২৫ পয়সা সালামি দিয়ে নানা বলতেন, ‘কাউকে বলবি না’: নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী

নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী

বলিউড অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর মায়ের বাড়ি ছিল প্রত্যন্ত গ্রামে। ঈদে নানাবাড়ি যেতেন তাঁরা। উঠানে চৌকিতে শুয়ে থাকতেন নানা। নওয়াজকে ডেকে তাঁর হাতে দিতেন ২৫ পয়সা সেলামি। আর বলে দিতেন, কাউকে যেন সালামির কথা না বলেন। সে কথা স্মরণ করে নওয়াজ বললেন, ‘নানা বাড়ির সব বাচ্চাকে একই কথা বলতেন। আর আমরাও নানার কথা মেনে চলতাম।’ সেই দিনগুলোতে ২৫ বা ৫০ পয়সা সালামি পেয়েই খুশি থাকতেন এই অভিনেতা। আর এখন তো কাজের মধ্যেই ঈদ কেটে যায় তাঁর।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুক্রবার ভারতে মুক্তি পেয়েছে নতুন সিনেমা ‘হিরোপন্তি টু’। আহমেদ খান পরিচালিত এ ছবির নায়ক-নায়িকা টাইগার শ্রফ ও তারা সুতারিয়া। এ ছবিতে সত্যিকারের এক ব্যতিক্রমী চরিত্রে দেখা যাবে নওয়াজকে। সুপারহিট হিরোপন্তির সিকুয়েলে তাঁর চরিত্রের নাম লায়লা।

সুপারহিট হিরোপন্তির সিকুয়েলে এক ব্যতিক্রমী চরিত্রে দেখা যাবে নওয়াজকে

ছবির প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কার্যালয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে আড্ডায় নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী জানান, অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল ‘লায়লা’র মতো চরিত্রে অভিনয় করার। এমন এক খলনায়কের ভূমিকা তিনি করতে চেয়েছিলেন, যার ভেতর মেয়েলি ভাব আছে। বাস্তবে কখনো হিরোপন্তি করেছিলেন? নওয়াজ বলেন, ‘হ্যাঁ, একবার চেষ্টা করেছিলাম। বয়স তখন ১৭ বা ১৮। ক্রিকেট খেলায় কারা আগে ব্যাট করবে, তা নিয়ে গন্ডগোল বেঁধেছিল। হিরোগিরি দেখাতে গিয়ে বেধড়ক মার খেয়েছিলাম। সেদিনই নাককান মলে বলেছিলাম আর কখনো হিরোপন্তি দেখাব না (সশব্দ হেসে)।’

‘মান্টো’ ছবির দৃশ্যে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী

একসময় বিস্কুট খেয়ে থাকতে হতো নওয়াজকে। এখন মুম্বাইয়ে প্রাসাদের মতো বাড়ি করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাড়ি করার কথা সেভাবে কখনো ভাবিনি। এত বড় বাড়িতে শুরুতে অদ্ভুত লাগত। কিছুতেই ঘুম আসত না। এখন ছোট ঘরে চলে এসেছি, দিব্যি ঘুমাচ্ছি। আমি আসলে এখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে থাকতে পছন্দ করি।

সুপারহিট হিরোপন্তির সিকুয়েলে তাঁর চরিত্রের নাম লায়লা

সেদিন একটা ইভেন্টে সময়মতো পৌঁছাতে লোকাল ট্রেনে চেপেছিলাম। সাধারণ মানুষের মধ্যে যেন প্রাণভরে শ্বাস নিয়েছিলাম। আগেও আমি লোকাল ট্রেনেই ভ্রমণ করতাম। আজ যে জুতাটা পরে এসেছি, সেটা আমার ভাইয়ের। এখনো পোশাক বা জুতায় নিজের শখ তৈরি করতে পারিনি।’

নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী

আজও অর্থ তাঁর কাছে অর্থহীন। নওয়াজুদ্দিন বলেন, ‘অর্থের পেছনে ছুটে লাভ নেই। নিজেকে যোগ্য করে তুলুন, অর্থই একদিন আপনার পেছনে ছুটবে। আমি সিনেমা ভালোবাসি। অর্থের জন্য কখনোই সিনেমা করি না। মান্টোর জন্য কোনো পারিশ্রমিক নিইনি। এ ধরনের ছবি এলে আবার পারিশ্রমিক ছাড়া কাজ করব।’