে শুধু সরকারি অনুদানের টাকায় ভালো চলচ্চিত্র বানিয়ে ফেলব তা হবে না। সরকারি ৬০ লাখ টাকার পরে আরও ৪০ লাখ টাকার কাছাকাছি ব্যয় হয়েছে। ভালো সিনেমা বানাতে টোটাল যে বাজেট থাকে, তার মধ্যে একটা অংশ অর্থ দিয়ে সরকার সহায়তা করে। সরকার চলচ্চিত্রের সম্পূর্ণ টাকা দিয়েছে, এমনটা মোটেও নয়। সরকার আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে ভালো চলচ্চিত্র বানাতে এবং নিজের মেধা কাজে লাগাতে। এ জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’