হাসপাতালে বেড পাননি স্বজন, যা বললেন ইরফানের স্ত্রী
বলিউড তারকা ইরফান খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী গেল কদিন আগে। এ রকম এক সময়ে আরও এক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হলো ইরফানের স্ত্রী সুতপা শিকদারকে। কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ এক স্বজন। তাঁর জন্য হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে ক্ষুব্ধ সুতপা ফেসবুকে লিখেছেন নিজের আক্ষেপের কথা।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে যথেষ্ট আইসিইউ সুবিধা না থাকায় কর্তৃপক্ষকেই দুষলেন সুতপা। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবার কাছে একটা সাহায্য চাইলাম। কিন্তু পেলাম না। আমার আত্মীয় সমীর ব্যানার্জির জন্য হাসপাতালের আইসিইউতে একটা বেড দরকার ছিল। আজ (রোববার) তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা ভারতের রাজধানী দিল্লিতে প্রয়োজনীয় আইসিইউ স্থাপন করতে পারিনি। আজ আমরা হাসপাতালে একটা বেড পেলাম না। যেসব করোনাযোদ্ধা লড়ে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমি আপনাদের কাউকে ভুলব না, যত দিন বাঁচব আপনাদের জন্য আশীর্বাদ করব, আমি কখনোই সমীরদার হাসিমুখটা ভুলব না। কৈশোর থেকে তাঁর সঙ্গে যত স্মৃতি, সেসব আজীবন লালন করব। তবে আমি এটাও ভুলব না যে, কেবল “ছোট রাজন” হতে পারেননি বলে তিনি হাসপাতালে বেড না পেয়ে মরে গেলেন। তিনি একজন সৎ মানুষ ছিলেন। আমি দিল্লির এই অরাজকতা কখনো ভুলব না। সবাইকেই আগে-পরে চলে যেতে হবে। আমরা অনেক মানুষকেই হারিয়েছি, যাঁদের হয়তো আরও কিছুদিন সঙ্গে পেতাম, যদি হিন্দু-মুসলিম উৎসবে পয়সা খরচ না করে দেশে আরও অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করতে পারতাম।’
মহামারিতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বন্ধুমহলে সাহায্য চেয়েছিলেন সুতপা শিকদার। পরে ওই পোস্টে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমাদের এসব সমস্যা একদিন সমাধান হয়ে যাবে। সে জন্য সরকারের থেকে বরং দেশের জনগণের প্রতি আমার আস্থা তৈরি হয়েছে বেশি। পোস্টটা না মুছে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিলাম।’
দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় (এনএসডি) পড়াকালে পরিচয় ও প্রেম হয় অভিনেতা ইরফান খান ও সুতপা শিকদারের। ১৯৯৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁরা বিয়ে করেন। সুতপার জন্ম দিল্লিতে, তবে তাঁদের আদি বাড়ি আসামে। ইরফানের অভিনয়ের দিকে ঝোঁক থাকলেও সুতপা লিখতে ভালোবাসতেন, বিশেষ করে চিত্রনাট্য ও সংলাপ। এ দম্পতির ছেলের নাম বাবিল খান।
দুই বছর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল মারা যান ইরফান খান। তাঁকে হারানোর পর সুতপা বলেছিলেন, ‘একাকীত্ব, নিঃসঙ্গতা ভীষণ শক্তিশালী। আমাদের তেমন বন্ধুবান্ধব ছিল না। আমি ও ইরফান ছিলাম দুজন দুজনার বন্ধু। ইরফান এত বেশি ব্যস্ত থাকত যে আমি আগে থেকেই একা ছিলাম। কিন্তু যখনই সময় পেতাম, আমরা নিজেদের মতো করে উদ্যাপন করতাম। তাকে ছাড়া পথচলাটা আমার জন্য বেশ কঠিন।’ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও অন্যান্য