'মুন্নাভাই থ্রি' অনিশ্চিত!
‘আমি জানি স্ক্রিপ্ট প্রায় তৈরি। অভিজিৎ যোশি এরই মধ্যে লেখার কাজ শেষ করেছেন। এখন ঘষামাজার কাজ চলছে। এ বছর মাঝামাঝি বা শেষ দিকে সিনেমাটি শুটিং ফ্লোরে পৌঁছাবে। আমি আর সঞ্জয় দত্ত তো আছিই। ব্যস, এটুকুই জানি।’ সম্প্রতি পিটিআইকে বলেছেন ‘মুন্নাভাই’ সিরিজের অন্যতম অভিনেতা আরশাদ ওয়ার্সি। ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০০৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর আর পরের ছবি ‘লাগে রহো মুন্নাভাই’ ২০০৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর। এরপর পেরিয়ে গেছে এক যুগ। আরশাদ ওয়ার্সি বলেন, ‘চরিত্রটিকে যেখানে ছেড়ে এসেছিলাম, সেখান থেকে শুরু করতে একটু তো ভয় লাগছেই।’
তবে আরশাদ ওয়ার্সি এই বার্তা সংস্থাকে আরও বলেন, ‘সিনেমা শেষ হলেই সেই চরিত্রকে ভুলে পরের চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাই। যখন “লাগে রহো মুন্নাভাই” করতে যাই, তখন বুঝতে পারি, একই চরিত্র অন্যভাবে করছি। আমি আর রাজকুমার তখন বসে আগের ছবি “মুন্নাভাই এমবিবিএস” বারবার দেখেছি। আমি নিশ্চিত, এবারও একই ঘটনা ঘটবে।’
কিন্তু এবার জানা গেছে, ‘মুন্নাভাই’ সিরিজের তৃতীয় ছবি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ পরিচালক রাজকুমার হিরানি। ‘মিশন কাশ্মীর’, ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’, ‘লাগে রহো মুন্নাভাই’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘পিকে’ আর ‘সঞ্জু’ ছবির এই পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন তাঁরই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের একজন সহকর্মী। হাফিংটন পোস্ট ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই নারী জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে ‘সঞ্জু’ ছবির শুটিংয়ের সময় রাজকুমার হিরানি তাঁকে কয়েকবার যৌন নির্যাতন করেছেন। ওই সময় নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হন। এরপর তাঁর মধ্যে ভীতি আর আতঙ্ক কাজ করছিল। তা থেকে কাটিয়ে উঠতে তাঁর মাস ছয়েক সময় লেগেছে। এবার তিনি ঘটনাটি সামনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরই মধ্যে ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর ই-মেইলের মাধ্যমে ঘটনাটি তিনি ‘সঞ্জু’ ছবির প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়া ও তাঁর স্ত্রী চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপড়া আর চিত্রনাট্যকার অভিজিৎ যোশিকে জানিয়েছেন।
এদিকে হাফিংটন পোস্ট ইন্ডিয়া জানিয়েছে, রাজকুমার হিরানির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ সামনে আসার পর তাঁকে ‘এক লাড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লাগা’ ছবি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ছবির সহপ্রযোজক ছিলেন তিনি।
তাহলে ‘মুন্নাভাই থ্রি’ ছবির ভবিষ্যৎ কী হবে? অনেকেই মনে করছেন, রাজকুমার হিরানির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত হয়তো তিনি আর কোনো ছবির কাজ করতে পারবেন না কিংবা কোনো ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারবেন না।
রাজকুমার হিরানি তাঁর আইনজীবী আনন্দ দেশাইয়ের মাধ্যমে গত ৫ ডিসেম্বর হাফিংটন পোস্ট ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা, অনর্থক, বিভ্রান্তিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপমানজনক। এর পর রাজকুমার হিরানি বলেছেন, ‘এই অভিযোগের কথা জানতে পেরে আমি অবাক হয়েছি। এবার আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে সবাইকে জানাতে চাই, সব অভিযোগ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব অভিযোগ করে আমার সম্মানহানির চেষ্টা করা হয়েছে।’